• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

মেসির ১০ অজানা তথ্য ও ১০ রেকর্ড 


ক্রীড়া ডেস্ক জুন ২৪, ২০২২, ০৫:২১ পিএম
মেসির ১০ অজানা তথ্য ও ১০ রেকর্ড 

ঢাকা: শুক্রবার (২৪-০৬-২২) ৩৫তম জন্মদিন পূর্ণ করলেন আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সের ৩০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত রোজারিও শহর। এই শহরেই ১৯৮৭ সালের আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন লিওনেল আন্দ্রেস মেসি।

উচ্চতা তার মাত্র ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি; কিন্তু কী অসম্ভব গতি তার, ক্ষিপ্রতা চিতার মত। কয়েকদিন আগে লাতিন আমেরিকার একটি সংবাদপত্র লিখেছিল, ফুটবল পায়ে তার মধ্যাকর্ষণ কেন্দ্র এতটাই কম যে, তাকে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের ধারণ করা কিংবা থামিয়ে দেয়া এক কথায় অসম্ভব। এই ফুটবল জাদুকরের জন্মদিনে জেনে নিন তাকে নিয়ে ১০ অজানা তথ্য ও ১০ রেকর্ড।

অজানা তথ্য
১. মেসিকে তার ক্ষিপ্রতা, তৎপরতা এবং গতির কারণে ডাকা হয় ‘দ্য ফ্লি’ নামে।

২. বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ফুটবলারদের একজন মেসি।

৩. কার্লেস রেক্সাস, বার্সেলোনার প্রথম স্পোর্টিং ডিরেক্টর। তিনি যখন আর্জেন্টিনায় ছোট্ট মেসির ফুটবল স্কিল দেখেন, খুব অভিভূত হয়ে যান এবং তাৎক্ষনিক তার বাবার সঙ্গে মেসির ব্যাপারে চুক্তি সাক্ষর করেন। সেখানো কোনো কাগজ না থাকায় ন্যাপকিন বা টিস্যু পেপারে চুক্তির স্বাক্ষর করেন।

৪. ২০০৩ সালে এস্পানিওলের বিপক্ষে প্রথম বার্সেলোনার হয়ে লা লিগায় অভিষিক্ত হন মেসি। ওই সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর। বার্সার ইতিহাসে তৃতীয় সর্বকণিষ্ট ফুটবলার হিসেবে অভিষেক হয় তার। শুধু তাই নয়, ক্লাবের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার রেকর্ডও গড়েন তিনি।

৫. মেসির রয়েছে দুটি পাসপোর্ট। একটি আর্জেন্টিনার নাগরিক হিসেবে। অন্যটি স্পেনের নাগরিক হিসেবে। ২০০৫ সালে স্পেনের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

৬. ২০০৮ সালে বার্সার আরেক আইকনিক ফুটবলার, ব্রাজিলিয়ান রোনালদিনহোর কাছ থেকে ১০ নম্বর জার্সি গ্রহণ করেন।

৭. ২০০৯ সালে তিনি প্রথম ফিফা প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। একই বছর জয় করেন ব্যালন ডি’অরও। ২০১৯ সালে জয় করেন ফিফা বেস্ট মেন্স প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার। ৬ বার জয় করেন ইউরোপিয়ান গোলেন সু। ২০১৪ বিশ্বকাপে জেতেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বল।

৮. দ্য রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন মেসিকে স্পেন জাতীয় দলের হয়ে খেলার জন্য অনুরোধ করেছিল। যেহেতু তাকে স্পেনের নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু মেসি নিজের দেশ আর্জেন্টিনাকেই বেছে নেন জাতীয় দলে খেলার জন্য। জাতীয় দলের হয়ে ২০২১ সালে জয় করেন কোপা আমেরিকা ট্রফি। ২০১৪ বিশ্বকাপ, ২০১৫ এবং ২০১৬ কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠলেও শিরোপা জিততে পারেননি।

৯. মেসি নিজের নামে প্রতিষ্ঠা করেন ‘লিও মেসি ফাউন্ডেশন’। এই ফাউন্ডেশনের উদ্দেশ্য হচ্ছে অবহেলিত এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা এবং চিকিৎসা সুনিশ্চিত করা।

১০. বার্সেলোনায় প্রায় ২১ বছর কাটিয়েছেন মেসি। ক্লাবটির জার্সিতে খেলেছেন ৫২০ ম্যাচ। এরপর ২০২১-২২ মৌসুমে যোগ দেন প্যারিসের ক্লাব পিএসজিতে।

রেকর্ডসমূহ

১. রেকর্ড ব্যালন ডি’অর
লিওনেল মেসি তার ক্যারিয়ারে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন ৭ বার, তাতে ফলে গেছে কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফ বহু আগে করা ভবিষ্যদ্বাণীটাও। ব্যালন ডি’অর জেতার দিক থেকে মেসির চেয়ে এগিয়ে আর কেউ নেই। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দখলে বর্ষসেরার এই পুরস্কার আছে দুটো কম। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ব্যালন ডি’অর জেতার ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট কোনো দেশের সব খেলোয়াড় মিলিয়েও তাকে পেছনে ফেলতে পারেননি।

২. সবচেয়ে বেশি ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শ্যু
ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি বর্ষসেরা হওয়ার কীর্তি মেসি, এক মৌসুমে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডটাও তার। ক্যারিয়ারে ৬ বার তিনি জিতেছেন এই ট্রফি। ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯, এই তিন বছর টানা তিনটি গোল্ডেন শ্যু জিতেছিলেন তিনি, নিজের করে নিয়েছিলেন রেকর্ডটা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোর গোল্ডেন শ্যু সংখ্যা ৪টি। 

৩. ১১০০ গোলে সরাসরি অবদান
এস্তোনিয়ার বিপক্ষে ৫ গোলের কীর্তি গড়ে ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ১১০০ গোলে অবদান রাখেন মেসি। এই কীর্তি তিনি গড়েছেন মাত্র ৯৭৪ ম্যাচে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কে, সেটা আপনি জানেন নিশ্চয়ই। ১০৪৫ গোল নিয়ে মেসির পরেই আছেন রোনালদো। তার এই কীর্তি এসেছে ১১২১টি ম্যাচ খেলে।

৪. এক লিগ মৌসুমে গোলের ৫০!
ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের ইতিহাসে কোনো এক মৌসুমে এক খেলোয়াড়ের ৫০ গোলের রেকর্ড হয়েছে এক বারই। ২০১১-১২ লা লিগা মৌসুমে মেসি এক মৌসুমেই করেছিলেন ৫০ গোল। দুই মৌসুম পর রোনালদো ৪৮ গোল করে কাছাকাছি গিয়েছিলেন, তবে রেকর্ডটা ভাঙা সম্ভব হয়নি তার।

৫. এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ গোল
শেষ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মেসি খেলে যাচ্ছেন সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে। তবে ২০১২ সালটাকে মেসির জন্য আলাদা করে রাখতেই হবে। সে বছর মেসির গোলের বাঁধ যেন ভেঙেই গিয়েছিল। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে তিনি করেছিলেন ৯১ গোল, ক্লাবের প্রীতি ম্যাচ হিসেবে আনলে সংখ্যাটা গিয়ে ঠেকে ৯৬তে। এক পঞ্জিকাবর্ষে এর চেয়ে বেশি গোলের কীর্তি নেই আর কোনো ফুটবলারের।

৬. এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোল
বার্সেলোনার জার্সি গায়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তিনি করেছেন ৬৭২ গোল। এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় তার ত্রিসীমানাতেও কেউ নেই।

৭. সবচেয়ে বেশি লা লিগা হ্যাটট্রিক
অনেক খেলোয়াড়ের জন্য একাধিক হ্যাটট্রিক করাই হয়ে থাকে তার ক্যারিয়ারের হাইলাইটস। এদিকে মেসির হয়তো লা লিগায় করা হ্যাটট্রিকের অর্ধেকের কথাই মনে নেই! লা লিগায় তিনি রেকর্ড ৩৬টি হ্যাটট্রিক করেছেন। পরিস্থিতি তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলে তো অর্ধেক হ্যাটট্রিক তার ভুলেই যাওয়ার কথা!

৮. সবচেয়ে বেশি লা লিগা গোল-অ্যাসিস্ট
লিওনেল মেসির লা লিগা গোলসংখ্যা ৪৭৪টি, যা স্প্যানিশ লিগের রেকর্ড, শীর্ষ পাঁচ লিগেও। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড তার ‘নিকটবর্তী’ খেলোয়াড়টি হলেন অ্যালান শিয়েরার, তার গোলসংখ্যা ২৬০টি। মেসি আরেকটু হলে তার দ্বিগুণ লিগ গোলই করে বসেছিলেন!

তবে মেসিকে আর সব খেলোয়াড় থেকে আলাদা করে গোলের পাশাপাশি তার গোল করানোর ক্ষমতা। মেসি এখানেও সেরা। জাভি-ইনিয়েস্তাদের সঙ্গে খেলেছেন, তাদের ছাপিয়ে লা লিগা ক্যারিয়ারে তিনি গোল করিয়েছেন ১৯২টি। তার কাছাকাছি আছেন জাভি, তবে তিনিও মেসি থেকে পিছিয়ে আছেন ৬৩ গোলের ব্যবধানে। 

শুধু লা লিগা নয়, ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্টও মেসিরই। ক্লাব ও জাতীয় দলের সব প্রতিযোগিতায় ৩৩১ অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। এই কীর্তিতে তার ধারেকাছেও নেই আর কেউ। 

৯. সবচেয়ে বেশি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হ্যাটট্রিক
শেষ কয়েক বছরে হয়তো তার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পারফর্ম্যান্সে ভাটা পড়েছে, তবে তার আগে রেকর্ড ঠিকই নিজের নামে করে রেখেছেন মেসি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি হ্যাটট্রিকের রেকর্ড তারই। তার হ্যাটট্রিকসংখ্যা ৮টি। এখানেও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোই, তার নামের পাশে হ্যাটট্রিক আছে ৭টি। ৪ হ্যাটট্রিক নিয়ে এর পরের অবস্থানে আছেন কারিম বেনজেমা আর রবার্ট লেভান্ডভস্কি।

১০. চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে বেশি গোল
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হ্যাটট্রিকের মতো এই প্রতিযোগিতার গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে বেশি গোলও মেসিরই। তার গোলসংখ্যা ৭৬টি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল রোনালদোর, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গ্রুপ পর্বে তার গোলসংখ্যা ৭৩টি।

সোনালীনিউজ/এআর

Wordbridge School
Link copied!