• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কূটনৈতিক পর্যায়েও বিএনপিকে পেছনে ফেলার টার্গেট


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১৮, ২০১৮, ০৮:০৪ পিএম
কূটনৈতিক পর্যায়েও বিএনপিকে পেছনে ফেলার টার্গেট

ঢাকা: মাঠের রাজনীতির পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতায়ও প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি থেকে এগিয়ে থাকতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। লক্ষ্য হচ্ছে বিএনপির কূটনৈতিক তৎপরতা যেন প্রতিবেশীসহ পশ্চিমা বিশ্বের কাছে গুরুত্ব না পায়। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এমন দূতিয়ালি চলছে। এ তৎপরতায় দলের প্রবাসী শাখাগুলোকেও কাজে লাগানো হচ্ছে। এ তথ্য আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ মহলের।

অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির আমন্ত্রণে ১৬ মার্চ প্রতিবেশী ভারত গেছে আওয়ামী লীগের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। দলের সদস্যরা ১৭-১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত ৮৪তম ন্যাশনাল কংগ্রেসের মূল অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন। ১৯ মার্চ দেশে ফেরার আগে কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী ও তার মা সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করবেন। 

এর বাইরে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির আমন্ত্রণে আগামী ২১-২৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে বড় আকারের প্রতিনিধিদলের ভারত সফরের কথা রয়েছে। সফরের উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগ ও বিজেপির মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক সুদৃঢ় করা। গত বছর চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা দুই দফা দেশটি সফর করে এসেছেন। 

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও আন্তর্জাতিক উপকমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জমির বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। 

ভারতে আসন্ন সফর নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শুধু সরকারি পর্যায়ে নয়, পার্টি-টু-পার্টি পর্যায়ে সম্পর্ক উন্নয়নে এই সফর। ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে। 
আওয়ামী লীগের ভারত সফর নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যখনই বললেন আমরা বিদেশিদের পরামর্শ নেই না, পরক্ষণেই শুনলাম তিনি একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে তদবির করতে ভারতে যাচ্ছেন।’

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, ভারতের কংগ্রেসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। এ সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছে দলটি। ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে এই সফর ভূমিকা রাখবে। এতে রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে। 

এদিকে বিএনপির মতো আওয়ামী লীগও তার প্রবাসী শাখার মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে যুক্তরাজ্য শাখা আওয়ামী লীগ। দেশটির এমপিদের সমর্থন চেয়েও চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি ও তার প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামী সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে ও দেশকে অশান্ত করে তুলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। 

এ ছাড়া বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্যও চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে অনুরোধ জানিয়ে গত ৬ মে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র কাছে চিঠি দিয়েছে। 

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো করে কূটনীতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। তিনি দাবি করেন, দুর্নীতির জন্য বিএনপিকে কেউ সমর্থন দিচ্ছে না। বিদেশিরা আর বিএনপির কথা শুনবে না।’

কূটনৈতিক যোগাযোগ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বিষয়টা তিনটা ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে হবে। একটা হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। তারা চাইবে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন। আরেকটা ক্যাটাগরি হচ্ছে চীন। তারা অন্য দেশের কোনো রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তেমন মাথা ঘামায় না, তাদের আগ্রহ অর্থনৈতিক বিষয়। আরেকটা ক্যাটাগরি হচ্ছে ভারত। ভারত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জোরালো সমর্থন দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এবারো অনুরূপ সমর্থন চায়। কিন্তু এটা এখনই বোঝা যাবে না, আরেকটু সময় লাগবে।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!