ঢাকা: প্রথম ম্যাচেই ভারতের কাছে হার ৬ উইকেটে, পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হার ১৩৪ রানে। এমন বাজেভাবে বিশ্বকাপ শুরু করা অস্ট্রেলিয়াই সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩ উইকেটে আর ফাইনালে ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন!
অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা প্যাট কামিন্স হাসতে হাসতেই বললেন, ‘সেরাটা শেষের জন্য জমিয়ে রেখেছিলাম।’ অস্ট্রেলিয়ার এই শেষের জন্য সেরা জমিয়ে রাখার বড় উদাহরণ কামিন্স নিজেই। লিগ পর্বের ৯ ম্যাচের তিনটিতে কোনো উইকেটই পাননি, সেরা বোলিং ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ ওভারে ৩২ রান দিয়ে ২ উইকেট।
৯ ম্যাচে ১০ উইকেট পাওয়া সেই কামিন্সই সেমিফাইনালে নিয়েছেন ৫১ রানে ৩ উইকেট, ফাইনালে ৩৪ রানে ২ উইকেট। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে ১০ ওভার বল করে একটিও বাউন্ডারি হজম করেননি। এবারের বিশ্বকাপে পুরো ১০ ওভার বোলিং করে একটি বাউন্ডারি হজম না করা বোলার আছেন আটজন, কিন্তু কামিন্সই পেসারদের মধ্যে প্রথম।
অপরদিকে ভারতীয় পেস বোলিংয়ে কাকতালীয়ভাবে ২০০৩ সালের সঙ্গে মিলে গেল ২০২৩ সালের ঘটনা। ২০০৩ সালের ফাইনালে ভারতের পক্ষে বোলিং ওপেন করেছিল জহির খান! নার্ভাস জহির কনসিড করেছিল ১৫ রান! অস্ট্রেলিয়া আর ব্যাক ডাউন করেনি! রিকি পন্টিং এর কালজয়ী ইনিংস সহ সব ডিপার্টমেন্টেই ভারতকে ডমিনেট করে শিরোপা জিতে নেয় অজিরা!
২০২৩ সালের ফাইনালে প্রথম ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহও কনসিড করল ঠিক ১৫! মাঝে খুব সামান্য সময়ের জন্য মনে হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া পথ হারাচ্ছে, সেটা তো বীরেন্দ্র শেবাগের রুদ্রমূর্তি দেখে ২০০৩ সালেও মনে হয়েছিল কিছু সময়ের জন্য! রিকির জায়গায় আজ ট্রেভিস হেড, কালজয়ী এক ইনিংস! সব ডিপার্টমেন্টে ইন্ডিয়া আউটপ্লেইড! ম্যাচের বড় একটা সময় ছিল কেবলই আনুষ্ঠানিকতা।
ভারত হট ফেভারিট হয়ে সর্বশেষ আইসিসি ইভেন্টের ফাইনাল খেলেছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে! হিতে বিপরীত হয়েছিল! উড়ে গিয়েছিল স্রেফ! ফাইনালের আগে প্রায় সকল ক্রিকেট এনালিস্ট ভারতকে হট ফেভারিট বলে দিয়েছিল! অথচ এরা ভুলে গেল এত বড় একটা টুর্নামেন্টে অন্য যে দলটি ফাইনালে এসেছে তারা হাডুডু খেলে আসেনি। দলটির নাম অস্ট্রেলিয়া!
পাঁচবার ট্রফিতে চুমু খেয়েছে, চ্যাম্পিয়ন রক্ত! এরা মাঠে নামে শিকার করতে, ঠিক নেকড়ের প্যাকের মত! সবথেকে দূর্বলটাও রক্তের নেশায় কামড়াবে! আপনি সিংহ নাকি বাঘ, ভুলে যান, আপনি শুধুই শিকার! আফগানদের বিপক্ষেই রক্তের গন্ধ ওরা পেয়ে গেছে!
যে সিরাজকে বাদ দিয়ে শামিকে দিয়ে নতুন বল করাতে হল, ওই যে টানা ১৬ ওভার বাউন্ডারি না মেরে গুটিয়ে থাকতে হল, যে শিশিরে বল গ্রিপ করবে না জেনে ফাইনালে চেজ করতে চাইল, এগুলো জাস্ট এক্সিলেন্স! ইন্ডিয়া সেভাবেই খেলেছে, যেভাবে অস্ট্রেলিয়া চেয়েছে! ক্রিকেট শুধুই ফর্ম, দর্শক আর মাঠ নয়, ক্রিকেট এখন এনালাইসিস, প্ল্যান এন্ড এক্সিকিউশনের!
অবাক করা বিষয় হল সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ উইকেট, দর্শক সাপোর্ট, পরিচিত কন্ডিশন সব কিছু থাকার পরও ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়ন নয়! ক্রিকেট! এ স্পোর্টস উইথ হিজ ওউন মিস্ট্রি!
এআর







































