ঢাকা: পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নাড়ির টানে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। তবে ঈদ যাত্রায় রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে নেই চিরচেনা সেই ভিড়। আজকেও দূর পাল্লার বাসে ডেকে ডেকে যাত্রী নিতে দেখা যায়। তবে আগামী ২৮ তারিখ থেকে ঈদ যাত্রার চাপ পড়বে বলে মনে করছেন বাসের টিকেট বিক্রেতা।
বুধবার (২৬ মার্চ) গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি দূরপাল্লার বাস কিছু সিট খালি নিয়েই গন্তব্যের উদ্দেশ্য রওনা দিচ্ছে। তবে অন্যান্য বছরের মত অতিরিক্ত ভাড়া নিতে দেখা যায়নি। সরকারি নির্ধারিত ভাড়াই গন্তব্যে যেতে পারছেন যাত্রীরা।
ঈগল পরিবহনের গাবতলী কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা শরীফ আহমেদ বলেন, এখনও ঈদের যাত্রীর চাপ পড়েনি। খুলনার জন্য বিকালে একটি গাড়ি রেডি করেছিলাম। মাত্র ১০ জন যাত্রী পেয়েছি। যাত্রীর অভাবে পরে গাড়ির যাত্রা বন্ধ করা হয়। যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে টিকেটের টাকা ফেরত দিতে হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রাত সাড়ে দশটার দিকে একটি এবং রাত বারোটার দিকে আরেকটি বাস খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। আজ আমরা নিয়মিত যাত্রী পাচ্ছি। আগামী ২৮ তারিখ থেকে ঈদের যাত্রীর চাপ পড়বে।
খুলনাগামী যাত্রী আনোয়ার হোসেন জানান, আজ অনেকগুলো বাস আছে, ভাড়াও নিয়মিত ভাড়া। যাত্রীর চাপ তেমন দেখিনি। সাড়ে দশটার দিকে ছেড়ে যাবে ঈগল পরিবহন একটি বাস। হয়ত কাল রাত থেকে একটু যাত্রা চাপ পড়তে পারে।
পিয়াংকা দাস নামে একজন নারীর গাইবান্ধা যাওয়ার জন্য টার্মিনালে এসেছেন। তার সঙ্গে দুই সন্তান ও শ্বশুর শাশুড়ি রয়েছেন। তারা আগে টিকিট কাটেননি। এসেই টিকিট কেটেছেন শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের। সহজে টিকেট পেয়ে খুব খুশি।
তিনি বলেন, বাসা থেকে রওনা দেওয়ার সময় ভেবেছিলাম অনেক যাত্রী থাকবে, অনেক চাপ হবে। কিন্তু এখানে এসে তো অবাক হয়ে গেলাম। যাত্রীর কোনো চাপ নেই, কাউন্টারে কাউন্টারে ডাকাডাকি করছে। যাত্রীর চাপ কম থাকার কারণে অনেকেই ডাকাডাকি করছেন।
এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে গাবতলী আন্ত:জেলা বাস টার্মিনালের জন্য ৪০ আসন বিশিষ্ট বাসের ভাড়া নির্ধারণ করেছে বিআরটিএ। সেখানে দেখা যায়, গাবতলী থেকে বরিশাল ৭১২ টাকা, গাবতলী থেকে পটুয়াখালী ৮১৯ টাকা, গাবতলী থেকে যশোর ৬৭৯ টাকা, গাবতলী থেকে বাগেরহাট ৮৯৩ টাকা, গাবতলী থেকে কালীগঞ্জ ৯৯৩ টাকা, গাবতলী থেকে সাতক্ষীরা ৯২০টাকা, গাবতলী থেকে বেনাপোল ৭৩০ টাকা, গাবতলী থেকে কুষ্টিয়া ৬৭৬ টাকা ও গাবতলী থেকে মেহেরপুর ৭২৮ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোহাগ পরিবহনের গাবতলী ব্রাঞ্চের বুকিং অ্যাটেনডেন্ট মো. মেহেদি হাসান বলেন, গাবতলীর বাস টার্মিনাল হতে বিকাল থেকে পাঁচটি বাস পদ্মা সেতু ও আরিচা রোডে খুলনা ও বেনাপোলে যাবে। গাড়িগুলোর সব আসনই বুকিং হয়ে গেছে। সোহাগ ডট কমের মাধ্যমে অনলাইন টিকেট কেটে আসেন। ৪০টির মধ্যে প্রায় ২৫টি আসনের যাত্রী অনলাইনে টিকিট কেটে আসেন। ৩০ তারিখ পর্যন্ত সিডিউলের সব গাড়ির সিট বুকিং হয়ে গেছে।
তিনি জানান, সোহাগ পরিবহনের বাসগুলো গাবতলী থেকে পদ্মা সেতু, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাগুরা, যশোর, খুলনা, বেনাপোল রোডে চলাচল করে। নন এসি চেয়ার কোর্স ঢাকা থেকে বেনাপোল ৭৫০ টাকা, খুলনা ৬৫০ টাকা (পদ্মা সেতু), যশোর ৬৫০ টাকা, গোপালগঞ্জ ৫০০ টাকা, মাগুরা ৫৮০টাকা আবারও নিয়ে থাকি। প্রতিটি রুটেই সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও কম নিয়ে থাকি।
রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে সন্ধ্যা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত যাত্রীদের তেমন চাপ দেখা যায়নি। প্রতিটি কাউন্টার থেকে যাত্রীদের ডাকা হচ্ছে। যেসব যাত্রীরা আসছেন, তারাও বিভিন্ন বাস কাউন্টার ঘুরে ঘুরে দেখেশুনে যাচ্ছেন।
এআর







































