• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শঙ্কার মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে মানুষ


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ৩১, ২০২০, ০৮:৪৫ এএম
শঙ্কার মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে মানুষ

ঢাকা: প্রাণঘাতী কৈশ্বিক করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার বৃদ্ধির মধ্যেই আজ রোববার (৩১ মে) থেকে খুলছে সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত। শঙ্কার মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে মানুষ। কিন্তু এতেই শেষ রক্ষা হবে কিনা সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

গত ২৫ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। ওই দিন দেশে নতুন করে কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। ২৫ মার্চ যে ব্রিফিং করেছিল আইইডিসিআর সেখানে বলা হয়েছিল, ২৫ মার্চ কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। তবে আগে আক্রান্ত একজন মারা গেছেন।

ওই দিন পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৯ জন। এখন সবকিছু খুলে দেওয়ার আগের দু’দিন অর্থাৎ ২৯ মে দেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক দুই হাজার ৫২৯ জন এবং ৩০ মে দেশে ১ হাজার ৭৬৪ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হন।

৩০ মে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৮ জন মারা গেছেন। রেকর্ড আক্রান্ত এর রেকর্ড মৃত্যুর মধ্যেই সব কিছু খুলে দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) লকডাউন তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত পূরণের কথা বলেছিল তার একটিও পূরণ করার আগেই সব কিছু খুলে দেওয়াতে শঙ্কা আরও বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে মানুষকে অবশ্যই ব্যক্তিগত সুরক্ষার কথা চিন্তা করতে হবে।

যেহেতু ঘরের বাইরে যেতে হচ্ছে তাই আক্রান্ত হলেই ভড়কে গেলে চলবে না। শরীরে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রচুর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে সঙ্গে ভিটামিন সি খেতে হবে। যাতে করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে।

এদিকে শনিবার (৩০ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১২ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। এসব নির্দেশনা মেনে চলতে সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে এতে করোনা থেকে সুরক্ষা মিলবে। এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে বিশেষ প্রচার প্রচারণাও চালাচ্ছে সরকার।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং কোভিড-১৯ বিষয়ক মিডিয়া সেলের প্রধান হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের তো কাজ করতেই হবে। শঙ্কা থাকা স্বাভাবিক। এখন শঙ্কার মধ্য থেকে কিভাবে কাজ করবো সেটাই কার্যকর করা দরকার।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আমরা ওয়েবসাইটে পেশাভিত্তিক কিভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা করবে সে বিষয়েও গাইডলাইন দিয়েছি। তিনি বলেন, শুধু অফিস নয়, বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে যানবাহনে উঠা এবং এরপর লিফট, সব জায়গায় সতর্ক থাকতে হবে।

সচিবালয়ের একটি স্বাভাবিক কর্মদিবস (ফাইল ছবি)সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অফিস-আদালত খুলে যাওয়ার পাশাপাশি গণপরিবহন খুলে দেওয়ায় মানুষের যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা মানুষের যাতায়াত আর সীমিত রাখা যাবে না। এটিই করোনা বিস্তারের সব থেকে বড় মাধ্যম। করোনার বিস্তার রোধে মানুষের যোগাযোগ সীমিত রাখার ওপর সব থেকে বেশি জোর দেওয়া হয়। তবে সরকার বলছে স্বাস্থ্যবিধি ঠিক রেখে চলবে গণপরিবহন। তবে সীমিত সাধ্যের মধ্যে অতিরিক্ত মানুষের ভিড় সামাল দেওয়া খুব সহজ বিষয় হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।

বাস পরিবহন মালিকরা বলেছে, তাদের মোট আসন সংখ্যার অর্ধেক ফাঁকা রাখা হবে। আর ট্রেন যোগাযোগের ক্ষেত্রেও সেই ব্যবস্থার কথাই জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। লঞ্চ চলাচলের ক্ষেত্রে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করার নির্দেশ দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। একইসঙ্গে সবাইকে মাস্ক পরে ভ্রমণ করার পাশাপাশি স্যানিটাইজার রাখতে বলা হয়েছে। না হলে ভয়ংকর বিস্তার ঘটতে পারে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ. এস. এম আলমগীর বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আমরা ইতোমধ্যে একটি গাইডলাইন দিয়েছি। সেই গাইডলাইন অনুসরণ করলে শঙ্কা কম থাকবে। তিনি বলেন, গাইডলাইন অনুযায়ী মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব রাখা এবং সবচেয়ে জরুরি হাত ধোয়া বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা। তিনি বলেন, আমরা অনেক আগে থেকেই স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বলে আসছি কিন্তু অনেকে তা মানছেন না। ফলে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই যে কাজ যাবেন সেখানেও আমরা বলছি। শুধু কাজের লোকই বাইরে যাবেন।

আলমগীর বলেন, অন্যরা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসায় থাকুন। এতে যারা কাজে যাবেন তারা অন্তত কম ঝুঁকিতে পড়বে। তিনি বলেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রোটিন জাতীয় খাবার, ভিটামিন ডি এবং সি আছে এমন খাবারগুলো খেতে পারেন।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!