• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রসঙ্গ ম্যাচ ফিক্সিং

বিপিএলে আরও কঠোর হচ্ছে বিসিবি


ক্রীড়া প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১, ২০১৬, ১১:৪৯ এএম
বিপিএলে আরও কঠোর হচ্ছে বিসিবি

ব্যাটে-বলে লড়াই ভালোভাবেই এগিয়ে চলছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চতুর্থ আসর। কিন্তু ফিক্সিংয়ের অভিযোগ সেটিতে বড় একটি ধাক্কাই দিলো। অন্য সব আসরের মতো এবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। প্রথম দুই আসরে নানা বিতর্কে জর্জরিত বিপিএল পরের দুই বছর ছিল বন্ধ। সব কিছু গুছিয়ে নতুন ফরম্যাটে গত বছর ফের শুরু হয় তৃতীয় আসর। ওই আসরেও নানা ঝুটঝামেলা ছিল। আশা ছিল চতুর্থ আসরটি আগের সব ঝামেলা থেকে দূরে থাকবে। কিন্তু না, টুর্নামেন্টের মাঝপথে এসে মাঠের বাইরের ঘটনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। রংপুর রাইডার্সের খেলোয়াড় জুপিটার ঘোষ ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন।

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল অবশ্য এই ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে। বিপিএলে কোনওভাবেই কালো দাগ পড়তে দেবেন না বলে জানিয়েছেন সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক। জুপিটার ঘোষের অভিযোগ নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন গভর্নিং কাউন্সিলের এই সদস্য সচিব। তার মতে, ‘প্রথম কথা, জুপিটার ঘোষ কি ওই রকম মানের প্লেয়ার? প্রিমিয়ার ডিভিশনে ওর কি পারফরম্যান্স বা বিপিএলে...। যদি এ রকম ঘটনা ঘটেই থাকে, তাহলে ২৫ দিন পর সে কেন জানাবে? তার তো উচিত ছিল অ্যান্টি-করাপশন ইউনিটকে প্রথমেই জানানো। আমরা দুই জনকেই সাসপেন্ড করে তাদের কথা শুনেছি। এখন তদন্ত করা হচ্ছে। বিপিএলে কোনও রকম কালো দাগ যাতে না পড়ে, এ ব্যাপারে আমরা খুবই কঠোর অবস্থানে আছি।’

খেলোয়াড়দের নজরে রাখতে প্রতিটি হোটেলে পর্যবেক্ষক রাখা আছে বলে জানান তিনি, ‘প্রতিটা টিম হোটেলে আমাদের অ্যান্টি করাপশন এন্ড ইনটেলিজেন্স ইউনিট আছে। যেটা আামদের নজরে আসছে, সেটাতেই আমরা অ্যাকশন নিচ্ছি। জুপিটার আর সানোয়ার ভাইয়ের ব্যাপারটা এসছিল, সেটা কিন্তু আমরা তদন্ত করে পরের দিনই তাদের নিষিদ্ধ করেছি। একটা অডিও টেপও বের হয়েছিল। আমরা আপনাদের তদন্ত করে বিস্তারিত বলতে পারব, কাউকে ফাঁসানোর জন্য এটা দেয়া হয়েছে কিনা। যতক্ষণ পর্যন্ত কিছু প্রমাণিত না হয়, ততক্ষণ কারও ওপর দোষ চাপানো ঠিক হবে না।’

এদিকে, এর আগেও জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার সানোয়ার হোসেনের বিপক্ষে উঠেছিল অভিযোগ। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০’র দ্বিতীয় আসরে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের ক্রিকেটার আশরাফুল এবং দলটির মালিক সেলিম চৌধুরী এবং তার ছেলে সিহাব চৌধুরী হয়েছেন, সেই ঘটনায় ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের টিম ম্যানেজার সানোয়ার হোসেনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠিয়েছিলেন দলটির কোচিং স্টাফের একজন। 

টিম ম্যানেজার বলে ক্রিকেটারের হাতে সম্মানী এবং ভাতা তুলে দেয়ার দায়িত্ব অর্পিত হওয়ায় অনৈতিক প্রস্তাব তার পক্ষ থেকে দেয়া হতো বলেও মিডিয়ায় অভিযোগ করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) গঠিত ট্র্যাইবুন্যালে সে অভিযোগ হয়নি প্রমানিত। এবার একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে রংপুর রাইডার্সের টিম ম্যানেজার সেই সানোয়ারের বিপক্ষে। 

ফিক্সিংয়ের কেলেঙ্কারিতে প্রায় দুই বছর বন্ধ ছিল বিপিএল। গত বছর থেকে পুনরায় চালু হয় টুর্নামেন্টটি। কিন্তু এক বছর পার না হতেই সেই ম্যাচ পাতানোর গন্ধ ভাসছে বাতাসে। ক্রিকেটের বৃহত্তর স্বার্থে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেন বিসিবির মিডিয়া কমিটি চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। বলেন, ‘অভিযোগ সত্য কিংবা মিথ্যা— যা-ই হোক না কেন, যেহেতু দুজনের নাম উঠে এসেছে, আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি। বিপিএলকে কলঙ্কমুক্ত রাখতেই বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন।’

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে কোচ-খেলোয়াড়সহ মোট নয়জনের নামে অভিযোগ তোলে আকসু। পরে তদন্তে দোষী প্রমাণিত হয়ে নিষিদ্ধ হন মোহাম্মদ আশরাফুল। দুই বছরের স্থগিতাদেশ কাটিয়ে বর্তমানে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরেছেন জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!