• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনশনে ববির ৪ শিক্ষক ও ১২ শিক্ষার্থী অসুস্থ


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২৬, ২০১৯, ০৪:৫২ পিএম
অনশনে ববির ৪ শিক্ষক ও ১২ শিক্ষার্থী অসুস্থ

বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হকের অপসারণ দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচির তৃতীয় দিনে ৪ শিক্ষক ও ১২ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে ৩ শিক্ষার্থী ও ৩ শিক্ষককে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা চলছে।

এদিকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অসুস্থতার খবর পেয়ে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেনের নেতৃত্বে চিকিৎসকের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তারা অসুস্থদের খোঁজখবর নেন।

আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যলেয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অনশন শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রাতে অনশনে যোগ দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জন।

অনশনরত শিক্ষকরা হলেন- শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া, সহ-সভাপতি সরদার কায়সার আহমেদ, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় সরকার, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও ইলিয়াস মাহমুদ। এদের মধ্যে শিক্ষক ইলিয়াস মাহমুদ ছাড়া অন্যরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আলিম সালেহী জানান, আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীরা প্রায় সকলেই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে মারুফ, রাশেদ ও আনোয়ারকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া অনশনরত প্রায় সকলেরই বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা চলছে। স্যালাইন দেয়া হচ্ছে।

আন্দোলনরত অন্য শিক্ষার্থীরা জানান, শারীরিক এবং পড়াশোনার ক্ষতি জেনেও উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হকের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ৮ হাজার শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একজন স্বৈরাচারী উপাচার্যের কাছে জিম্মি হয়ে থাকবেন, তা মেনে নেয়া যায় না।

অনশনে অসুস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করার পরও ভিসি পদত্যাগ করেননি, হয়নি অপসারণও। আর এ কারণে আমরণ অনশনের এই কর্মসূচি বেছে নিয়েছেন তারা। দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন চলবে।

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম এবং তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বনি আমিন বলেন, এই উপাচার্য স্বৈরাচার। তারা সঙ্গে আর কোনো কাজে অংশ নিতে চান না। তাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তারাও একাত্মতা ঘোষণা করেছেন।

ইংরেজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি মো. আরিফ হোসেন বলেন, এক মাস ধরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা নিশ্চিত ক্ষতির মুখে পড়বে। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনও যৌক্তিক। প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির উচিৎ দ্রুত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা।

তবে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের এক মাসের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কমিটির সদস্যদের টনক নড়েছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হককে চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর আভাস পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কমিটির সদস্য বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস বলেন, উপাচার্য ১৫ দিনের ছুটি নিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তার অবশিষ্ট মেয়াদ অর্থাৎ ২৭ মে পর্যন্ত একটি ছুটির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আবেদনটি অগ্রগামী করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। এই প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগতে পারে। কিন্তু এটা বুঝতে চাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে ঢাকায় অবস্থানরত উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হকের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তিনি মুঠোফোনের কল রিসিভ না করায় তার কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!