• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘৩০ ডিসেম্বর তো আপনারা হেরে যাচ্ছেন ইনশাআল্লাহ’


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১০, ২০১৮, ০৭:৩৬ পিএম
‘৩০ ডিসেম্বর তো আপনারা হেরে যাচ্ছেন ইনশাআল্লাহ’

ঢাকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আপনারা তো ইনশাআল্লাহ হেরে যাচ্ছেন। এরপর জনগণ আপনাদের কীভাবে দেখবে সেই কথাটাও একটু ভাবুন। আপনাদের নেতাকর্মীদের জনগণকে মোবারকবাদ দেয়ার সুযোগ করে দিন। ৩১ তারিখ যাতে আমরাও আপনাদের মোবারকবাদ জানাতে পারি সেই সুযোগ করে দিন।

সোমবার (১০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যেবক্ষক পরিষদ’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. কামাল বলেন, বর্তমান সরকারের আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে আসছে। তাদের হাতে আর মাত্র ২০ দিন সময় আছে। এখনও সময় আছে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে, এর মধ্যে কিছু ভালো, প্রশংসনীয় কাজ করে যান, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট নিশ্চিত করুন।

সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির মতো ভোট এ দেশে আর হতে দেয়া হবে না বলেই আমরা এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। এই নির্বাচনে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব। ভোটে কারচুপির চেষ্টা হলে ১৮ কোটি মানুষকে নিয়ে রূখে দাঁড়াব।

ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ এই নেতা বলেন, এবার মানুষ ভোট দিতে পারবে বলে আশা করি। কারণ মানুষ ভোট দিতে না পারলে স্বাধীনতা থাকবে না।

সাধারণ ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল বলেন, রাস্তাঘাট, পাড়া-মহল্লায় নেমে যান। ভোট চাওয়া অপরাধ নয়। সবাই ঘর থেকে বের হয়ে পরিবর্তনের পক্ষে জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চান। বাধা দিলে রুখে দাড়ান।

ড. কামাল হোসেন নির্বাচনের সময় মাঠে থাকবেন মন্তব্য করে বলেন, ‘আমি তো আছিই। কথা বলছি, জনমত গঠন করছি, সমর্থন সৃষ্টি করছি। এই ৮০ বছর বয়সে এর চেয়ে আর কি করার আছে?’

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, যারা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে, লোপাট করে নিয়েছে, ব্যাংক খালি করে দিয়েছে- তাদের বিষয়ে এনবিআরের কোনও মাথাব্যথা নেই।

এনবিআর তার আয় ব্যায়ের হিসাব খতিয়ে দেখছে বলে দাবি করছে- এর জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, এসব বিষয় নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। তারা যা করতে পারে করুক।

তিনি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত বিচারবহির্ভূত হত্যার পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ‘বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড ভয়াবহভাবে বেড়েছে। গত সাত বছরে পাঁচগুণ হত্যাকাণ্ড বেড়েছে। ২০১১ সালে ছিল ৬০ জন, ২০১২ সালে ৫০ জন, ২০১৩ সালে ৪০ জন। আর ২০১৮ সালে তা বেড়ে ৩২১ জন হয়েছে। ডেইলি স্টারে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। এটা মহামারী। এটা মহারোগ। এটি কীভাবে হয়েছে? কীভাবে সম্ভব? শাসনব্যবস্থার রুগ্ণ অবস্থার কারণে এটি হয়েছে। দেশে গণতন্ত্রহীনতার কারণে এটি ঘটেছে। বিনা বিচারে মানুষ হত্যার জন্য সরকারের বিচার হবে’।

ড. কামাল হোসেন বলেন, এভাবে মানুষ বিচারহীনতায় মরতে পারে না। এটি বন্ধ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের সব উচ্চস্তরের ব্যক্তিদের নিয়ে তদন্ত করতে হবে। এটি বন্ধের পদক্ষেপ নিতে হবে। এর কারণগুলো বের করে প্রতিকার কীভাবে করা যায় তা করতে হবে।

তিনি বলেন, মানবাধিকার নিশ্চিত করা সরকার ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব কর্তব্য। ৪৭ বছর পরও অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এটা দেখে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারছি না।

গণফোরাম সভাপতি ৫৮টি নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, জনগণকে এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হলে ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিক হিসেবে নীরব হয়ে গেলে চলবে না। নিজের বাড়ি দখল করে নেয়ার সময়ও চুপ থাকলে হবে না। প্রতিবাদ করতে হবে।

নুরুল হুদা মিলু চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন, সাবেক সচিব মোফাজ্জ্বল করিম, শেখ শহীদুল ইসলাম, ড. মো. শাহজাহান, ড. ফরিদউদ্দিন ফরিদ, অধ্যাপক ড. অমিত আজাদ, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, প্রকৌশলী মমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!