• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ছেলের জন্য উপোস করছেন পৃথ্বীর বাবা


ক্রীড়া ডেস্ক অক্টোবর ১৩, ২০১৮, ১২:১১ পিএম
ছেলের জন্য উপোস করছেন পৃথ্বীর বাবা

ঢাকা: ১৮ বছরের বিস্ময়বালক এখন ভারতের নতুন তারকা। তাঁকে এর মধ্যে তুলনা করা হচ্ছে মাস্টার-ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে। কিন্তু পৃথ্বী শ’য়ের জীবন কাহিনী সিনেমার কাহিনীকেও হার মানাবে। মুম্বাইয়ের এক বস্তি থেকে উঠে এসে ভারতীয় দলের টেস্ট ক্যাপ পড়েছেন পৃথ্বী।

রাজকোটে জীবনের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করে রেকর্ড বই ওলট-পাল্ট করে দিয়েছেন মুম্বাইয়ের ওপেনার। যেখান থেকে খুব অল্প বয়সেই গোটা ক্রিকেট দুনিয়ায় আলোড়ন তুলেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। একইভাবে পৃথ্বীও তাই করছেন। হায়দরাবাদে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমেছেন ছোট্ট পৃথ্বী। তাঁর সামনে রয়েছে রেকর্ডের হাতছানি। জীবনের প্রথম দুই টেস্টেই সেঞ্চুরির নায়কদের ক্লাবে তিনি মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, সৌরভ গাঙ্গুলীর পাশে জায়গা করে নিতে পারবেন কি না, তা দেখার অপেক্ষায় গোটা ক্রিকেট বিশ্ব।

তবে অনেকেই জানেন না, পৃথ্বীর এ অবধি আসার পেছনে কার অবদান সবচেয়ে বেশি। প্রথম সেঞ্চুরি করার পর পৃথ্বী সেটি তাঁর বাবা পঙ্কজ শ’কে উৎসর্গ করেছিলেন। কেন? এক কথায় উত্তর বাবাই এতদূর টেনে নিয়ে এসেছেন পৃথ্বীকে। শুধু তাই নয়, ছেলে হায়দরাবাদে খেলছেন আর ওদিকে বাবা উপোস করছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে পৃথ্বীর বাবা পঙ্কজ বলেছেন,‘ এই ব্রত পালন শুধু আমার ছেলের জন্য নয়, দলের প্রত্যেকের শুভ কামনা করেই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি আমি।’

ছোট্ট পৃথ্বীর জন্য ভোর তিনটায় ঘুম থেকে উঠে খাবার বানাতেন বাবা। ঘুম থেকে ছেলেকে ডেকে রেডি করতে লেগে যেত ঘন্টাখানেক। এরপর ভোর সাড়ে ৪টায় বেরিয়ে ট্রেন ধরে ৬৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ব্রান্দ্রার এমআইজি মাঠে ছেলেকে পৌঁছে দেওয়াই ছিল পঙ্কজের দৈনিক কাজ।

পৃথ্বী যাতে ট্রেনের ভিড়ের চাপে চোট না পায় সেজন্য তাঁকে কাঁধে চাপিয়ে ট্রেনে উঠতে লড়াকু বাবা। সারা দিন গাছের তলায় বসে হয় ছেলের অনুশীলন দেখা, নয় তো স্থানীয় বাজারে গিয়ে তার জন্য সস্তায় ক্রিকেট সরঞ্জামের খোঁজ করাই ছিল তাঁর কাজ।

অনুশীলন শেষে স্কুল। এরপর সেই দীর্ঘ পথ পেরিয়েই আবার ঘরে ফেরা ও রুটি-সবজি বা কোনও কোনও দিন ডিমের তরকারি। বছরের পর বছর এটাই ছিল বাবা ও ছেলের দিনলিপি। এর ফল আজকের এই পৃথ্বী শ।

কঠিন লড়াইয়ের কথা বাবা সংবাদমাধ্যমে বলতে চান না। সেঞ্চুরির পরের দিন সাংবাদিকেরা তাঁর নাগাল পাননি। বুধবার হায়দরাবাদ টেস্টের আগে পৃথ্বীর বাবা সংবাদমাধ্যমকে বললেন, ‘সেদিন আমার শরীর ভালো ছিল না বলে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলাম। বাড়িতে একা থাকি। শরীর খারাপ হলে কে-ই বা দেখবে? তাই বাড়িতে ছিলাম না। তবে আমি ওর খেলা দেখতে কোথাও যাইও না। টিভিতেও দেখি না সাধারণত।’

রাজকোটে সেঞ্চুরি করে পৃথ্বী তো আপনাকেই উৎসর্গ করেছেন। এ নিয়ে কম কথার মানুষ পঙ্কজ বলেন, ‘ওর মধ্যে এই প্রতিভা দেখেছিলাম বলেই তো ওকে নিয়ে এত লড়াই করেছি। জানতাম ও টেস্ট খেলবে। পুরোটাই ওর কৃতিত্ব। বাবা হিসেবে আমি কর্তব্য পালন করেছি মাত্র। ও আমাকে ভীষণ ভালোবাসে বলেই প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করে আমার কথা বলেছে। ছেলে সফল হলে কোন বাবার না ভাল লাগে?’


সোনালীনিউজ/আরআইবি/আকন

Wordbridge School
Link copied!