ছবি: প্রতীকী
ঢাকা: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ৫৩ জন নাগরিক। তারা বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশমালা প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে একদল মানুষের ঐকান্তিক চেষ্টার ফলশ্রুতিতে এই জুলাই সনদ আলোচিত হয়েছে। তবে সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ প্রকাশ হওয়ার পর নতুনভাবে অনৈক্যের সুর বেজে উঠেছে।
নাগরিকরা মনে করেন, জাতীয় ঐক্যকে প্রাধান্য দিয়ে সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানো পর্যন্ত ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম চলমান থাকা জরুরি। অন্যান্য দেশের সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যেমন দেখা যায়, তারা বছরব্যাপী আলাপচারিতা চালিয়ে থাকে, তেমনই বাংলাদেশেও বিষয়টি বিবেচনা করা সমীচীন হবে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব থেকে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (আপত্তি) বাদ দেওয়ার বিষয়ে অনৈক্য স্পষ্ট হয়েছে। নাগরিকরা বলেন, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সব বিষয়ে সব দলের একমত হওয়া সম্ভব নয়। তাই আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পর সংসদে এবং সংসদের বাইরে এসব আপত্তি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন।
তাদের প্রস্তাব, কমিশন তাদের ২৭০ দিনের সময়সীমা (প্রায় নয় মাস) বাড়িয়ে দুই বছর বা যৌক্তিক সময় নির্ধারণ করতে পারে। নাগরিকরা আরও বলেন, সংবিধান কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও সম্মিলনের প্রতীক। সংবিধান ও সংসদের কার্যক্রম অটুট রাখতে ঐক্যের বিকল্প নেই। নোট অব ডিসেন্ট বাদ দেয়ার ফলে ঐক্য বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
নাগরিকরা সতর্ক করেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তি না মীমাংসা করে তাড়াহুড়ো করে সংবিধানের সংস্কার আনা হলে অনৈক্য দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং দেশের রাজনীতিতে গভীর সংকট দেখা দিতে পারে। এছাড়া জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে ঐক্য না থাকলে পলাতক ফ্যাসিস্ট ও তার সহযোগী শক্তির জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। ফলে সনদ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে নির্ধারিত গণভোট বা জাতীয় নির্বাচনও ব্যর্থ হতে পারে।
নাগরিকরা কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছেন, লেখক, চিন্তক, অ্যাক্টিভিস্ট ও সুশীল সমাজসহ দেশের অন্যান্য অংশীজনকে সংযুক্ত করা যেতে পারে। অরাজনৈতিক অংশগ্রহণ রাজনৈতিক দলের মধ্যকার বিভেদ কমিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তারা মনে করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সব দল ও মতের ঐক্যের ওপর।
বিবৃতিতে সম্মতি জানিয়েছেন কাজল শাহনেওয়াজ, জাহেদ উর রহমান, আর রাজী, গোলাম সারওয়ার, আমিরুল ইসলাম, মোস্তফা নাজমুল মনসুর তমাল, আমিনুল ইসলাম, আবুল ফজল, মোস্তফা কামাল পলাশ, রাখাল রাহা, জি এইচ হাবীব, নাহিদ হাসান, আবুল কালাম আল আজাদ, আহমেদ স্বপন মাহমুদ, সায়েমা খাতুন, গাজী তানজিয়া, রেজাউর রহমান লেনিন, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, সাঈদ বারী, মাহাবুবুর রহমান, মৃদুল মাহবুব, অমল আকাশ, চিনু কবির, জামাল ভাস্কর, আরিফুল ইসলাম সাব্বির, অ্যাডভোকেট মমিনুর রহমান, ইমামুল বাকের এপোলো, অনি আতিকুর রহমান, পলিয়ার ওয়াহিদ, রাসেল রায়হান, সানাউল্লাহ সাগর, এনামুল হক পলাশ, শাকিলা খাতুন, আব্দুল মজিদ অন্তর, তানভীর আহমেদ, সোয়েব মাহমুদ, মেশকাত চৌধুরী, হারুন-অর-রশিদ, তছলিমা শাহনুর, মাসুম মুনওয়ার, আরিফ রহমান, জব্বার আল নাঈম, রাফসান আহমেদ, আশরাফুল ইসলাম, সাজ্জাদ বিপ্লব, পিন্টু রহমান, রকিব লিখন, শাহনেওয়াজ আরেফিন, শাদমান শাহিদ, আফসানা জাকিয়া, শামীম রেজা ও ফুয়াদ সাকী।
এসএইচ







































