• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

১৯ বছরেও চালু হয়নি পিরোজপুরের কলারন-সন্ন্যাসী ফেরি


পিরোজপুর প্রতিনিধি  জুন ৫, ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম
১৯ বছরেও চালু হয়নি পিরোজপুরের কলারন-সন্ন্যাসী ফেরি

পিরোজপুর: ইন্দুরকানীতে কলারন-সন্ন্যাসী ফেরি চালু হওয়ার পর দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে বন্ধ থাকায় যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। 

ঝুঁকি নিয়েই পার হচ্ছে নারী, শিশু, শিক্ষার্থী ও অসুস্থ রোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সরাসরি যোগাযোগ বিছিন্ন সুন্দরবনের সঙ্গে। যাত্রীরা প্রায় সময় নদীতে উত্তাল ঢেউ এর মধ্যেই ট্রলারে করে পার হচ্ছে এ নদীটি। এসব চিত্র সরেজমিনে ঘুরে আজ বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) দুপুরে দেখা যায়। 

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা ও বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলা সীমানায় বলেশ্বর নদীর ওপর কলারন-সন্ন্যাসী ফেরিটি জোট সরকারের আমলে ২ হাজার ৬ সালের ৪ আগস্ট তৎকালীন পিরোজপুর ১ আসনের জাতীয় সংসদের সদস্য আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর উদ্বোধনের মাধ্যমে চালু হয়। ফেরিটি চালু হওয়ার ১ বছর পর সরকার পরিবর্তন হয়।

 ফলে ফেরিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এসব অঞ্চলগুলো। সিডরের সময় কলারন প্রান্তে ফেরিঘাটের পন্টুনটি স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ও চরে আটকে থাকে অনেক দিন। পন্টুনটি আটকে থাকলেও সেটি উদ্ধার করে ওই ঘাটে পুনঃস্থাপন করেনি কর্তৃপক্ষ। 

উপজেলার কলারন আবাসনের বাসিন্দা মোতালেব জোমাদ্দার বলেন, নদীটি পার হতে ট্রলারই আমাদের একমাত্র ভরসা। তা আবার বর্ষা মৌসুমের বৈরী আবহাওয়ায় প্রায়ই বন্ধ থাকে। বর্ষার সময় নদীতে বেশি ঢেউ থাকায় ট্রলারে করে নারী ও শিশুদের নিয়ে নদী পারাপারে অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। বারবার আশ্বাসের পরও অজানা কারণে চালু হয়নি ফেরি চলাচল। ফলে, অসুস্থ রোগী ও শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন। আমাদের দাবি হাজারো মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আবারও কলারন সন্ন্যাসীর ফেরি চালু করা হোক। 

একই উপজেলার চন্ডিপুর বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী মো: রফিকুল ইসলাম বলেন- মাঝে মধ্যে এই ঘাট থেকে যাতায়াত করি। সব সময় ট্রলার না থাকার কারণে আমাদের অনেক সময়ই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এই ঘাটটি আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ফেরি না থাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নারী শিশুদের নিয়ে পারাপারে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

চন্ডিপুর ইউনিয়নের খোলপটুয়া গ্রামেরর পল্লী চিকিৎসক মো: গিয়াস উদ্দীন হাওলাদার বলেন- কলারন সন্ন্যাসী ফেরি পূনরায় চালু হলে, শরনখোলা ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতে সহজ হবে। এছাড়াও ইন্দুরকানী উপজেলার মানুষদের সঙ্গে ওই দুটি উপজেলার মানুষদের সাথে আত্মীয়তা রয়েছে ব্যাপক, সে ক্ষেত্রে তাদের নদী পথে যাতায়াতে অনেকটা সুবিধা হবে। 

স্থানীয় চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রম্যান মশিউর রহমান মঞ্জু বলেন- এ ফেরিঘাটটি পুনরায় চালু হলে ইন্দুরকানী উপজেলার সাথে শরনখোলা, সুন্দরবন, মোড়েলগঞ্জ ও মোংলার সাথে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা সহজ হবে। এর ফলে ব্যবসা বাণিজ্যেরও একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। 

পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ বলেন, কলারন সন্ন্যাসী ফেরিঘাটটি সিডরের সময় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

পুনরায় ফেরিঘাটটি স্থাপনের জন্য আন্ত মন্ত্রণালয়ে একটি মিটিং সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে পিরোজপুরের কলারন প্রান্ত, সেখানে ফেরিঘাট স্থাপনের অল্প কাজ শুরু হয়েছে। মেইন চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে বাগেরহাটের সন্ন্যাসী প্রান্তে সেখানে পানি উন্নয়নের বাজেটের ওপরে প্রায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক নির্মাণ করতে হবে ফেরি পুনরুদ্ধারের জন্য।

তিনি আরও বলেন, বাগেরহাট সড়ক বিভাগ ইতিমধ্যে প্লাটফর্ম তৈরী করে প্রাককলিত মূল্যের ছাড় এবং প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করেছে। 

ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দ ও কাজটি বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন আসলে বাগেরহাট সড়ক বিভাগ সংশ্লিষ্ট প্রসংগে কাজ করবে। শুধু মাত্র ফেরি ঘাটটিকে পূন: স্থাপনের বিষয় রয়েছে, খুবই অল্প পরিমাণে কাজ। বাগেরহাটের কাজের সময় পিরোজপুর প্রান্তের কাজ সম্পন্ন হলে, ফেরিটি পূনরায় চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হবে। 

এআর

Wordbridge School
Link copied!