• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সংরক্ষিত নারী আসনেও আ.লীগে আসছে বিরাট চমক


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৫, ২০১৯, ১১:১৫ এএম
সংরক্ষিত নারী আসনেও আ.লীগে আসছে বিরাট চমক

ঢাকা: নতুন মন্ত্রিপরিষদের মতো জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনেও আওয়ামী লীগ বিরাট চমক নিয়ে আসছে। জানা গেছে, এবার তৃণমূলে নিয়মিত রাজনীতিকদের নিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে, যারা ছাত্ররাজনীতি করে মূল দল এবং সহযোগী সংগঠনে অবস্থান করে নিয়েছেন, তারাই থাকবেন অগ্রাধিকারে।

সংবিধান অনুযায়ী সরাসরি ভোটের বদলে সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবেন সংরক্ষিত আসনের সদস্যরা। আর একেকটি দল জাতীয় নির্বাচনে যতগুলো আসন পায়, তার ওপর নির্ভর করে সংরক্ষিত আসনের কতগুলো তারা পাবে।

গত ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে এককভাবে ২৫৭টি আসন পাওয়া আওয়ামী লীগ এবার ৫০টি সংরক্ষিত আসনের ৪৩টি পাচ্ছে। অতীতে নানা সময় দেখা গেছে, প্রয়াত রাজনীতিকের স্ত্রী বা বোন এবং যেসব জ্যেষ্ঠ নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া যায়নি, তাদের স্বজনদেরও সংরক্ষিত আসনে সংসদে আনা হয়েছে।

জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন ৩০ জানুয়ারি। আর সংরক্ষিত আসনে ভোটের সময় জানিয়ে তফসিল হবে ১৭ ফেব্রুয়ারি। তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জন্য আবেদনপত্র বিতরণ আজ থেকে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, সংসদে জোরালো বক্তব্য রাখতে পারবেন অথবা দলে অতীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, এমন নেত্রীদের এবার অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে বেশ কয়েকজনের বিষয়ে তথ্য চলে গেছে। পাশাপাশি দলীয় আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার পর সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে মনোনয়ন দেওয়া হবে। আর মনোনয়ন দিলেই সংসদ সদস্য হওয়া নিশ্চিত হওয়ায় চেষ্টা-তদবিরও বেশি।

ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ে দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত জনপ্রিয় নারীদের বেছে নেওয়ার কথাই জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ ক্ষেত্রে পরিবারের রাজনৈতিক ঐতিহ্য, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত, এক-এগারো পরবর্তী সময়ে ভূমিকা, বিভিন্ন সময়ে দলের জন্য ত্যাগ, বিভিন্ন খাতে অবদান আছে এমন প্রার্থী যেমন থাকবেন, তেমনি পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোকেও দেওয়া হবে গুরুত্ব।

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, ‘মন্ত্রিসভার মতোই চমক থাকতে পারে এবারের সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে। নবম বা দশম সংসদে থাকা সংরক্ষিত নারী আসনের অধিকাংশ সদস্যই থাকছেন না। দশম সংসদে থাকা পাঁচ থেকে সাতজন একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারেন। বাকি আসনগুলোতে দেখা যেতে পারে একেবারেই নতুন মুখ।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলটির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘যেকোনো নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ক্রাইটেরিয়া সব সময় একটাই, সেটা হচ্ছে যোগ্যতা। এলাকায় প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা কতটুকু, দক্ষতা-সক্ষমতা কী, এইগুলো দেখা হবে।’

‘রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার পাশাপাশি পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য অঙ্গন থেকেও বিবেচনা করা হবে।’

যাদের নাম আলোচনায়-
এবারও বেশ কয়েকজনের নাম আছে আলোচনায়। তাদের একজন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহর স্ত্রী নিলুফার জাফরউল্লাহ। দশম সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও ফরিদপুর-৪ আসনে হেরেছেন জাফরউল্লাহ। দশম সংসদ নির্বাচনেও তিনি হারার পর নিলুফার সংসদ সদস্য হন সংরক্ষিত নারী কোটায়।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হিসেবে নবম সংসদে ছিলেন ফরিদুন্নাহার লাইলী। এবারও তার থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

পুরনোদের মধ্যে আলোচনায় যারা-
সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানম, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, যুব মহিলা লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, আওয়ামী লীগের নেত্রী আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, মাহজাবিন খালেদ, ওয়াসিকা আয়েশা খান প্রমুখ।

সরাসরি আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন, তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাননি এমন বেশ কয়েকজনও আছেন বিবেচনায়। তারা হলেন- সায়েরা মহসিন, জেবুন্নেছা আফরোজ, সারাহ বেগম কবরী। সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমকে আবার সংসদ সদস্য করার বিষয় নিয়ে সংশয় আছে।

নতুন মুখ হিসেবে থাকতে পারেন-
শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের মেয়ে অভিনেত্রী শমী কায়সার, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি, শহীদ বুদ্ধিজীবী আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী, সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের স্ত্রী আসমা কামরান।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনের স্ত্রী ও ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাকিয়া পারভীন খানম এবং অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রয়াত এম এ আজিজের স্ত্রী রাবেয়া আজিজ।

জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন যারা-
মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক, দপ্তর সম্পাদক রোজিনা নাসরীন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শাহিদা তারেখ দীপ্তি, সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সাবেরা বেগম, সাধারণ সম্পাদক নারগিস রহমান, যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের স্ত্রী নীলুফার আনজুম পপি, বঙ্গবন্ধুর চাচাতো ভাই শেখ হাফিজুর রহমান টোকনের স্ত্রী শেখ এ্যানি রহমান, মহিলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ও অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদিরা পারভীন লাকি, মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রওশন জাহান সাথী, তাঁতী লীগের কার্যকরী সভাপতি সাধনা দাশগুপ্তা এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী লোপা তালুকদারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব (সাবেক এমপি), রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নিঘাত পারভীন, রাজশাহী জেলা মহিলা লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মনিরা আক্তার মনির, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী, ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সেলিনা জাহান লিটা, ঠাকুরগাঁও জেলা মহিলা লীগের সভাপতি দ্রৌপদী দেবী আগরওয়ালার নামও প্রচারিত হচ্ছে।

রূপালী জগতের তারকাদের মধ্যে যারা তদবির করছেন তারা হলেন-
অঞ্জনা সুলতানা, নতুন, অপু বিশ্বাস, অরুণা বিশ্বাস, তারিন জাহান, ফাল্গুনী হামিদ, জ্যোতিকা জ্যোতি প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!