• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
উত্তর মেয়র পদ 

সোহেল তাজই কেন আ.লীগের প্রথম পছন্দ?


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭, ০৫:০২ পিএম
সোহেল তাজই কেন আ.লীগের প্রথম পছন্দ?

ফাইল ছবি

ঢাকা: ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে বড় চমক হতে পারেন তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। তিনি নবম সংসদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগী সদস্য ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। 

আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, সোহলে তাজকে মনোনয়ন দিলে এ শহরের মানুষ তাকে গ্রহণ করবে। ব্যক্তিগতভাবে সৎ ও পরিশ্রমী সোহেল তাজও কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই এখানে ভালো কাজ করতে পারবেন। ঢাকার মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন তিনি।

হাইকমান্ড সূত্রে জানা যায়, সোহেল তাজকে অচিরেই ডেকে পাঠাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। সোহেল তাজের সায় থাকলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে তাকেই বেছে নেয়া হতে পারে। তবে বিষয়টির বাস্তবতা দেখতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

ফাইল ছবি

সূত্র জানায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় আবেগী প্রার্থী বলতে কি বোঝানো হয়েছে, তার ব্যাখ্যা করতে বোর্ড সদস্যরা অপারগতা প্রকাশ করলেও ধারণা করা হচ্ছে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের পত্নী বা পুত্রের মনোনয়নলাভের কোন সম্ভাবনা নেই। 

“আবেগী প্রার্থী নয়” মর্মে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায়ের যথার্থ প্রতিফলন ঘটতে পারে, জনপ্রিয় তরুণ নেতা সোহেল তাজের মনোনয়নের মাধ্যমে। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি অকুন্ঠ বিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী এমন কোন নতুন মুখকেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে দেখা যেতে পারে। 

সেই নতুন মুখ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের পুত্র তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ কিনা, তা পরিস্কার না করলেও হাইকমান্ডীয় একটি সূত্র দাবি করেছে সোহেল তাজই হচ্ছেন ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে বড় চমক। 

ফাইল ছবি

সম্পাদক মন্ডলীর একজন প্রভাবশালী নেতার মতে, সোহেল তাজ ইত্যমধ্যেই তার সততা, নিষ্ঠা ও আত্মসম্মানের জাগরণে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন। জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। লোভ-লালসার তাকে আত্মগ্লানীর পথে হাঁটাতে পারেনি। পিতার ন্যায় সোহেল তাজও রাজনীতির অপেক্ষা বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক পরিচয়কে মুখ্য করে দেখছেন। 

এই নেতা বলেন, কাছে দূরে যেখানেই থাকুন সোহেল তাজ দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি অকুন্ঠ আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই পথ চলেন। তরুণদের মানসগঠনে তিনি সত্যিই উপমা। শেখ হাসিনার মায়াজালে বেস্টিত সোহেল তাজ মেয়র পদে প্রার্থী হলে সর্বমহলের মাঝেই সাড়া জাগাতে পারবেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারাও। 

তবে সোহেল তাজের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি। তার ছেড়ে দেয়া আসনের সংসদ সদস্য বোন সিমিন হোসেন রিমিও এ ব্যাপারে মুখ খুলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। 

ফাইল ছবি

ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত আলোচিত কেউই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না বলে নিশ্চিত করেছে সূত্রটি। সায় মিললে মেয়র পদে তানজিম আহমেদ সোহেল তাজই লড়বেন নির্বাচনী যুদ্ধে। 

সূত্র জানায় আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা মনে করেন, কোনপ্রকার নির্বাচনী ঝুঁকি এড়ানোর ক্ষেত্রেও সোহেল তাজ যোগ্যতার পরিচয়বহন করবে। 

উল্লেখ্য, অপ্রকাশিত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের পুত্র তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ প্রথমে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে এবং পরবর্তীতে সংসদ সদস্য পদেও ইস্তফা দেন। গাজীপুর-৪ আসন শূন্য ঘোষিত হলে উপনির্বাচনে তার বোন সিমিন হোসেন রিমিকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। 

২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মধ্য দিয়ে তাজউদ্দীন আহমেদের পুত্র তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বিরোধী দলের সংসদ সদস্য হয়েও সোহেল তাজ বিএনপি -জামায়াত জোট সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকারে পরিণত হন। ‘ ০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অবিস্মরণীয় বিজয় পেলে সোহেল তাজকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করা হয়। প্রতিমন্ত্রী হিসাবে অচিরেই তিনি জনগণের আস্থা কুড়াতেও সক্ষম হন। কিন্তু অদৃশ্য এক অপ্রীতিকর ঘটনার জের ধরে আত্মসম্মানের জলাঞ্জলী না দিয়ে পদত্যাগ করেন সোহেল তাজ। 

ফাইল ছবি

প্রসঙ্গত, তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সাফল্যের সাথে পালন করেন। একজন সৎ ও মেধাবী রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর পরিচিতি ছিল।

তাজউদ্দীন আহমদ মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন যা মুজিবনগর সরকার নামে অধিক পরিচিত। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসাবে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হবার পর আরও তিনজন জাতীয় নেতাসহ তাঁকে বন্দী করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। সেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেই ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর বন্দী অবস্থায় ঘাতকের বুলেটে তিনি নিহত হন।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!