• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু


কক্সবাজার প্রতিনিধি  ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম
মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু

ঢাকা: মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহীদের সামনে টিকতে না পেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষীবাহিনীসহ (বিজিপি) মিয়ানমারের ৩৩০ জন নাগরিককে মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যসহ ওই ৩৩০ সদস্যকে বৃহস্পতিবার সকালে উখিয়ার ইনানী উপকূলের নৌবাহিনীর জেটি ঘাট এলাকা দিয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি জানিয়েছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর ওই সদস্যদের কক্সবাজারের টেকনাফ ও বান্দরবানের ঘুমধুমের দুটি স্কুলে রাখা হয়েছিল। হস্তান্তরের জন্য বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাসে করে তাতের ইনানী উপকূলে নৌবাহিনীর জেটি ঘাট এলাকায় নিয়ে আসা আনা হয়। যারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছিলেন, তাদের নিয়ে আসা হয় অ্যাম্বুলেন্সে করে।  

তাদের নিয়ে যেতে মিয়ানমার নৌ বাহিনীর একটি জাহাজ বাংলাদেশের সীমানায় এসে গভীর সাগরে অবস্থান করছে। পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের পর্যটকবাহী জাহাজ কর্ণফুলীতে করে করে পৌঁছে দেওয়া হবে মিয়ানমারের ওই জাহাজে। সেখানেই হবে হস্তান্তর প্রক্রিয়া।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার বিষয়ক পরিচালক মো. রাকিবুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব মো. রাশেদ হোসেন চৌধুরী, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ কয়েকজন কর্মকর্তা এই হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন।

এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন করতে নৌবাহিনীর জেটি ঘাট এলাকায় নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির পাশাপাশি কোস্ট গার্ড সদস্যরা নিয়োজিত আছেন সেখানে।

কী ঘটেছিল
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী বাহিনী একজোট হয়ে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে।

বাহিনীগুলো হল- তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি-টিএনএলএ, আরাকান আর্মি-এএ এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি-এমএনডিএএ। তারা শান, রাখাইন, চীন ও কেয়াহ রাজ্যে লড়াই চালাচ্ছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও সেনাপোস্ট দখল করে ইতোমধ্যে তারা সাফল্য দেখিয়েছে।

আরাকান আর্মি (এএ) এ জোটের অন্যতম অংশ। মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনের সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর একটি সশস্ত্র বাহিনী এটি। তারা রাখাইনের বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াই করছে।

রাখাইনে সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ের প্রভাব পড়ছে সীমান্তের এপারের জনগোষ্ঠীর মধ্যেও। যুদ্ধের গুলি ও মর্টার শেল এসে পড়ছে এপাড়ে। এরকম ঘটনায় অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন কয়েকজন। ঢাকায় মিয়ানমারের দূতকে ডেকে এসব ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয় বাংলাদেশের তরফ থেকে।

এদিকে যুদ্ধের মধ্যে বিদ্রোহীরা বিজিপির কয়েকটি সীমান্ত ফাঁড়ি দখল করে নিলে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করে। পরের কয়েক দিনে তাদের সংখ্যা পৌঁছায় ৩৩০ জনে।

শুরুতে তাদের নিরস্ত্র করে বিজিবি হেফাজতে রাখা হয় বান্দরবানের একটি স্কুলে। পরে তাদের একটি অংশকে সরিয়ে নেওয়া হয় টেকনাফে।

এআর

Wordbridge School
Link copied!