• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ দেখবেন দেশে তৃতীয় গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেছে


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২৫, ২০১৯, ১২:০৭ পিএম
হঠাৎ দেখবেন দেশে তৃতীয় গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেছে

ঢাকা : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, হঠাৎ দেখবেন দেশে তৃতীয় গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেছে। দেশের জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছে। আর সেই অভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনার পতন হবে।

রোববার (২৫ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলের সকল কারাবন্দি নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শামসুজ্জামান দুদু।

বর্তমান সরকারের স্বেচ্ছাচার তার পতন ডেকে আনবে মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আন্দোলন বলে কয়ে আসে না। এক সপ্তাহ আগে আইয়ুব খানও বোঝে নাই।  

এরশাদও এক সপ্তাহ আগে বোঝে নাই যে, তার পতন হবে। শেখ হাসিনাও এখন বুঝতেছেন না। হঠাৎ করে দেখবেন তাঁর পতন হয়ে গেছে। দেশের জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছে। এটা হবে দেশের তৃতীয় গণঅভ্যুত্থান।’

ক্ষমতাসীন সরকারের সমালোচনা করে দুদু বলেন, ‘দেশে এখন আওয়ামী লীগ বলতে কিছু নেই। পুলিশ অফিসার, পুলিশ কমিশনার, এসি, ডিসিরা এখন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক। আওয়ামী লীগ শেষ। আমি লিখিত দিতে পারি, যদি এই দেশে ফেয়ার নির্বাচন হয়, আগে তো ১০টি সিট দিতাম, এখন শেখ হাসিনার নিজের জেতাও কষ্ট হয়ে যাবে।’

বর্তমান সরকার একের পর এক তামাশার নির্বাচন করে চলেছে মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কী জিনিস ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমলে মানুষ দেখেছে। আর বাংলাদেশে শেখ হাসিনার আমলে নির্বাচন নামে যে তামাশা হয়েছে এর আগে কোনো সরকারের আমলে মানুষ তা দেখেনি। নির্বাচন নিয়ে এরকম তামাশা হানাদার বাহিনী, পাকিস্তানি বাহিনী, ব্রিটিশ বাহিনীর কেউ করতে পারেনি। কিন্তু শেখ হাসিনা পেরেছেন।’

সরকারের জনবিচ্ছিন্নতার দিকে ইঙ্গিত করে দুদু বলেন, ‘জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানুষ গড়ার কারিগর আমাদের শিক্ষকরা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কথা বলার চেষ্টা করছেন। শিক্ষামন্ত্রী ১৫-২০ হাত দূরে থাকেন। অথচ তিনি শিক্ষকদের কথা শুনছেন না। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে কারাগারে বন্দি খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

দলের নেতাকর্মীদের সেই আন্দোলনের প্রতি আহ্বান করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়া বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। তিনি আমার নেত্রী বলে বলছি না, খালেদা জিয়া দেশের খুবই জনপ্রিয় নেত্রী। শহীদ জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় এবং তার মৃত্যুর পর যে সুযোগ-সুবিধা পেতেন তার সব কিছু ছেড়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠ করার জন্য স্বৈরাচারী আইনের বিরুদ্ধে তিনি  রাস্তায় নেমেছিলেন। নয়-দশ বছর আন্দোলন করেছেন। তার অনেক সহকর্মী এরশাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। কিন্তু তিনি একা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ে গেছেন, আপস করেননি। যে কারণে তিনি আপসহীন নেত্রী।’

‘খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের কথা বলেছিলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেই নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় প্রায় দেড় বছর ধরে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। আমরা যারা বিএনপি করি আমাদের এসবের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। খালেদা জিয়াকে সারাজীবন জেলে রাখবে এটা সম্ভব না, কোনোকালেই সম্ভব না।

সাময়িকভাবে আটকে রাখতে পারেন। কিন্তু তিনি বের হবেন। শুধু বের হবেন না, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। যেমন গতবার করেছেন। তিনি বের হলে রাস্তার হত্যা বন্ধ হবে, আইনের শাসন নাই বলেই রাস্তায় এতো হত্যা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন নাই বলেই শিক্ষকরা ভোট চুরির দায়ে মেয়েদের কাছে অপমাণিত হয়ে এখনো শিক্ষকতা করছেন’, বলেন শামসুজ্জামান দুদু।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘তারেক রহমানের নামে যে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, সেই মামলার প্রথম রায়ে বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সরকারের সাজানো বুদ্ধিতে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে।’

দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সদস্য কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও ঘিরে দাঁড়াও বাংলাদেশের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!