• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তেঁতুলিয়ায় বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৮, ২০২১, ১২:৫৬ পিএম
তেঁতুলিয়ায় বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড

প্রতিনিধি

ঢাকা : মাঘের শীতে বাঘের মতো কাঁপছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের হিমাঞ্চলের প্রান্তিক জনপদের মানুষ। ঘন কুয়াশার সাথে হিমেল বাতাসে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। 

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল নয়টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।

তবে আবহাওয়া অফিসের দেয়া নথিপত্রে রেকর্ড তাপমাত্রা বাড়লেও এ অঞ্চলের মানুষের অনুভূতি হয়েছে সবচেয়ে শীত হয়েছে বৃহস্পতিবার রাত-ভোর। ভোরের তুলনায় রাতের তীব্র শীতের অনুভূতি মাত্রা যেন ছিল ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। গত ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারিতে দেশের ইতিহাসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তখন থেকেই উত্তরের এ প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড় হিমাঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। 

বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়েছে হিমেল বাতাস। রাত বাড়ার সাথে বেড়েছে শীতের পারদ। কনকনে হাঁড়কাপানো শীত। ঘরের মেঝে, ফ্লোর, বিছানা, দরজা স্পর্শ করলে যেন হাত-পা অবশ হওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছিল এরকমই জানিয়েছেন এলাকার শীতার্ত মানুষগুলো। রাতভর ঘন কুয়াশার সাথে ঝরেছে শিশির বৃষ্টি। টিনের চালে টপটপ শব্দে শোনা যায় শিশির বৃষ্টির আওয়াজ। ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন দেখা যাচ্ছে রাস্তা-ঘাটসহ চারপাশ। সকালে তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায় শীত নিবারণে নানান চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে ছিন্নমূলসহ নিম্নবিত্ত ও অসহায় মানুষগুলো। 

ঘরের উঠোনে ও কেউ চুলায় খড়কুটো জ্বালিয়ে চালাচ্ছে শীত নিবারণের চেষ্টা। হাটবাজারে বিভিন্ন জায়গায় খড়কুটো ও টায়ার, টিউব আর কাগজে আগুন লাগিয়ে শীত নিবারণে চেষ্টা করতে দেখা যায়। কেউ কেউ সাধ্যের মধ্যে হাটবাজারগুলোতে গিয়ে ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে কিনে নিচ্ছে অল্প দামের গরম কাপড়। ফুটপাতের দোকানীরাও ১০০/৫০/২০ টাকার দর হেকে ক্রেতা টানার চেষ্টা করছে তারাও। এতে করে কাপড় কিনতে ভিড় জমতে দেখা যায় এসব নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে।

ডিসেম্বর হতে চলছে টানা লাগামহীন শীতের তান্ডব। এতে করে শীতের সাথে যেন পাঞ্জা লড়ছে উত্তরের এই সীমান্তবর্তী জনপদের মানুষ। শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শীতজনিত রোগব্যাধি। সর্দি, জ্বর, কাঁশিসহ বেশ কিছু রোগীর ভিড় দেখা যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই রোগী দেখতে দেখা যায় চিকিৎসকদের। চিকিৎসার সাথে স্বাস্থ্যবিধি মানতে রোগীদের পরামর্শ দিতে দেখা হাসপাতালের ফিজিও থেরাপির চিকিৎসক ডা.এসএম শামীমকে। 

শীতে বাঘের কাঁপন থাকলেও জীবিকার তাগিদে ঘরে বসে নেই নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। হাঁড়কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করেই   কাজে বের হচ্ছেন তারা। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন সকালেও হাঁড়কাপানো শীতের মধ্যেই কাজ করতে দেখা গেছে বিভিন্ন পেশার মানুষগুলোকে। তারা কেউ যাচ্ছেন নদী মহানন্দায় পাথর তুলতে, কেউ চা বাগানে, কেউ দিনমজুর হয়ে গেরস্থের ক্ষেতে। আর কর্মজীবি নারীরাও ছুটছেন পাথরের সাইটে কাজ করতে। পরিবারের কথা চিন্তা করেই জীবিকার তাগিদে শীতের সাথে লড়াই করতে হচ্ছে প্রতিদিন। 

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ্ জানান, সোমবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন বুধবার সকাল ৯টায় রেকর্ড হয় ১১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও তার আগের দিন মঙ্গলবার রেকর্ড হয়েছিল ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!