• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কারাগারে থেকেও একটি সিদ্ধান্তে এখনও অটল খালেদা জিয়া


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৬, ২০১৯, ০৮:২৭ এএম
কারাগারে থেকেও একটি সিদ্ধান্তে এখনও অটল খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়া

ঢাকা: ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাভোগ করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলের সিনিয়র ও মধ্যম সারির নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূলের পক্ষ থেকে ক্রমাগত কর্মসূচির চাপ থাকলেও রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামের বিরুদ্ধে এখনও তার অবস্থান। 

নিজের কারামুক্তি ইস্যুতে কোনও ধরনের আন্দোলনে সম্মতি নেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার।  শিগগিরই তার এই মনোভাবে পরিবর্তন আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে নিজের এই অবস্থানের কথা তিনি নিয়মিত পৌঁছেও দিচ্ছেন দলের নীতিনির্ধারকদের কাছে। দলের হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠ ও স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে আলাপের সময় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরও সতর্ক অবস্থানে থাকার চিন্তা-ভাবনা করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। 

কমিটির প্রভাবশালী কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর নেতাদের গ্রেফতার ও দ্রব্যমূল্যের হঠাৎ ঊর্ধ্বগতির নেপথ্যে কী, তা নিশ্চিত হতে পারছে না বিএনপি। এক্ষেত্রে বিএনপির কয়েকজন নীতিনির্ধারকের আশঙ্কা, পরিস্থিতি স্পষ্ট না বুঝে উদ্যোগ নিলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বসছে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক। এই বৈঠকে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

বিএনপি হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল জানান, শুধু আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে বের করা যাবে, এমন কৌশলে বিশ্বাসী নয় দলের হাইকমান্ড। এক্ষেত্রে প্রধান নির্দেশনা হিসেবে কাজ করছে বিএনপি-প্রধানের বক্তব্যই। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়ার আগে প্রকাশ্যে ও ঘরোয়া—উভয় ক্ষেত্রেই যেকোনও পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীদের শান্ত থেকে ষড়যন্ত্র মোকাবিলার কথা বলেছেন খালেদা জিয়া।

এরআগে, ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার লা মেরিডিয়ানে অনুষ্ঠিত দলের নির্বাহী কমিটির সভায় ও ৭ ফেব্রুয়ারি গুলশানে নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জোর দিয়েই প্রতিহিংসামূলক আচরণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

দলটির হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানান, খালেদা জিয়া নিজের মুক্তির আন্দোলনের বিপক্ষে বলেছেন। এছাড়া পরবর্তী সময়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও পরিবারের সদস্যরা যখনই তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, সব সময়ই খালেদা জিয়া বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়েছেন।

কারামুক্তি ও আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রায় একই বক্তব্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদেরও। তিনি জানান, খালেদা জিয়া যেভাবে বলেছেন, আমরা সেভাবেই অনুসরণ করছি। আমরা যদি রাস্তায় নামি, তখন সরকারই সহিংসতা সৃষ্টি করবে।

বিএনপি হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠ দায়িত্বশীল জানান, ইতোমধ্যে দলের প্রায় ২০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা চলছে। নতুন করে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার করার পরিস্থিতি তৈরি করার বিরুদ্ধে হাইকমান্ড। তাই পরিস্থিতির গুণগত পরিবর্তন ছাড়া নতুন করে ঘরোয়া কর্মসূচিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে মুক্তি দাবির প্রক্রিয়াও।

দলটির একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্রের ভাষ্য, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কয়েকটি প্রসঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ। যে লোকগুলোকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের কেউ-ই সরকারের প্রতিপক্ষ ছিলেন না। দৃশ্যত সরকারের দায়িত্বশীলরা ‘দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের’ কথা বললেও আদতে এর পেছনের কারণ ভিন্ন। যার কোনও কূল এখনও বিএনপির কাছে স্পষ্ট হয়নি। ফলে, যেখানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকেও অস্বস্তিতে আছে, সেখানে বিএনপির উদ্যোগ সফল হবে—এমন কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং স্যাবোটাজ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও সূত্রটি জানায়।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!