• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিছানায় আট বাঘ


বিচিত্র সংবাদ ডেস্ক এপ্রিল ১৬, ২০১৮, ০১:৫৪ পিএম
বিছানায় আট বাঘ

ঢাকা : বাঘের উৎপাতে সব স্বস্তি চলে গেছে লস অ্যাঞ্জেলেসের ব্যবসায়ী এদোয়ার্দো সেরিয়োর। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই দেখেন তার কম্বলের নিচে আট-দশটি বাঘ। এর মধ্যে কোনোটি চিতাবাঘ, কোনোটি জাগুয়ার, কোনোটি-বা বিরাট আকারের কোনো বনবিড়াল, কোনোটি গেছোবাঘ। সপ্তাহ দুয়েক ধরে দুটো সিংহও জুটেছে এ দলে।

সকালবেলাতেই এরা দরজা আঁচড়াতে শুরু করে। দরজা খুলে দেওয়ার আগ পর্যন্ত বিরক্ত করে মারে। দরজা খুলে দিলেই হুড়মুড়িয়ে সব এসে উঠে পড়ে বিছানায়। তারপর কার আগে কে এদোয়ার্দোকে জড়িয়ে ধরে শোবে। বাঘেরা জায়গা দখল করে নিলে বিড়ালেরা চেঁচায়, বিড়ালদের কোলে তুলে নিলে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে কুকুরগুলো গোঙাতে থাকে। অবস্থা দেখে এদোয়ার্দো কুকুরগুলোকেও বিছানায় ডাকে। তারপর ঘরে আর সবার জায়গা হয় না। সবাইকে নিয়ে এদোয়ার্দো বাগানে হাঁটতে বের হন। সবাইকে খাবার দেন।

সবকিছুর পরও এসব ভয়ঙ্কর জন্তু নিয়ে বেশ সুখেই কেটে যাচ্ছে এদোয়ার্দোর জীবন। জন্তুদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই তিনি মনোযোগ দেন বিপন্ন এই জন্তুদের জন্য নতুন কিছু করার । ২০১৪ সালে তিনি কালো চিতা সাদা বাঘ নামে একটি ফাউন্ডেশন খুলে বসেন। মেক্সিকোতে তার নিজ বাড়িতে আশ্রয় মেলে নানান ঘটনায় আগত বাঘদের। এদোয়ার্দোর বাড়িতে আশ্রয় মেলে আশপাশের দেশগুলোর সার্কাসের বাঘগুলোর। তার এই কাজে ব্যাপক প্রশংসা মেলে বিশ্বজুড়ে।

সারা বিশ্বে এখন তার ফলোয়ার ত্রিশ লাখ। সামাজিক মাধ্যমে তার ও তার বাঘের ছবি এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। এসব ছবিতে দেখা যায়- তিনি বাঘের সঙ্গে ঘুমাচ্ছেন, দুষ্টুমি করছেন, আবার কুস্তিও লড়ছেন বাঘের সঙ্গে। এদোয়ার্দোর এই সাহসী উদ্যোগ উঠে এসেছে সিএনএনের ক্যমেরায়। বিশ্বের অসংখ্য পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তার সাক্ষাৎকার।

ঘটনার শুরু ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে। তখন এদোয়ার্দো একটা ব্যবসায়িক কাজে গিয়েছিলেন মেক্সিকোর মনট্রিতে। ফেরার টিকেট কেটেই যাচ্ছিলেন। দুদিনের মধ্যে কাজ সেরে চলে আসবেন। কিন্তু, একটা ফোনকল তার বাকি সারাটা জীবনই বদলে দিল। তার এক কাজিন প্রাণী বিশেষজ্ঞ। তিনি ফোন করে জানালেন, একটা পোষা প্রাণী বিক্রির দোকান একটা কালো জাগুয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। পেশাদার লোকজন এটাকে কিনে নিয়ে দর্শনার্থীদের সঙ্গে ছবি তোলার কাজে ব্যবহার করবে। এতে ভালোই কামাই-রোজগার হবে। শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল এদোয়ার্দোর। তিনি নিজেই গিয়ে জাগুয়ারটা কিনে নিয়ে এলেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জাগুয়ারটার প্রেমে পড়ে গেলেন।

তারপর যেখানে যেখানে পোষা প্রাণীর ওপর অত্যাচার করা হয় বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে মানুষ এগুলো কেনে, এদোয়ার্দো গিয়ে তাদের কাছ থেকে সেগুলো কিনে নিয়ে আসেন। তিনি নামলেন অত্যাচারিত পোষা প্রাণী উদ্ধারে। আগেই তার কিছু কুকুর-বিড়াল ছিল। এবার বাড়ি যেন চিড়িয়াখানা হয়ে গেল। সারা দিন বাঘের সঙ্গেই হেসেখেলে সময় কাটে তার। এর মধ্যে তিনি বিখ্যাতও হয়ে গেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে পড়েছে তার অসংখ্য ছবি। হলিউডের ছবিতেও ব্যবহার করা হয়েছে তার পোষা বাঘদের। তিনি একটা সংগঠনও খুলেছেন কালো জাগুয়ার সাদা বাঘ নামে। তবে তার বিরুদ্ধে সমালোচনাও আছে দুষ্ট লোকদের। তারা বলেন, এদোয়ার্দো আসলে পশুপ্রেমী নয়, বড়মাপের ব্যবসায়ী। এসব দেখিয়ে তিনি ব্যবসা করছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!