• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
ঠিকাদারের বিরুদ্ধে

গাবখান চ্যানেল খননে অনিয়মের অভিযোগ


মো. আমিনুল ইসলাম, ঝালকাঠি আগস্ট ১৯, ২০১৮, ০২:২০ পিএম
গাবখান চ্যানেল খননে অনিয়মের অভিযোগ

ঝালকাঠি: পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজের মালামাল বহনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঝালকাঠির সুগন্ধা, গাবখান ও ধানসিড়ি নদীর মোহনায় জেগে উঠা বিশাল চর ও গাবখান চ্যানেলের ভিতরে ডুবো চর।

বিআইডব্লিউটিএর জরিপে চ্যানেলের অভ্যন্তরে চরের অস্তিত্ব পেলেও সেই চর না কেটেই খনন কাজের ঠিকাদার কোম্পানি কাজ শেষ করেছে।

রূপপুর থেকে মংলাবন্দর পর্যন্ত নৌ রুটে সরকারের ব্যাপক সংস্কারের ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে এ মোহনা ও চ্যানেলের ভেতরে প্রশস্ততা বৃদ্ধি এবং চর কাটার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু খনন কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদী মোহনায় কিছু চর কাটলেও গাবখান চ্যানেলের ভেতরের কোনো চর কাটেনি। বিআইডব্লিউটিএ এ কাজের জরিপ শেষ করে রিপোর্ট প্রদানের পরই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রা. লি. খনন কাজ শুরু করে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খনন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্তরা গাবখান চ্যানেলের ভেতরে চর কাটার কথা জানালেও গাবখান টোল ঘর কর্তৃপক্ষ বলছে ড্রেজার মেশিন চ্যানেলের ভেতরেই প্রবেশ করেনি। এখন বর্ষা মৌসুম হওয়ায় এমনিতেই পানি বৃদ্ধির কারণে চ্যানেলটিতে অসংখ্য ডুব চর থাকলেও এবং প্রশস্ততা কমে এলেও দেখা যাচ্ছে না। টোল কর্তৃপক্ষ বলছে চ্যানেলের ভেতরে খনন কাজ না করায় মাত্র কমাস পরে সামনের শুকনো মৌসুমেই আবার এটি চলাচলে আগের মতো মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়বে।
 
এলাকাবাসী ও গাবখান টোল ঘর সূত্র জানায়, চ্যানেলের প্রবেশ মুখে পূর্ব পাড়ের চর কাটা হলেও পশ্চিম পাড় ও চ্যানেলের ভেতরের চর কাটা হয়নি। এ বিষয়ে খনন কাজের ঠিকাদার কোম্পানি কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে দায় চাপাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের ওপর।

ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ বলছে বিআইডব্লিউটিএ যে ভাবে যতটুকু কাটতে বলেছে সেভাবেই কাজ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মংলা, চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনাগামী দেশি-বিদেশি মালবাহী জাহাজসহ ভারী নৌযান চলাচলে এ চ্যানেল এবং নদীর মোহনায় বিশাল চর বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রা. লি.-এর ড্রেজার প্রকৌশলী মো. হাবিবুল্লাহ জানান, গত ২ জুলাই বিআইডব্লিউটিএর রিপোর্ট অনুযায়ী ঝালকাঠির ৩ নদীর মোহনা ও গাবখান চ্যানেলের ভেতরে চর কাটার কাজ করেছি। চর অপসারণ করার আগে এসব স্থানে পানির গভীরতা ছিল ৬-৭ ফিট। এখন সেখানে গভীরতা ২০ ফিট।

প্রকৌশলীর বক্তব্য অনুযায়ী চ্যানেলের ভেতরে চর কাটা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে গাবখান টোল ঘরের আদায়কারী মো. মারুফ জানান, চ্যানেলের ভেতরে ড্রেজার প্রবেশ করেনি। তাই  ভেতরের চর কাটার প্রশ্নই উঠে না। ড্রেজার এসে শুধু ৩ নদীর মোহনার পূর্ব পাড়ের কিছু চর কেটেছে। পশ্চিম পাড়ের চর কাটেনি।

এদিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজের মালামালসহ একটি পল্টুন অবস্থান করছে। এ পল্টুনের সারেং মো. মোস্তফা জানান, চ্যানেলের ভেতরে এ বর্ষা মৌসুমে পানি বেশি থাকায় চলাচলে সমস্যা হয় না। রূপপুর থেকে মংলাবন্দর পর্যন্ত নদী পথের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৬শ কিলোমিটার।

এ নদীপথে কোথায় গভীরতা কম এবং চর পড়ে নৌ চলাচল বিঘ্ন ঘটছে তা নির্ধারণে ৩টি টিম জরিপের কাজ করেছে। গত ২৫ এপ্রিল এ রুটে জরিপের কাজ শুরু হয়ে ছিল। জরিপের আওতায় আনা হয়েছে মেঘনা, কীর্ত্তনখোলা, সুগন্ধা, বিষখালী নদী ও নদীর মোহনাসহ গাবখান চ্যানেল।

দক্ষিণাঞ্চলের এ জরিপ কাজে অংশ নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএর জরিপ শাখার সহকারী পরিচালক বাবুল আক্তার, উপসহকারী পরিচালক আবুল হাসান ও নৌবাহিনী সদস্য মো. ফয়সাল।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!