• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অনুমোদন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জানুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০৯:২৭ পিএম
ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অনুমোদন

ঢাকা : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলমান সংঘাত বন্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েল। 

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এই চুক্তি অনুমোদন করেছে।

চুক্তিটি এখন চূড়ান্ত স্বাক্ষরের জন্য মন্ত্রিসভায় যাবে। খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হওয়ার পর মন্ত্রিসভার বৈঠক শুরু হয়। 

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সব রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও মানবিক দিক পর্যবেক্ষণের পর এবং প্রস্তাবিত চুক্তি যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনকে সমর্থন করে’ এটা বোঝার পর চুক্তিটি গ্রহণ করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পরিষদ সরকারকে প্রস্তাবিত রূপরেখা অনুমোদন করার সুপারিশও করেছে। চুক্তিটি এখন আলোচনা ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণার জন্য পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভায় যাবে।

সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ নিরাপত্তা পরিষদে এই চুক্তি অনুমোদনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি আশা করছেন, দেশটির সরকার শিগগিরই তা করবে।

হারজগ বলেন, নাগরিকদের প্রতি একটি জাতির মৌলিক অঙ্গীকার সমুন্নত রাখার পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

গার্ডিয়ান জানায়, চুক্তির প্রথম ধাপে হামাস শিশু, নারী সেনা ও ৫০ বছরের বেশি বয়সী ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে। বিনিময়ে প্রত্যেক ইসরায়েলি নারী সেনার জন্য ৫০ এবং অন্যান্য নারী জিম্মির জন্য ৩০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।

এর আগে অপ্রত্যাশিত বিলম্বের পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে শেষ মুহূর্তের চুক্তিটি ভেস্তে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দেয়। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট সরকারের কট্টর ডানপন্থী সদস্যরাও সংঘাত অবসানে ভেস্তে দেওয়ার হুমকি দেন।

ইসরায়েল জানিয়েছে, আইডিএফের কাছে হস্তান্তর করার পরই জিম্মিদের নাম জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে যাদের নাম প্রকাশ করা হবে, তাদের নামের একটি তালিকা শুক্রবার ভোর থেকেই ইসরায়েলের প্রধান সংবাদমাধ্যমগুলোতে ঘুরছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ফরাসি-ইসরায়েলি নাগরিক ওফার কালদেরন এবং ওহাদ ইয়াহালোমি জিম্মিদের প্রথম দলে রয়েছেন।

রোববার (১৮ জানুয়ারি) তিনজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে, তারপরে সপ্তম দিনে আরও চারজন এবং আবার যুদ্ধবিরতির প্রতি সপ্তাহের শেষে মুক্তি দেওয়া হবে।

ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজ জানিয়েছে, মন্ত্রিসভা চুক্তিটি অনুমোদন করার পরপরই বিচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ফিলিস্তিনি বন্দিদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।

গার্ডিয়ানের হাতে আসা চুক্তির একটি অনুলিপি অনুসারে, ইসরায়েলি কারাগারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করা ১১০ ফিলিস্তিনির বিনিময়ে নয়জন অসুস্থ ও আহত ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ৩৩ জন জিম্মির তালিকায় থাকা ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের ১:৩ অনুপাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগকারী বন্দীদের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হবে, এবং অন্যান্য সাজার জন্য ১:২৭ অনুপাতে।

এই চুক্তির ফলে প্রথম ধাপে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা গাজা উপত্যকার চারপাশে অবাধে চলাচলের অনুমতি পাবে, যা ইসরায়েল একটি সামরিক করিডোর দিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। আহতদের বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নেওয়া হবে এবং গাজার বিধ্বংসী মানবিক সংকট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রয়োজনীয় ৫০০ ট্রাকের চেয়ে বাড়িয়ে প্রতিদিন ৬০০ ট্রাকে উন্নীত করা হবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে, অবশিষ্ট জীবিত জিম্মিদের ফেরত পাঠানো হবে এবং একই অনুপাতের ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল এই অঞ্চল থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করবে। 

তৃতীয় ধাপে নিহত জিম্মি ও হামাস সদস্যদের লাশ বিনিময় এবং গাজার পুনর্গঠন পরিকল্পনা চালু করা হবে। উপত্যকার ভবিষ্যত পরিচালনা ব্যবস্থা অস্পষ্ট রয়ে গেছে। বাইডেন প্রশাসন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ অংশ আধা-স্বায়ত্তশাসিত পশ্চিম তীরভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন, যা ২০০৭ সালে একটি সংক্ষিপ্ত গৃহযুদ্ধে হামাসের কাছে গাজার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল। তবে ইসরায়েল বারবার এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। চুক্তির যৌক্তিক সমন্বয় নিয়ে আলোচনা করতে ইসরায়েলি আলোচকরা শুক্রবার সন্ধ্যায় কায়রোতে পৌঁছেছেন।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!