• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অপরিকল্পিত উন্নয়নে ধুলায় ধূসর রংপুর


ফরহাদুজ্জামান ফারুক, রংপুর ব্যুরো মার্চ ৯, ২০১৮, ০৬:১০ পিএম
অপরিকল্পিত উন্নয়নে ধুলায় ধূসর রংপুর

রংপুর : অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে সৃষ্ট ধুলা আর ফিটনেসহীন গাড়ির ধোঁয়াতেই দিন দিন ধুলা-বালির ধূসর নগরে পরিণত হচ্ছে রংপুর। বাতাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাসমান ধুলায় বাড়ছে বায়ু দূষণ। এতে করে প্রতিদিন শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন নগরবাসী। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে নবজাতকের ওপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।

রংপুর সিটি করপোরেশনের গ্রামীণ এলাকাগুলোতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের ছোয়া এখনো লাগেনি। শহরের মতো রাস্তাঘাট নেই। ময়লা-আবর্জনার পাশাপাশি ধুলা-বালির দূষণ দমাতে নেই কোনো ব্যবস্থা। এমন অবস্থায় উন্নয়ন বঞ্চিত গ্রামীণ এলাকাগুলোর মানুষ প্রতিনিয়ত নানান রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বায়ু দূষণের প্রভাবে শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগ এখন শুষ্ক মৌসুমেও ছড়াচ্ছে গ্রামীণ জনপদে।

রংপুর মহানগরীর ৩০, ৩১, ৩২ এবং ৩৩ নং ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তেমন উন্নত কোনো রাস্তাঘাট নেই। যেখানে সেখানে ময়লার স্তুপ পড়ে আছে। রাস্তার কোল ঘেষে কেউ কেউ ইট-বালুর স্তুপ করে রেখেছেন। পিচঢালা সড়ক কম থাকায় ওইসব ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকার মাটির রাস্তা এখন ধুলায় ধূসরময়। এতে করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা ধুলা-বালির দূষণে শ্বাসতন্ত্রজনিত (অ্যাজমা) রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

সিটির বর্ধিত এলাকা থেকে পিচঢালা ও রড-সিমেন্টের কংক্রিটে গড়া সড়কের পা বাড়ালেও মুক্তি নেই ধুলা-বালি থেকে। ব্যস্তময় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর মাঝখানের রোড ডিভাইডারের পাশেও রয়েছে ধুলায় ধুলাময়। শুষ্ক এই মৌসুমে বাতাসের বেগ একটু বেড়ে গেলেই ধুলা ভাসতে থাকে নগরজুড়ে। এতে করে পথচারীদের পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহনে থাকা মানুষরা বায়ু দূষণের শিকার হচ্ছে।

রংপুর সিটি করপোরেশনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নকর্মীরা মধ্যরাত থেকে থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত নগরীর প্রধানসড়ক ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার ময়লা আবর্জনা সরালেও থেকে যায় শুধু ধুলা আর বালি। এই ধুলা-বালির পরিমাণ দিন দিন বেড়ে চলেছে। এতে করে বাতাসের সঙ্গে ভেসে বেড়ানো ধুলা-বালিতে আক্রান্ত হচ্ছেন নগরবাসী।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ  (রমেক) হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ অ্যাজমা তথা শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন। শীতকাল ছাড়াও এখন শুষ্ক মৌসুমেও বাড়ছে অ্যাজমা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৫ জন নবজাতকই এখন অ্যাজমা বা শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানালেন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিকাশ মজুমদার।

তিনি বলেন, অ্যাজমা এখন আর শীতকালীন রোগ নয়। বায়ু দূষণের কারণে সারা বছরই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বায়ু দূষণ রোধে শিগগিরই জোরালো ব্যবস্থা না নিলে অ্যাজমা প্রকোপ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

বিকাশ মজুমদার বলেন, ধুলা দূষণ ছাড়াও বিভিন্ন কারণে শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্তের সূচক ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে নগরীতে ধুলা দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এখন সারাবছরই অ্যাজমায় আক্রান্ত হচ্ছেন নগরবাসী।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!