সকল জল্পনা–কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান শনিবার বিকেলে পরিণত হয়েছিল ঐক্যের এক অনন্য দৃষ্টান্তে। কাসেমী পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত “আজমতে সাহাবা” মহাসম্মেলন শুধু একটি ধর্মীয় সমাবেশ ছিল না, এটি ছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নারায়ণগঞ্জের জেলা ও মহানগর শাখার সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের এক অভূতপূর্ব মিলনমেলা।
সম্মেলন চলাকালীন সময় আসরের আজান ধ্বনিত হলে হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশ রেখে মসজিদের দিকে ছুটে যান নামাজ আদায় করতে। এমনকি সমাবেশ শেষে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ সব স্তরের কর্মীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, এক কাতারে দাঁড়িয়ে মহাসম্মেলনের মঞ্চেই নামাজ আদায় করেন। এই দৃশ্য প্রমাণ করে দিয়েছে, ধর্মীয় অনুশাসন আর রাজনৈতিক ঐক্য একসঙ্গে মিশে গড়ে তুলেছে এক শক্তিশালী বন্ধন।
তবে এই ঐক্যের সুর যেন সহ্য হয়নি একটি কুচক্রী মহলের। যখন হাজার হাজার মানুষ নামাজে ব্যস্ত, সেই মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হয় মিথ্যা প্রোপাগান্ডা। নামাজের সময় খালি জায়গার ভিডিও দেখিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়, সম্মেলন ব্যর্থ হয়েছে—যা ছিল সম্পূর্ণ বাস্তবতাবর্জিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই অপপ্রচার প্রকৃত চিত্র আড়াল করার এক জঘন্য প্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ, যারা নামাজ আদায় করছিলেন, তাঁদের হৃদয় ও মন ছিল এই ঐক্যের সঙ্গেই।
শনিবার বিকেলের এই মহাসম্মেলন ছিল এক সফল রাজনৈতিক উত্থানের প্রতিচ্ছবি। মুফতি মনির হোসেন কাসেমীর নারায়ণগঞ্জ–৪ আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করছিল এই সমাবেশ। একই আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থীরাও এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজেদের ঐক্যবদ্ধতার বার্তা দিয়েছেন, যা স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
“আজমতে সাহাবা” মহাসম্মেলন প্রমাণ করে দিয়েছে—বিএনপি নারায়ণগঞ্জের মাটি থেকে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তাঁদের ঐক্য এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি সুদৃঢ়। এই সম্মেলন কেবল একটি সমাবেশ ছিল না, এটি ছিল বিশ্বাস, ঐক্য ও সংহতির এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি—যা আগামী দিনের রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এসএইচ