• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মহাকাশের বাসিন্দা হতে চান? ফর্ম পূরণ করুন!


মেহেদী হাসান, নিউজরুম এডিটর অক্টোবর ১৫, ২০১৬, ১০:৩৫ পিএম
মহাকাশের বাসিন্দা হতে চান? ফর্ম পূরণ করুন!

ঢাকা: আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, আপনার দেশ কোথায়? নিশ্চয়ই বলে দিবেন বাংলাদেশ। এমন প্রশ্ন হরহামেশাই শুনতে হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই প্রশ্নটি তখনই যৌক্তিক হয় যখন প্রশ্নকর্তা আর আপনি এই পৃথিবীর কোনো দেশে অবস্থান করেন। আর যদি এই যদি পৃথিবীর বাইরে মহাকাশে গিয়ে এমন প্রশ্নের মুখে পড়েন, তাহলে কী উত্তর দেবেন? নিশ্চয়ই বলবেন, আমি পৃথিবী থেকে এসেছি। কিংবা আপনি পৃথিবীর বাসিন্দা।

আর খুব বেশিদিন নয়, যখন এমন প্রশ্নের মুখে আপনাকে পড়তেই হবে। কারণ এতোদিন মহাকাশে সাধারণ মানুষের স্থায়ী বসবাস করার ভাবনাটি ছিল কল্পবিজ্ঞানের বইয়েই। কিন্তু খুব শিগগিরই সে ধারনা পাল্টে যাচ্ছে।খুলতে যাচ্ছে কল্পবিজ্ঞানের সেই ‘দরজা’।

গত ১২ অক্টোবর রাশিয়ান বিজ্ঞানী ইগর আশুরবেলি এমন এক অদ্ভুদ স্বপ্ন দেখালেন। ভিয়েনার অ্যারোস্পেস ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার(এআইআরসি) এর প্রতিষ্ঠাতা এই বিজ্ঞানী সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দিলেন, ২০১৭ সালেই মহাকাশে নতুন দেশ গড়ে তুলবেন তারা। সাধারণ মানুষ সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন।

ইগর দাবি করলেন, ‘এবার আমরা পৃথিবীর বাইরে নতুন দেশ গড়ে তুলবো। সেটা খুব শিগগিরই। আগামী বছরই পাড়ি দেব মহাকাশে। সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করবো।’

ইগরের কথা শুনে অনেকেই ভাবছেন তিনি প্রলাপ বকছেন। কিন্তু একদমই তা নয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বিজ্ঞানীরা তার উদ্যোগকে ইতোমধ্যে স্বাগতও জানিয়েছেন। তাহলে আর দেরি কেন? ঝটপট দরখাস্ত করে ফেলুন। আগে ভাগেই প্লট বুক দেন। পরে যদি না পান!

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মহাকাশে আন্তর্জাতিক দেশ গড়ার ভাবনা ইগরের মাথায় এলো কীভাবে? তার প্রোজেক্ট কি সফল হবে? কীভাবে আবেদন করবেন মহাকাশের নাগরিক হতে গেলে? আপনার মনের ভিতর উঁকি দেয়া এসব প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন ইগর।

তিনি জানিয়েছেন, যে কোনও মুহূর্তে মহাকাশে থেকে আসা গ্রহাণুর সঙ্গে বড়সড় ধাক্কা লাগতে পারে পৃথিবীর। মানবজাতিকে সুরক্ষিত রাখতেই মহাকাশে আলাদা করে স্পেস নেশন তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

নতুন আন্তর্জাতিক এই দেশের নাগরিকরা ধর্ম, বর্ণ কিংবা ভাষা দিয়ে পরিচিতি পাবে না। পৃথিবীর যাবতীয় সামাজিক নিয়মকে উপেক্ষা করে প্রতিভা ও মানবতাকে গুরুত্ব দেয়া হবে এখানে।

এর আগে ২০১৩ সালে রাশিয়াতে চেলিয়াবিনস্ক উল্কা পিণ্ডের আঘাতে প্রায় এক হাজার লোক আহত হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল হাজার চারেক বাড়ি। এই রকম মহাকাশ থেকে আসা নানা ধরনের বিপদের আশঙ্কা থেকে বাঁচতে বিকল্প বাসস্থান তৈরি করতে এআইআরসির বিজ্ঞানীরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিজ্ঞানী ইগর আশুরবেলি আরও জানান, গ্রহাণুর সঙ্গে ধাক্কা, সূর্যের প্রখর উত্তাপ কিংবা স্পেস স্টেশনের ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীকে বিপদে ফেলতে পারে। প্রায় ২০ হাজার মহাজাগতিক বর্জ্য পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যে কোনও মুহূর্তে এগুলি আঘাত করতে পারে পৃথিবীকে।

আশুরবেলি জানান, তারা যে নতুন স্পেস নেশন তৈরি করতে চলেছেন তার নাম আসগার্ডিয়া। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিশেষজ্ঞদের একত্র করে তৈরি করা হচ্ছে প্রোটোটাইপ স্যাটেলাইট। এই স্যাটেলাইট ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাঠানো হবে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, স্যাটেলাইটটি অবস্থান করবে পৃথিবীর খুব কাছের কক্ষপথে (লো আর্থ অরবিট) যাকে বলা হয় ডেমোক্র্যাটিসেশন অব স্পেস।

স্পেস নেশন আসগার্ডিয়ার নাগরিক হতে পারেন আপনিও। এর জন্য আপনাকে আসগার্ডিয়ার নিজস্ব ওয়েবসাইটে ফর্ম পূরণ করতে হবে। নতুন দেশের জন্য পতাকা, জাতীয় সংগীত এবং দেশের লোগো তৈরির ভাবনা আপনি দিতে পারেন। এ সবের জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতাও শুরু হয়ে গেছে।

তবে কিন্তু এখন পর্যন্ত আসগার্ডিয়ার তরফ থেকে পরিষ্কার করে জানানো হয়নি মহাকাশে কীভাবে লক্ষাধিক মানুষের আশ্রয় দেবে তারা। পৃথিবীবাসী কিন্তু এখনই দিন গুনছে সেই রূপকথার দেশের নাগরিক হওয়ার জন্য!

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!