পাবনা: ঈশ্বরদী পৌর এলাকার আলহাজ মোড়ে আলহাজ টেক্সটাইল মিলের অভ্যন্তরে একটি শতবর্ষী কড়ই গাছসহ বিভিন্ন গাছপালায় কয়েক বছর আগে ঝাঁক বেধে শামুকখোল, পানকৌড়ি, সারস অতিথি পাখি এসে বাসা বাঁধে।
দিনভর এরা পাশ্ববর্তী ডাল ও আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মাঠ, ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রের মাঠ আশেপাশে ডোবাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে খাবার সংগ্রহ করে খায়-আর আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলের গাছপালায় নিরাপদে আশ্রয় নেয়।
এসব পাখিগুলো মিলের অভ্যন্তরে আমগাছ, নারিকেল গাছ, কড়ই গাছ এমনকি শহরের বিভিন্ন গাছে ও মিলের বাইরের আশেপাশে বিভিন্ন গাছ পালায় অতিরিক্ত পাখির বাচ্চা প্রজনন বেশি হওয়ায় মিলের অভ্যন্তরে গাছপালায় জায়গা না হওয়ায় এরা বাইরে বাসা বাঁধছে।
এভাবে বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে পাখিগুলো আর ফিরে যায়নি তাদের আপন ঠিকানায়। এখানে কেউ তাদের বিরক্ত করে না বরং দল বেঁধে চলার দৃশ্য এক মুহূর্তের জন্য থামিয়ে দেয় পথচারীদের। প্রথমে কয়েকশ পাখি এসে বাসা বাঁধলেও বর্তমানে তা কয়েক হাজার ছাড়িয়েছে।
আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলের (অর্থাৎ সুতার মিল) একজন শ্রমিক আব্দুর হালিম জানান, আজ থেকে ১০-১৫ বছর ধরে আমাদের মিলের অভ্যন্তরে বিভিন্ন গাছপালায় শীতের সময় এই পাখিগুলা আসে। বর্তমানে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার পাখি এই মিলের অভ্যন্তরে অবস্থান করছে। আমাদের মিলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সকল শ্রমিককে বলেছে পাখিগুলা দেখে রাখার জন্য, কিন্তু আমাদের মিলের ভিতরে প্রত্যেকটি শ্রমিকের চলাচলের জন্য খুবই অনুপযোগী হয়ে গেছে পাখিগুলোর জন্য।
বর্তমানে আমাদের মিলের ভিতরে সব সময় ছাতা নিয়ে চলাচল করতে হয়। কারণ পাখিগুলোর পায়খানা আমাদের জামাকাপড় নোংরা করে দেয়। নিরাপদ এই অভয়ারণ্যে প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় কয়েক হাজার বাচ্চা জন্ম দিয়েছে পাখিগুলো।
যদিও মিলের অভ্যন্তরে বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার নেই। তারপরও পাখিগুলোকে যেন কেউ বিরক্ত না করে কিংবা কেউ যেন তাদের শিকার না করে, সে ব্যাপারে মিল কর্তৃপক্ষের কড়া নির্দেশনা রয়েছে।
আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলের কারখানা কর্তৃপক্ষ, পাখির নিরাপদ বসবাসের জন্য মিল এলাকাকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছে। ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে এলাকাটি।
স্থানীয়রা যেমন এসব পাখির কলকাকলি ও দলবেঁধে উড়ার দৃশ্যে মুগ্ধ-তেমনই পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষায় এদের নিরাপত্তা জরুরি বলে মনে করেন তারা।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাশ বলেন, এসব পাখিকে যেন কেউ বিরক্ত বা শিকার না করে, সে বিষয়ে আলহাজ টেক্সটাইল মিল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।
এদের বসবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই ঈশ্বরদী পৌরসভার পক্ষ থেকে আলহাজ্ব মোড়ে একটি পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করা হবে।
এআর







































