• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পিওন পদে পিএইচডি ডিগ্রিধারীর আবেদন!


নিউজ ডেস্ক এপ্রিল ১০, ২০১৮, ০৩:৫৪ পিএম
পিওন পদে পিএইচডি ডিগ্রিধারীর আবেদন!

ঢাকা: চাকরি যেন ভাগ্যের ব্যাপার। আর সরকারি চাকরি? সে তো যেন সোনার হরিণ। তাই বলে পিওনের চাকরিতে পিএইচডি ডিগ্রিধারীর আবেদন। হ্যাঁ, এমনটাই জানা গেছে ভারতের জাদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আবেদনে।

এই চাকরির জন্য যোগ্যতামান- অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ছিল। বেতন সাকুল্যে ১৫ হাজার টাকা। মোট পদের সংখ্যা ৭০। সে জন্য আবেদনপত্র জমা পড়েছিল ১১ হাজার!

আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন পিএইচডি, এমটেক, এমকম, বিটেক ডিগ্রিধারীরা! ভিনরাজ্য থেকেও আবেদন করেছেন অনেকে।

শিক্ষামহলের একাংশের অভিযোগ, দেশ তথা রাজ্যের কর্মসংস্থানের হতশ্রী চিত্র আবার সামনে এল এই ঘটনায়।

সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পিওনের পদের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করেছিলেন। চতুর্থ শ্রেণির ওই চাকরির জন্য আবেদনকারীদের লিখিত পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। এখন চলছে মৌখিক পরীক্ষার পালা। ফলপ্রকাশ হওয়ার কথা এ মাসের শেষে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আবেদনপত্রগুলি খুঁটিয়ে দেখে আমাদের তো চক্ষুস্থির! অষ্টম শ্রেণি পাশ করলেই যে চাকরি মেলে সে জন্য পিএইচডি পাশ করা একাধিক ব্যক্তি আবেদন করেছেন। তবে তাদের কেউই লিখিত পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি।

তিনি জানান, মোট ৫০০ জন মৌখিক পরীক্ষা দিচ্ছেন। তাদের মধ্যে এমএসসি, এমটেক পাশ করা ব্যক্তিরাও আছেন। ভিনরাজ্য থেকেও চাকরিপ্রার্থীরা আবেদন করেছেন।

কেন এমন হাল! অধ্যাপক এবং গবেষক সংগঠনের নেতাদের একাংশ দুষছেন কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের নীতিকে। ‘ডেমোক্র্যাটিক রিসার্চ স্কলার অর্গানাইজেশনে’র (ডিআরএসও) নেতা অর্ঘ্য দাস বলেন, এই তথ্য ভয়াবহ।

কর্মসংস্থানের পরিবেশই তো নেই, নিয়োগ হবে কী করে! এ দেশের প্রধানমন্ত্রী পকোড়া শিল্পের কথা বলছেন, আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী চপ শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছেন।

বাস্তবে, এগুলি নিষ্ঠুর তামাশা ছাড়া কিছু নয়। তাঁর কথায়, ‘‘একদিকে মৌলিক গবেষণায় অর্থ বরাদ্দ কমানো হচ্ছে, বৃত্তি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ নেই। বাঁচার তাগিদে উচ্চশিক্ষিতেরা যা পাচ্ছেন, তাই করছেন।

যাদবপুরের শিক্ষক তথা অধ্যাপক সংগঠন ‘আবুটা’র নেতা তরুণ নস্কর বলেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে, সরকারগুলি যা প্রতিশ্রুতি দেয়, সবই ভাঁওতা।

পশ্চিমবঙ্গ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সমিতির (ওয়েবকুটা) নেতা শ্রুতিনাথ প্রহরাজের দাবি, তৃণমূলের আমলে রাজ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যা আগের চেয়ে আরও প্রকট হয়েছে। তার কথায়, ‘‘বাম আমলে শিল্পায়নের জন্য সরকার উদ্যোগী হয়েছিল।

কিন্তু এই সরকারের আমলে কোনও নতুন শিল্প আসেনি। পুরনো শ্রমনিবিড় কারখানাগুলি বন্ধ হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশন, কলেজ সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষাও অনিয়মিত। প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (টেট) নিয়ে অসংখ্য দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ সবের ফলেই এই অবস্থা।


সোনালীনিউজ/জেডআরসি/আকন

Wordbridge School
Link copied!