• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের অভিবাসী নীতির বিরুদ্ধে মেলানিয়া-লরা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুন ১৯, ২০১৮, ১১:০৮ পিএম
ট্রাম্পের অভিবাসী নীতির বিরুদ্ধে মেলানিয়া-লরা

ঢাকা : মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন প্রত্যাশীদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন দেশটির দুই ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও লরা বুশ। অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে পূর্ণবয়স্ক নারী-পুরুষদের আটক করায় ১ হাজার ৯৯৫ শিশু তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে।

এক বিবৃতিতে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প গত রোববার বলেন, শিশুদের তাদের পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করাকে ঘৃণা করি। আশা করছি উভয় পক্ষ (কংগ্রেসে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট) শেষ পর্যন্ত একটি সফল অভিবাসী সংশোধনী নীতিতে ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে। তিনি বলেন, দেশ পরিচালনার জন্য আইন মেনে চলতে হবে। কিন্তু একই সঙ্গে হৃদয় দিয়েও শাসনকার্য পরিচালনা করতে হয়।

এর আগে ওয়াশিংটন পোস্টে এক লেখায় ট্রাম্পের এই নীতির সমালোচনা করেন সাবেক ফার্স্ট লেডি লরা বুশ। তিনি লেখেন, ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিষ্ঠুর। এটি একেবারেই হৃদয়বিদারক। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জাপানের আমিকান বন্দি শিবিরের কথা মনে করিয়ে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে লজ্জাজনক এই অধ্যায় থেকে মুক্ত হওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করতে হবে।

মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের রুখতে সম্প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ নিয়ে সমালোচনার জবাবে শুরু থেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলে আসছেন, তিনি নতুন কোনো অভিবাসন নীতি গ্রহণ করেননি। বিগত ডেমোক্র্যাট প্রশাসনের নেওয়া নীতি মেনেই মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি। অবশ্য অবৈধ অভিবাসীদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নকরণের ঘটনা পূর্ববর্তী মার্কিন প্রশাসনগুলোতেও দেখা গেছে। তবে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, সে সংখ্যাটা অনেক কম ছিল।

অতীতে দেখা গেছে, যেসব লোক অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করত এবং অপরাধের কোনো রেকর্ড ছিল না তাদেরকে আইনের আওতায় অপরাধী সাব্যস্ত না করে শুধুই অস্থায়ীভাবে আটক করা হতো কিংবা বিতাড়িত করার সুপারিশ করা হতো। মা ও শিশুরা সাধারণত একসঙ্গেই থাকত। তবে ট্রাম্প প্রশাসন সব ধরনের অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীর বিরুদ্ধে আইনগত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করার প্রথম ছয় সপ্তাহেই প্রায় ২ হাজার শিশু পরিবার-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অতীতে এমন নজির দেখা যায়নি।

মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতর-হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, ১৯ এপ্রিল থেকে ৩১ মে সময়ের মধ্যে আটক হওয়া ১ হাজার ৯৪০ পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে থাকা ১ হাজার ৯৯৫ শিশু পরিবার-বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তাদের মধ্যে কার বয়স কত, মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা জানানো হয়নি। ওই শিশুরা হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিস বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া চলমান অবস্থায় সরকারের ডিটেনশন ফ্যাসালিটিজ ও ফস্টার কেয়ারে রাখা হয়েছে তাদের।

ডোনাল্ড ট্রাম্প শিশুদের এই বিচ্ছিন্নকরণ প্রক্রিয়ার জন্য দায়ী করছেন ‘ডেমোক্র্যাটদের প্রণীত’ আইনকে। তবে অতীতের অভিবাসন নীতির সঙ্গে সাম্প্রতিক পদক্ষেপের পার্থক্য টানতে গিয়ে সমালোচকরা উলে­খ করেছেন সে দেশের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের নেওয়া সিদ্ধান্তকে।

ডিপার্টমেন্টের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল গত মাসে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন, অপরাধী-নিরপরাধ নির্বিশেষে প্রথমবারের মতো কেউ অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করলেও তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করে আইনের আওতায় নেওয়া হবে। শিশুদের যেহেতু অপরাধী বিবেচনা করার সুযোগ নেই, সে কারণে তারা পূর্ণবয়স্ক অভিভাবকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।

উল্লেখ্য, ফার্স্ট লেডি হিসেবে হোয়াইট হাউজে আসার পর থেকেই শিশুদের সুরক্ষার প্রশ্নটিকে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছেন। সাইবার অপরাধ ও আফিমের মহামারী থেকে শিশুদের সুরক্ষাসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সোচ্চার হতে দেখা গেছে তাকে।

গত মে মাসে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম এবিসি নিউজকে মেলানিয়া বলেন, ভবিষ্যতেও তিনি শিশুদের নিয়ে কাজ করবেন। শিশুদের নির্দিষ্ট একটি সমস্যার সমাধানে আটকে না থেকে শিশুদের সুরক্ষামূলক বিভিন্ন ইস্যুতে কাজ করার প্রত্যয় জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!