• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

চাঁদপুরে বোরো ধান কাটার ব্যস্ততা, কৃষকের চোখে-মুখে সোনালি স্বপ্ন


চাঁদপুর প্রতিনিধি মে ৪, ২০২৫, ০৭:৪৮ পিএম
চাঁদপুরে বোরো ধান কাটার ব্যস্ততা, কৃষকের চোখে-মুখে সোনালি স্বপ্ন

চাঁদপুর: মতলব উত্তর উপজেলায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতায় চলতি বোরো মৌসুমে ধান কাটার মহোৎসব শুরু হয়েছে। উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ পুরোদমে চলছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মতলব উত্তরে ৯৯৮৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৫,৪৯৫ মেট্রিক টন ধান এবং ৪৩,১৩০ মেট্রিক টন চাল। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বোরো ধানের আবাদ হওয়ায় কৃষকেরা বেশ উৎসাহিত।

সরকারের কৃষি বান্ধব নীতিমালা, উপজেলা কৃষি অফিসের তৎপরতা, কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রম, অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত কৃষি উপকরণের সরবরাহ মিলিয়ে চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষকদের বিনামূল্যে উন্নত বীজ, সার ও কীটনাশক বিতরণ করা হয়েছে এবং কৃষি অফিসারগণ মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছেন।

ধান কাটার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে আধুনিক কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন, যার মাধ্যমে প্রতি শতকে ৯০ টাকা এবং প্রতি একরে ৯০০০ টাকা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি অফিস।

ছেংগারচর পৌরসভার কৃষক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এই বছর ধান অনেক ভালো হয়েছে। বীজ, সার আর পরামর্শ সব কিছুই সময়মতো পেয়েছি। আশা করছি ভালো দামও পাব।

দূর্গাপুর ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আগে ধান কাটায় অনেক কষ্ট হতো। এখন হারভেস্টার মেশিনের কারণে সময় ও খরচ দুটোই বাঁচছে।

সুলতানাবাদ ইউনিয়নের মহিলা কৃষাণী হাজেরা বেগম বলেন, সকালে উঠেই মাঠে আসি। নিজের ফলানো ধান হাতে তুলতে পারার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, সরকারের কৃষি বান্ধব নীতিমালার ফলে কৃষকরা আজ আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন ও প্রযুক্তিনির্ভর হয়েছেন। 

আমাদের কৃষি অফিস মাঠপর্যায়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে, কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করছে। এই মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোগবালাই কম ছিল, উৎপাদনও ভালো হয়েছে।

আমরা আশা করছি, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি উৎপাদন হবে। বর্তমান সময়ের কৃষক আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষিকে এগিয়ে নিচ্ছে, যা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। কৃষকের মুখে হাসি ফুটানোই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, কৃষি আমাদের অর্থনীতির প্রাণ। এক ফোঁটা ঘাম ঝরিয়ে যেসব কৃষক দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করছেন, তারা আমাদের আসল নায়ক।
 
সরকারের কৃষি উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কৃষকদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে উপজেলা প্রশাসন সবসময় পাশে রয়েছে। বোরো মৌসুমে কৃষকরা যেন সময়মতো ফসল ঘরে তুলতে পারেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় সাপোর্ট ও মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কৃষি খাত আরও সমৃদ্ধ হবে এবং কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে।

সোনালি ধান যখন মাঠে পাকে, তখন সেটি শুধু কৃষকের ঘরে ফসল নয়, বরং একটি জনপদের স্বপ্ন ও সম্ভাবনার প্রতীক হয়ে ওঠে। এই উৎসব যেন কৃষকের ঘরে হাসি বয়ে আনে-এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

এআর

Wordbridge School
Link copied!