• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রদ্ধাভরে ভাষা শহীদদের স্বরণ


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৮, ০৯:৩৪ এএম
শ্রদ্ধাভরে ভাষা শহীদদের স্বরণ

ঢাকা: মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে হাজারও মানুষের ঢল নামে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটের পর থেকেই সেখানে হাজির হয়েছেন নারী, শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষ, যা সকালে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপ্রতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ভাষা শহীদদের প্রতি। এরপর তারা দু’জন কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে স্মরণ করেন ভাষা শহীদদের অবদান। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শ্রদ্ধা জানান শহীদ মিনারে।

পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে আবারো ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। এরপর শহীদ মিনারে একে একে শ্রদ্ধা জানান সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী, ডেপুটি স্পিকার, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট, তিন বাহিনীর প্রধান, আইজিপি, অ্যাটর্নি জেনারেল ও ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত।

এরপরই মূলত শহীদ মিনারের বেদী উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। এসময় শুরুতেই শ্রদ্ধা জানান ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য, ঢাবি শিক্ষক সমিতি ও ঢাবি সাংবাদিক সমিতি। এরপর রাজনৈতিক দলগুলো একে একে ফুল নিয়ে হাজির হয় শহীদ মিনারের বেদীতে। শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সারি ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

প্রথম প্রহরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শ্রদ্ধা জানান জাসদের দুই অংশ, ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবি, সাম্যবাদী দল, বাসদের তিন অংশ, গণসংহতি আন্দোলন, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ।

দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকায় এবার প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে অনুপস্থিত ছিল বিএনপি। তারা সকালে ফুল দেবে বলে জানিয়েছে।

ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে শ্রদ্ধা জানায় ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

এর আগে, মঙ্গলবার রাত ১১টা ৫৩ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৌঁছান শহীদ মিনার এলাকয়। তাদের স্বাগত জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরসহ আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

শ্রদ্ধানুষ্ঠান ভাবগাম্ভীর্য ও শান্তিপূর্ণভাবে পালনের লক্ষ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাধারণের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা করা হয়; পথ চলায়ও রয়েছে নিয়ন্ত্রণ।

রাজধানীর পলাশীর মোড় হয়ে জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রবেশের পথ রাখা হয়েছে। এই পথে প্রবেশ করে শ্রদ্ধা জানিয়ে সবাই বের হয়ে যাচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে দিয়ে দোয়েল চত্বর হয়ে। শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হওয়া সংগঠনগুলোর সঙ্গে রয়েছে ব্যানার, ফুলের তোড়া। আর সাধারণ মানুষের হাতে হাতেও ফুল ও ফুলের তোড়া। হাজার হাজার মানুষ এখন দাঁড়িয়ে রয়েছেন শ্রদ্ধা জানানোর এই সারিতে।

ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিক থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলো জড়ো হতে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায়। সাধারণ মানুষও রয়েছেন এই লাইনে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রবেশ পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হলের পলাশী গেটের সামনে একটি ও জগন্নাথ হলের মোড়ে আরেকটি ব্যারিকেড দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই দুটি ব্যারিকেড পার হয়েই সবাইকে পৌঁছাতে হচ্ছে শহীদ মিনারে।

ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর এই আয়োজন চলছে সুশৃঙ্খলভাবে। পুলিশ, র‌্যাবসহ সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে গোটা এলাকায়। এর বাইরেও শহীদ মিনারের বেদীর আশপাশে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করছেন বিএনসিসি সদস্যরা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!