• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রুপচাঁদা বলে বিক্রি হচ্ছে মানুষ খেকো পিরানহা


সাভার প্রতিনিধি জুলাই ১৩, ২০২০, ০২:৩৪ পিএম
রুপচাঁদা বলে বিক্রি হচ্ছে মানুষ খেকো পিরানহা

ঢাকা : সাভার উপজেলার গোহাইলবাড়ি মাছ বাজারের এক পাশে বসে সমুদ্রের রুপচাঁদা বলে রাক্ষুসে পিরানহা বিক্রি করছিলেন এক মাছ বিক্রেতা। জালাল হোসেন নামের এক দিনমজুর মাছ কিনতে এসেছিলেন। মাছের কেজি কত জানতে চাইলে মাছ বিক্রেতা জানান তাজা সমুদ্রের রুপচাঁদা একদাম ২’শ করে। দরদামের এক পর্যায়ে জালাল কিনলেন ১৭০টাকা কেজি দরে। 

পরে মাছ ক্রেতা জালালের কাছে কি মাছ কিনলেন জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেন, সমুদ্রের রুপচান্দা কিনলাম। তাকে জানানো হলো এটা রুপচাঁদা নয়, এটা রাক্ষসে পিরানহা মাছ। সে কোন কর্ণপাত না করেই চলে গেল। 

সাভার উপজেলার গোহাইলবাড়ি বাজারে সাপ্তাহিক হাট বসে শুক্রবার। এ অঞ্চলের অধিকাংশ বাসিন্দা এদিন সারা সপ্তাহের বাজার কিনে রাখেন। সেই সাথে মাছও। বাজারের কয়েকজন মাছ বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা গেল, প্রতি শুক্রবার দুই/একজন মাছ বিক্রেতা অধিক লাভের আশায় কম দামে বিভিন্ন মাছের আড়ৎ থেকে পিরানহা কিনে আনেন। এই মাছ বিক্রিতে লাভ বেশী। তবে অন্যান্য মাছের তুলনায় দাম একটু কম বলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন এই মাছ বেশী কিনে থাকেন। তবে সাভার উপজেলার বিভিন্ন বাজারে মাঝে মধ্যে অভিযান হলে কিছুদিন এই রাক্ষুসে পিরানহা বিক্রি বন্ধ থাকে। 

অনেকেই জানেন না অনেকটা রুপচাঁদা মাছের মত দেখতে এই পিরানহা সম্পর্কে। বাংলাদেশ সরকার ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি পিরানহা মাছের উৎপাদন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেন। অথচ এক শ্রেণীর মুনাফা লোভী মাছ বিক্রেতারা এটাকে রুপচাঁদা মাছ বলে ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করে বিক্রি করছেন। উৎপাদন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ আফ্রিকান মানুষ খেকো এ পিরানহা মাছ শুধু গোহাইলবাড়ি বাজার নয় সাভার ও আশুলিয়ার অধিকাংশ মাছের বাজার ও আড়তে বিক্রেতারা বিভিন্ন নামে এ মাছ বিক্রি করছেন।

সাভার উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জানান, বাংলাদেশের জলজ পরিবেশের সঙ্গে পিরানহা সংগতিপূর্ণ নয়। এগুলো রাক্ষুসে স্বভাবের। অন্য মাছ ও জলজ প্রাণীদের খেয়ে ফেলে। দেশীয় প্রজাতির মাছ তথা জীববৈচিত্র্যের জন্য এগুলো হুমকিস্বরূপ। এ কারণে সরকার ও মৎস্য অধিদপ্তর আফ্রিকান মাগুর ও পিরানহা মাছের পোনা উৎপাদন, চাষ, বংশ বৃদ্ধিকরণ, বাজারে ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেন। এছাড়া আমরা সাভার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গেল মাসেও মাইকিং করেছি পিরানহার বিষয়ে। আর করোনার পরিস্থিতির কারণে হাট বাজারগুলোতে আগের মত যাওয়া হচ্ছে না। আমাদের সাভারে এগুলো চাষ হয় না। তবে অন্য এলাকা থেকে মাঝে মাঝে আসে। এ বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।   

সোনালীনিউজ/এআই/এএস

Wordbridge School
Link copied!