• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
যান চলাচলে বিশৃঙ্খলা

যানজট নিরসনে হচ্ছে সমন্বয়ক প্রতিষ্ঠান


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২০, ২০১৮, ০২:০৯ পিএম
যানজট নিরসনে হচ্ছে সমন্বয়ক প্রতিষ্ঠান

ঢাকা : রাজধানীতে যানজটের অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে নগরবাসীকে রেহাই দিতে অবশেষে ‘যানবাহন সমন্বয়ক’ প্রতিষ্ঠান গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানটি যানজট লাঘবে প্রশাসনিক কাঠামোকে আরো শক্তিশালী করতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা জেলা প্রশাসন, ঢাকা ওয়াসা ও বিদ্যুৎ বিভাগ সমন্বিতভাবে সমন্বয়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে।

বিজ্ঞানভিত্তিক ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা না থাকায় মহানগরীর সড়কগুলোয় বিশৃঙ্খলভাবে যানবাহন চলাচল করছে। যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো ইচ্ছেমতো রাস্তার ওপরে থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। পাশাপাশি কায়িক পরিশ্রমে চালিত ধীরগতির রিকশা মোটরচালিত যানবাহনের সঙ্গে রাস্তায় চলমান থাকায় যানজটকে আরো দুর্বিষহ করে তুলেছে।

এদিকে পরিকল্পিত পার্কিংব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় ব্যস্ত সময়েও রাজধানীর বিভিন্ন অফিস, মার্কেট বা বিপণিবিতানের সামনের রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করা হচ্ছে বেআইনিভাবে। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন ও রাজউক বারবার হুশিয়ারি দিলেও অবৈধ পার্কিংব্যবস্থা বন্ধ করা যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর বিভিন্ন ভবন ও মার্কেটে নির্দিষ্ট কার পার্কিংয়ের জায়গা থাকলেও এর লাগামহীন অপব্যবহার হচ্ছে বাণিজ্যিক কাজে। ফলে অফিস, মার্কেট বা বিপণিবিতানের সামনের রাস্তাই যেন হয়ে উঠেছে ‘অঘোষিত কার পার্কিং’ স্থান। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের উভয়পাশে গড়ে ওঠা অনেক বহুতল ভবনে আগন্তুকের গাড়ি পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত সুবিধা নেই।

যানজট নিয়ন্ত্রণে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ডিএনসিসির প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক, ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন সড়কে গাড়ি পার্কিং না করতে সংশ্লিষ্টদের বারবার অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই নাজুক পরিস্থিতির হেরফের হয়নি। এ প্রেক্ষাপটে প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানটি যানজট লাঘবে প্রশাসনিক কাঠামোকে আরো শক্তিশালী করতে কাজ করবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীর অধিকাংশ ভবনেই পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। কিছু কিছু ভবনের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় গড়ে উঠেছে মার্কেট, দোকান, অফিস, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ফলে অনেককেই বাধ্য হয়ে সড়ক দখল করে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করতে হচ্ছে। এভাবে গাড়ি রাখায় সড়কের প্রস্থ ছোট হয়ে যায়। ফলে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে নগরীতে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তা ছাড়া রাজধানীতে গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো নীতিমালা না থাকায় গাড়িচালক ও মালিকরা এ ব্যাপারে কারো কোনো কথাই শোনেন না। ট্রাফিক সার্জেন্ট ও পুলিশের সামনেই রাস্তার ওপর যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, ‘যেভাবে রাজধানীতে যানবাহন চলাচল এবং রাস্তায় যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ জন্য গাড়ি পার্কিংয়ের নীতিমালা তৈরি করা খুবই জরুরি। এ ব্যাপারে নীতিমালা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করা গেলে নগরীতে যানজট কমার পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের আয়ও বাড়বে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ আট সেবা সংস্থার মধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠকও হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে একটি শক্তিশালী পরিষদ গঠন হলে রাজধানীর এ যানজট সমস্যা নিরসন সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’  

যানজটমুক্ত ঢাকা শহর গড়ে তুলতে মেট্রোরেলের কাজ শুরু করেছি উল্লেখ করে গত সপ্তাহের এক বৈঠকে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে যানজট অনেকটা কমে যাবে। যানজট সমস্যা সমাধানে আমাদের চলমান অন্যান্য উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে, ৩৮ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা শহরের জাহাঙ্গীর গেট এলাকায় ফ্লাইওভার ও আন্ডারপাস এবং শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ। এ ছাড়া গাজীপুর থেকে শাহজালাল বিমানবন্দর পর্যন্ত এবং বিমানবন্দর থেকে ঝিলমিল পর্যন্ত বিআরটি (বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট) নির্মাণ হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!