বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট আসলে কী?

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:১০ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকা: জাতীয় রাজনীতিতে বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি প্রায়শই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। ‘নোট অব ডিসেন্ট’-যা বাংলায় বলা যায় ‘অসন্তোষের নোট’-বৃহত্তর দলের নীতির সঙ্গে অসম্মতি বা দ্বন্দ্ব প্রকাশের একটি আনুষ্ঠানিক বা অ-আনুষ্ঠানিক পদ্ধতি। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির একাংশের নেতা ও কর্মীরা দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত বা প্রার্থী মনোনয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট প্রকাশ করেছেন।

নোট অব ডিসেন্টের মূল উদ্দেশ্য হলো দলের সিদ্ধান্ত বা কার্যক্রমে বিরোধিতা প্রকাশ করা হলেও এটি দলীয় প্রতিষ্ঠান বা নীতির বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার দাবি নয়। এই নোট মূলত অভ্যন্তরীণ আলোচনার মাধ্যমে নেতা ও কর্মীদের মতামত তুলে ধরা এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তাদের অসন্তোষ জানাতে ব্যবহৃত হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি বিএনপির অভ্যন্তরীণ ধারা ও দলের কর্মসূচি সম্বন্ধে নেতাদের অসন্তোষ প্রকাশের একটি স্বচ্ছ উপায়। কিন্তু একই সঙ্গে এটি দলীয় ঐক্যহীনতার প্রতীক হিসেবেও ব্যাখ্যা করা হয়। বিশেষ করে নির্বাচনী সময়ে, যখন মনোনয়ন বিতর্ক বা স্থানীয় নেতৃত্বের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাচ্ছে, তখন নোট অব ডিসেন্ট রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে ব্যবহার হতে পারে।

বিএনপির অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, নোট অব ডিসেন্টে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের সঙ্গে সমন্বয় না থাকার বিষয় তুলে ধরা হয়। এটি সরাসরি দলের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা নয়, বরং নেতৃত্বকে স্থানীয় বাস্তবতা ও কর্মীদের অবস্থান বুঝিয়ে দেওয়ার উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, নোট অব ডিসেন্টের ফলে বিএনপির নেতৃত্ব যদি যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেয়, তা দলের অভ্যন্তরীণ একতা ও শক্তি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। তবে নেতাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা বা অসন্তোষ দীর্ঘমেয়াদে দলের ইমেজ ও নির্বাচনী কৌশলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, নির্বাচনের আগে মনোনয়ন বিতর্ক বা নেতৃত্বের সঙ্গে অসন্তোষ প্রকাশের জন্য নোট অব ডিসেন্টকে অপব্যাখ্যা করা হলে, বিরোধী দলের পক্ষে প্রার্থী সমর্থন ও ভোট সংগ্রহে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। এ কারণে বিএনপি নেতৃত্বকে সতর্ক থাকতে হবে এবং নোট অব ডিসেন্টের বিষয়গুলো সমাধানের মাধ্যমে দলীয় ঐক্য রক্ষা করতে হবে।

সামগ্রিকভাবে, নোট অব ডিসেন্ট বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এটি দলীয় সংস্কৃতিতে যে সকল অসন্তোষ বা মতবিরোধ রয়েছে, তা প্রকাশ করে এবং নেতৃত্বকে সমন্বয় ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তথ্য প্রদান করে। তবে এটি যথাযথ ব্যবস্থাপনা ছাড়া দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্যকে চ্যালেঞ্জও দিতে পারে।

এসএইচ