• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

পে-স্কেলের অনিশ্চয়তা রয়েই গেল, জানুন সর্বশেষ তথ্য 


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম
পে-স্কেলের অনিশ্চয়তা রয়েই গেল, জানুন সর্বশেষ তথ্য 

ফাইল ছবি

নতুন নবম জাতীয় বেতন কাঠামো নিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের অপেক্ষা এখন আরও গভীর অনিশ্চয়তায় ঢুকেছে। চূড়ান্ত গেজেট জারির দাবিতে বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট ঘোষণা আসেনি। ফলে বেতন কাঠামো কার্যকর হবে কি না, হলে কখন-এই প্রশ্নেই ঘুরপাক খাচ্ছেন লাখো সরকারি কর্মচারী।

সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নবম পে-স্কেলের গেজেট জারির আল্টিমেটাম দিয়েছিল। সেই সময়সীমা শেষ হলেও দিন শেষে কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা যায়নি। বরং অর্থনৈতিক চাপ, বাজেট সক্ষমতা ও ভবিষ্যৎ ব্যয় ব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকারের ভেতরের দ্বিধাই আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

সরকারি সূত্র ও অর্থনীতিবিদদের ভাষ্য, নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়ন হলে সরকারি বেতন খাতে ব্যয় বড় আকারে বাড়বে। এতে উন্নয়ন ব্যয়, ভর্তুকি ও সামগ্রিক বাজেট কাঠামোতে নতুন করে সমন্বয় প্রয়োজন হবে। এই বাস্তবতা থেকেই পুরো পে–স্কেল একসঙ্গে কার্যকর না করে ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের বিকল্প নিয়েও আলোচনা চলছে।

এরই মধ্যে কর্মচারী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত কাঠামোর কিছু আভাস সামনে এসেছে। গ্রেডভিত্তিক বেতন অনুপাত, ন্যূনতম ও সর্বোচ্চ বেতন এবং পেনশন-ভাতা কাঠামো নিয়ে দাবি থাকলেও গেজেট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো সংখ্যাই নিশ্চিত নয়।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুটি সম্ভাবনার কথাই বেশি শোনা যাচ্ছে। সরকার যদি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে গেজেট জারি করে, তাহলে নবম পে-স্কেল ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাজেটে বড় ধরনের সমন্বয় ও কঠিন আর্থিক ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। আরেকটি সম্ভাবনা হলো-নির্বাচন ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় গেজেট বা কার্যকরতার সিদ্ধান্ত পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া। তখন কার্যকর হওয়ার সময় আরও পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।

আল্টিমেটামের সময় পেরিয়ে গেলেও কর্মচারী সংগঠনগুলোর অবস্থান এখন কিছুটা সতর্ক। অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে দেওয়া চিঠির জবাবের অপেক্ষায় রয়েছেন আন্দোলনকারী নেতারা। রোববার সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহ আহমেদের দপ্তরে সাক্ষাতের আবেদন জমা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সময় নির্ধারিত হয়নি।

এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সচিবালয়ে আন্দোলন দমন ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন ঘিরে সরকারের অবস্থান কর্মচারী নেতাদের মধ্যে নতুন করে শঙ্কা তৈরি করেছে। একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আপাতত বড় ধরনের কর্মসূচিতে না গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের দিকেই ঝুঁকছেন তারা।

বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জিয়াউল হক বলেন, পে-স্কেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান চান তারা। সব দাবি রাজপথে আদায় হয় না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। একই সুরে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব বেল্লাল হোসেন জানান, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পরই পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। এ জন্য ১৮ ডিসেম্বর দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে।

সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিজীবী বিধিমালা ও শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে কোনো কর্মসূচি দেওয়া হবে না। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব ও সীমাবদ্ধতার বিষয়টি মাথায় রেখেই তারা সিদ্ধান্ত নিতে চান।

প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ দিতে একটি পে কমিশন গঠন করে। কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও কর্মচারীদের দাবি ছিল, ডিসেম্বরের মধ্যেই গেজেট প্রকাশ করতে হবে। নির্ধারিত সময় পার হলেও সেই গেজেটের কোনো আভাস না মেলায় এখন উদ্বেগ, অপেক্ষা আর অনিশ্চয়তার দোলাচলেই দিন কাটছে সরকারি চাকরিজীবীদের।

এসএইচ 

Wordbridge School
Link copied!