মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে ট্রাইব্যুনালের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতা চোখে পড়ে।
সকালে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়— সুপ্রিম কোর্টের চার দিকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কড়া নিরাপত্তায় মোড়ানো হয়েছে। মাজার গেটের সামনে সেনাবাহিনীকে অবস্থান নিতে দেখা যায়। আর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে ও ভেতরে পুলিশ র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
নিরাপত্তা জোরদারে বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
জুলাইয়ের তথাকথিত গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারাধীন ছিলেন তিনজন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
আজই ঘোষণা করা হবে মামলার বহুল আলোচিত রায়। এ রায় বিশ্বব্যাপী লাইভ সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বড় পর্দায় বিচারপ্রক্রিয়া দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
ট্রাইব্যুনাল–সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই রায় শুধু বাংলাদেশের নয়—বিশ্বের বহু দেশের নজর কাড়বে। কারণ মানবতাবিরোধী অপরাধে কোনো সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিচারাধীন থাকা ঘটনাটি বিরল।
গত ১৩ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন নির্ধারণ করেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদসহ অন্যরা।
২৩ অক্টোবর প্রসিকিউশনের সমাপনী বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধে উচ্চপর্যায়ের নেতাদের বিচারের নজির তুলে ধরেন। তিনি শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এরপর স্টেট ডিফেন্সের কয়েকটি যুক্তির জবাব দেন। পরে রাষ্ট্রনিযুক্ত ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন পাল্টা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষী হিসেবে বিস্তারিত জবানবন্দি দেন। তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন চূড়ান্ত যুক্তিতে আলাদা করে কোনো দাবি তোলেনি। মামুনের আইনজীবী তার সম্পূর্ণ খালাস প্রার্থনা করেছেন। রায়েই নির্ধারিত হবে সাবেক পুলিশের এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ভাগ্য।
এম







































