• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

ব্যানার পোস্টারে ঢাকা পড়ছে ময়মনসিংহের জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি


রিপন অভি, ময়মনসিংহ জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ০৩:৩৯ পিএম
ব্যানার পোস্টারে ঢাকা পড়ছে ময়মনসিংহের জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি

ময়মনসিংহ: নানান ধরনের ব্যানার পোস্টারে ঢাকা পড়ছে ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চিত্র তুলে ধরা গ্রাফিতি। অলি গলি থেকে শুরু করে বড় সড়কের দালান, দেয়াল, বৈদ্যুতিক খুঁটি এমনকি সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও বাদ পড়ছে না। এতে একদিকে নষ্ট হচ্ছে আন্দোলনের স্মৃতি, অন্যদিকে শহর হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য। এ নিয়ে আইন থাকলেও নেই প্রয়োগ। যত্রতত্র ব্যানার পোস্টার লাগানোতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ত্যাগ, আত্মাহুতি ও সফলতাকে স্মরণীয় করে রাখতে ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন দেয়ালে শিক্ষার্থীরা অংকন করেন গ্রাফিতি। সেই সাথে শহরকে সুন্দর রাখতে খুলে ফেলা হয় সকল ব্যানার পোস্টার।

জুলাই বিপ্লবের প্রায় পাঁচ মাসের মধ্যে সেই হৃদয়ছোঁয়া গ্রাফিতিগুলো ঢেকে যাচ্ছে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পোস্টারে। এতে মুছে ফেলা হচ্ছে ফ্যাসিবাদ, দুর্নীতি, রাষ্ট্র সংস্কারসহ বিভিন্ন উক্তি ও স্লোগান সম্পর্কিত গ্রাফিতি। সেই সাথে নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য। সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের টাউন হল মোড়, বিদ্যাময়ী স্কুল সংলগ্ন দেওয়ালের গ্রাফিতিগুলো বিভিন্ন পোস্টার, পড়াতে চাইয়ের বিজ্ঞাপন দিয়ে ঢেকে ফেলা হচ্ছে। 

গ্রাফিতির উপর এসব পোস্টার সাঁটানোতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ফাহমিদা সরকার সায়মা বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে আন্দোলন সফল করেছি। আন্দেলন চলাকালীন বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরতে দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি অংকন করা হয়। এতে শহরের সৌন্দর্য অনেক বেরে যায়। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন পোস্টার দিয়ে সেগুলো ঢেকে ফেলা হচ্ছে। এতে একদিকে আমাদের আন্দোলনকে অবমাননা করা হচ্ছে। অন্যদিকে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করা হচ্ছে।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরেক শিক্ষার্থী আশিকুল হাকিম জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দু:খজনক যে বর্তমান সময়ে গ্রাফিতিগুলোকে নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে। যে যেভাবে পারছে ব্যানার পোস্টার লাগিয়ে যাচ্ছে। যত্রতত্র এগুলো লাগানোর ফলে অগ্নিকান্ড সহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী। 

মিতা নূর রহমান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, পাঁচ আগষ্টের আগে শহরে যে পোস্টারগুলো ছিলো এখনও একই আছে। শুধু ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। এগুলো দেখার জন্য প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশন রয়েছে। আইন প্রয়োগ করে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।

জেলা নাগরিক আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট শিব্বির আহমেদ লিটন বলেন, দেশে নেতা হওয়া খুব সহজ। আজকে পোস্টার লাগিয়ে কাল থেকেই সে নেতা হয়ে যায়। এ ধরনের মন মানসিকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। এই শহর আমাদের সবার। সৌন্দর্য রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার। প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের উচিত যেখানে সেখানে ব্যানার পোস্টার লাগানো বন্ধ করে প্রচার প্রচারনার জন্য নিদিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া। এতে পরিবেশ ও সৌন্দর্য সবদিক থেকে রক্ষা পাবে। সকলে সাথে আলাপ আলোচনা করে এটা করা যায়।

ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের সচিব সুমনা আল মজীদ বলেন, পোস্টার লাগানোর বিষয়ে আইন রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তারা এগুলো মনিটরিং করছেন। মাইকিং করা হচ্ছে সেই সাথে রাতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে যাতে যত্রতত্র পোস্টার কেউ না লাগায়। সিটি কর্পোরেশন থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দৃষ্টি দূষণ রোধ ও সৌন্দর্য রক্ষায় প্রচার প্রচারনার পোস্টার লাগানোর নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারন করে দিবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, এমনটাই প্রত্যাশা ময়মনসিংহবাসীর।

এসএস

Wordbridge School
Link copied!