• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পয়া গল এখন বাংলাদেশের দুঃস্বপ্ন


ক্রীড়া প্রতিবেদক মার্চ ১১, ২০১৭, ০২:৩৯ পিএম
পয়া গল এখন বাংলাদেশের দুঃস্বপ্ন

ঢাকা: চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের বিনা উইকেটে ৬৭ রান দেখে অনেকে আশাবাদি হয়ে উঠেছিলেন। জয় না হোক এই টেস্ট অন্তত ড্র করা সম্ভব। জয় বা ড্র কোনটাই হল না। শ্রীলঙ্কার ছুঁরে দেওয়া ৪৫৭ রানের লক্ষ্যর পেছনে ছুটতে গিয়ে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৯৭ রানে। মুশফিকরা গল টেস্ট ২৫৯ রানে হেরে দুই টেস্টের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে। ১৫ মার্চ থেকে কলম্বোর পি সারা ওভালে হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। এটি বাংলাদেশের আবার শততম টেস্টও। ২০১৩ সালে এই গলেই বাংলাদেশ টেস্ট ড্র করেছিল। এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানও উঠেছিল এখানে। মুশফিকুর রহীম ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। তাই গলকে বাংলাদেশ পয়া ভাবত। সেই গল এবার বাংলাদেশকে দুঃস্বপ্নই উপহার দিল।

গল টেস্টের পঞ্চম দিনের সকালটা বাংলাদেশের জন্য ছিল দুঃস্বপ্ন। চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ৬৭ উইকেট। কিন্তু পঞ্চম দিনের সকালে ভোজভাঁজির মত পাল্টে গেল সবকিছু। দেখতে দেখতে চলে গেলেন সৌম্য, মুমিনুল, তামিম, সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে তুলেছে ১৫৭ রান।

১০৪ রানে মাহমুদুল্লাহ ফিরে যাওয়ার পর মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে জুটি বাঁধেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন দাস। তারপর আর কোন উইকেট পড়তে দেননি এই দুই ব্যাটসম্যান। মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে ষষ্ঠ উইকেটে মুশফিক-লিটন অবিচ্ছিন্ন থেকে যোগ করেছেন ৫৩ রান। মুশফিক ৯৭ বলে ৩৪ ও লিটন ৫৩ বলে ৩২ রান করে অপরাজিত রয়েছেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন রঙ্গনা হেরাথ ও দিলরুয়ান পেরেরা।

এদিন স্কোরবোর্ডে কোন রান যোগ করার আগেই ফিরে গেছেন আগের দিন ৫৩ রানে অপরাজিত থাকা সৌম্য। ৪৯ বলে খেলা তার ৫৩ রানের ইনিংসটি এখানেই শেষ হয়ে যায়। ছয়টি চারের সঙ্গে ছয় মেরেছেন একটি।

সৌম্য ফিরে যাওয়ার পর মুমিনুলকে নিয়ে ১৩ রান যোগ করেছিলেন তামিম। কিন্তু বড় হয়নি জুটিটি। দিলরুয়ান পেরেরার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন মুমিনুল ১৫ বলে ৫ রান করে। রিভিউ নেওয়ার পরও বাঁচতে পারেননি।

এর কিছুক্ষণ পর ধৈর্য্য নিয়ে উইকেটে পড়ে থাকা তামিমও বিদায় নিয়েছেন পেরেরা বলে স্লিপে ক্যাচ তুলে দিয়ে।  তামিম আউট হয়েছেন ১৯ রান করে।  
মুশফিক-সাকিব বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। রঙ্গনা হেরাথের বলে সাকিবের (৮) ব্যাট ছুঁয়ে গেলে লেগ স্লিপে দারুন এক ক্যাচ নিয়ে তাকে ফিরিয়েছেন দিমুথ করুনারত্নে। ১০৪ রানে ৪  উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের অস্বস্তি বাড়িয়ে হেরাথের বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন মাহমুদুল্লাহ শুণ্য রানে।

সকালের বিভীষিকা কাটিয়ে কিছুটা স্বস্তিতে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তখনও ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ছিলেন মুশফিকুর রহীম-লিটন দাস। মনে হচ্ছিল, সকালের অন্ধকার কাটিয়ে আলোর দেখা মিলেছে। কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে আবার সকালের দুঃস্বপ্ন ফিরল গলেতে।

স্যান্ডকানের বলে ফিরে গেলেন মুশফিক, নিরোশান ডিকওয়েলাকে ক্যাচ দিয়ে। ৯৮ বলে খেলেছেন ৩৪ রানের ইনিংস। চার মেরেছেন দুটি। মুশফিকের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি লিটনও। তিনি রঙ্গনা হেরাথের বলে ক্যাচ তুলে দিলেন আকাশে। সেটা লুফে নিতে ভুল করলেন না উপুল থারাঙ্গা। তার আগে লিটন ৬২ বলে দুই চারের সাহায্যে করেছেন ৩৫ রান।

তাসকিনও ফিরিয়েছেন হেরাথ। ১৩ বল খেলে মাত্র  ৫ রান করতে পেরেছেন এই পেসার। ৫৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন হেরাথ। শেষের দিকে মেহেদি হাসান মিরাজ ২৮ রান করেছেন ৪৮ বলে। তিনটি চারের সঙ্গে ছয় মেরেছেন একটি। হেরাথ ৫৯ রান দিয়ে ৬টি উইকেট তুলে নিয়ে একটি বিশ্বরেকর্ডও গড়েছেন। বাঁ-হাতি স্পিনারদের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি উইকেট তাঁরই। ৬৬ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন পেরেরা। প্রথম ইনিংসে ১৯৪ রানের ইনিংস খেলায় ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন কুশল মেন্ডিস।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!