• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
ধর্ষণ মানিকের সহযোগীর নামে জিডি

সেই টিটুর বিরুদ্ধে এবার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ


জাবি প্রতিনিধি মার্চ ১৬, ২০১৮, ০৭:৩৫ পিএম
সেই টিটুর বিরুদ্ধে এবার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

সাইফ (বামে), টিটু (ডানে)

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন ওরফে ধর্ষণ মানিকের সহযোগী টিটুর বিরুদ্ধে সাড়ে দশ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে আহ্বায়কের দায়িত্বে থেকে সে এমন প্রতারণা করেছে। এদিকে আত্মসাতের টাকা ফিরিয়ে দিতে বলায় তার বন্ধুকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এই অভিযোগে তার নামে থানায় ডিজি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ মার্চ) বিকেলে জাবি সাংবাদিক সমিতি (জাবিসাস) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ওই অনুষ্ঠানের কমিটিতে থাকা অন্যান্য সদস্যরা।

লিখিত বক্তব্যে অনুষ্ঠানটির যুগ্ম আহ্বায়ক আল-আমিন হিমেল বলেন, ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের ২৫ বছর পূর্তিতে রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য মীর মেহেদী হাসান টিটু এবং বিজ্ঞাপন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সাইফ উদ্দিন আহম্মেদ। তারা দুজন কৌশলে অনুষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন ফি এবং বিজ্ঞাপন বাবদ আয়ের ১০ লাখ ২৬ হাজার ৭শ’ টাকা আত্মসাৎ করেছে। অনুষ্ঠান শেষে চূড়ান্ত হিসাবে ১২ লাখ ৭০ হাজার টাকা আয় ও ১৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ব্যয় দেখায়। সে হিসেবে ২ লাখ ২৮ হাজার টাকা ঘাটতি থাকে।

তিনি আরো বলেন, টিটু অনুষ্ঠানের সব টাকা পরিশোধ করার কথা বললেও বাস্তবে সে দোকানের কোনো টাকা পরিশোধ করেনি। ফলে অনুষ্ঠান শেষে ১০ লাখ ২৬ হাজার টাকা অপরিশোধিত থাকে যা টিটু ও সাইফ আত্মসাৎ করেছে। কিন্তু আয়-ব্যায়ের জন্য সম্মিলিতভাবে ডাচ বাংলা ব্যাংকের হিসেবে টাকা জমার কথা থাকলেও তারা দুজন কাউকে না জানিয়ে এক্সিম ব্যাংকে হিসেব (নং-০১৯১৩১০০৩৩৩৭৬৭) খুলে গোপনে আয়ের সকল টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এদিকে আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত চাওয়ায় শুভ নামের এক বন্ধুকে সে হত্যার হুমকি দিয়েছে। প্রাণনাশের হুমকিতে শুভ উত্তরা পশ্চিম থানায় জিডি করেন। (জিডি নং ৫৬৫, ৮.২.২০১৮)।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, তাদের এক বন্ধুর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সে বিভিন্নজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ ২১তম ব্যাচের প্রায় ২৫ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে টিটুর বিরুদ্ধে। চাকরি দেয়ার কথা বলে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন টিটু। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক এক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, টিটু আমার কাছ থেকেও দেড় লাখ টাকা ধার নিয়ে আর দেয়নি। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মচারীর ছেলে-মেয়েকে চাকরি দেয়ার কথা বলে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে টিটু।

তাছাড়া শিক্ষক লাঞ্ছনায় অভিযুক্ত টিটু ১৯৯৮ সালে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন মানিক ওরফে ধর্ষণ মানিকের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। আন্দোলন চলাকালে মানিক ও টিটু ১৯৯৮ সালের ২৩ আগস্ট নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন সহকারী অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদকে ছবি তোলার দায়ে শরীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। ওই ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট মানিককে ১ বছর এবং টিটুকে ২ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে উভয়কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পাল্টা অবস্থান নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী নিয়ে রেজিস্ট্রার ভবন ভাঙচুর চালায়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি একটি টাকাও নেয়নি। সব টাকা টিটু খরচ করেছে সে টাকার বিষয়ে ভালো বলতে পারবে।
আপনি ও টিটু আলাদা হিসাব খুলে গোপনে আয়-ব্যায় করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘টিটু আহ্বায়ক থাকায় তার ইচ্ছায় সব কাজ হয়েছে।’

এ বিষয়ে মীর মেহেদী হাসান টিটুর ব্যক্তিগত ২টি মোবাইল নম্বরে ৮ বার করে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!