• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ১১:২৪ পিএম
ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর দেশজুড়ে তৈরি হওয়া আতঙ্ক দূর করতে এবং করণীয় নির্ধারণে সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একটি জরুরি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দেশের শীর্ষস্থানীয় ভূতত্ত্ববিদ, প্রকৌশলী, আবহাওয়াবিদ ও দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

বৈঠকের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এমন পরিস্থিতিতে হাত গুটিয়ে থাকলে চলবে না, আবার অযৌক্তিক সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা যাবে না। কী করা প্রয়োজন—বিশেষজ্ঞদের লিখিত পরামর্শ দ্রুত চাই।

তিনি জানান, ভূমিকম্প মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক বিশেষজ্ঞ কমিটি ও টাস্কফোর্স গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। লিখিত সুপারিশ পেলেই সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন শুরু হবে।

বিশেষজ্ঞরা বৈঠকে জানান, ভূমিকম্প নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো গুজব মানুষের আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।

তারা পরিষ্কারভাবে বলেন— ভূমিকম্পের নির্দিষ্ট সময়, দিন বা ঘণ্টা আগে থেকে জানানোর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

তাদের মতে, পূর্ববর্তী রেকর্ড বিশ্লেষণ করে ঝুঁকি-আনুমানিক সময়সীমা নির্ধারণ করা যায়, কিন্তু সুনির্দিষ্ট পূর্বাভাস দেওয়া অসম্ভব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশ তুলনামূলকভাবে স্বল্প ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হলেও, আশপাশের ভূ-চ্যুতি রেখাগুলো বিশ্লেষণ করে ঝুঁকির মাত্রা পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজন।

অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আখতার বলেন, প্রচলিত সচেতনতামূলক কার্যক্রমে তরুণদের যুক্ত করলে প্রস্তুতির পরিধি আরও বাড়বে। চার স্তরে—ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান ও সমাজ—করণীয় তালিকা তৈরি করে প্রচারের পরামর্শ দেন তিনি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহাঙ্গীর আলম মনে করেন, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত মহড়া ও সচেতনতা কর্মসূচি চালু করলে আতঙ্ক কমবে এবং প্রস্তুতি বাড়বে।

এমআইএসটির অধ্যাপক জয়নুল আবেদীন বলেন, আতঙ্ক নয়—বাস্তবসম্মত করণীয় মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। কোন এলাকায় খোলা স্থান আছে, কোথায় আশ্রয় নেওয়া যাবে—এসব তথ্য আগে থেকেই জানানো জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, হাসপাতালগুলোর জরুরি সক্ষমতা, ভবনগুলোর কাঠামোগত নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সরবরাহ ব্যবস্থার স্থায়িত্ব—এসব বিষয় দ্রুত মূল্যায়ন করতে হবে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. খালেকুজ্জামান জানান, ভূমিকম্পের পর দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় দেখা দেওয়া ফাটলের ছবি সংগ্রহ ও মূল্যায়নের জন্য একটি বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দুই শতাধিক ভবন পর্যালোচনা করা হয়েছে, যেখানে বেশিরভাগ ফাটলই দেখা গেছে পার্টিশন দেওয়ালে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিদেশে থাকা বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংযোগের জন্য ‘শুভেচ্ছা’ অ্যাপকে আরও কার্যকর করা হবে।
অ্যাপটিতে নতুন ফিচার যোগ করারও প্রস্তাব দেন তিনি।

বৈঠকের শেষে সিদ্ধান্ত হয়—বিশেষজ্ঞদের লিখিত সুপারিশ দ্রুত গ্রহণ করে ভূমিকম্প-সংক্রান্ত টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের সমন্বয়ে জরুরি করণীয় চূড়ান্ত করা হবে।

এম

Wordbridge School
Link copied!