• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুমন্ত প্রকল্পে ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২৫, ২০২০, ০১:৩৮ পিএম
ঘুমন্ত প্রকল্পে ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়

ঢাকা : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটির সভা থেকে অনুমোদন নেওয়া বেশ কিছু প্রকল্প যাদের কাজ কোনো অগ্রগতি নেই। পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ থাকলেও সেই অর্থ খরচ করা যাচ্ছে না। এমন প্রকল্পকে অর্থনীতির ভাষায় বলা যায় ঘুমন্ত উন্নয়ন প্রকল্প। এমনই ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাকি সময়ের জন্য আরো প্রায় ১১ কোটি টাকা বরাদ্দা চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।  

প্রকল্পগুলো ছয় মাস পার করে আট মাস পর কার্যক্রম শুরু ও চলমান রাখার স্বার্থে এই অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন বলে শিক্ষা সচিবের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে এ কথা জানা গেছে। এ দিকে আইএমইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ছয় মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৮১টি প্রকল্পের বিপরীতে অবমুক্তকৃত ৫৩ শতাংশ অর্থের মধ্যে খরচ করা হয়েছে ৪২ শতাংশ।

শিক্ষা এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ মার্চ শিক্ষা সচিব মো: মাহবুব হোসেন ছয়টি প্রকল্পের বিপরীতে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাকি সময়ের জন্য সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ চেয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কমিশন সদস্যের কাছে ব্যক্তিগত প্যাডে চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে সচিব জানান, চলতি অর্থবছরের এডিপিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীন আট হাজার ৫৯৬ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮১টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। আরো প্রায় ২০টি নতুন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন।

চিঠিতে বলা হয়, গত ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত এনইসি সভায় চলতি অর্থবছরের আরএডিপি অনুমোদন দেয়া হয়। শিক্ষা বিভাগ থেকে আরএডিপিতে ৮৯টি প্রকল্পের অনুকূলে আট হাজার ১৯২ কোটি ৭২ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। চাহিদার বিপরীতে ৮৩টি প্রকল্পের অনুকূলে সাত হাজার ৬৮৬ কোটি ৭১ লাখ বরাদ্দ খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু ছয়টি প্রকল্পের বরাদ্দ অন্তর্ভুক্ত হয়নি।

প্রকল্পগুলো হলো, ৯৪৪ কোটি ৮০ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ের হাওর এলাকার নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন, ৩৯৩ কোটি ৪১ লাখ পাঁচ হাজার টাকা ব্যয়ের ঢাকা, মাদারিপুর ও রংপুর জেলার তিনটি কলেজের অবকাঠামো উন্নয়ন, ৪৫১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন, চার কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ের সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি, ৯৮৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (২য় পর্যায়) এবং ৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৪ হাজার টাকা ব্যয়ের জেনারেশন ব্রেক থ্রু প্রকল্প (২য় পর্যায়)।

আরএডিপি অনুমোদনের পর এখন এই ছয়টি প্রকল্পের জন্য ১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। নাম মাত্র এক লাখ টাকা করে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে হাওর এলাকার নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন প্রকল্প এবং ঢাকা, মাদারীপুর ও রংপুর জেলার তিনটি কলেজের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে। পাঁচ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে। এক কোটি ১২ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্পে মাত্র দুই লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। চার কোটি ৭৯ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে জেনারেশন ব্রেক থ্রু প্রকল্পে (২য় পর্যায়)।

শিক্ষা সচিব চিঠিতে বলেছেন, প্রকল্পগুলো আরএডিপিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য নির্ধারিত ছকে তা প্রদান করা হলো। বর্ণিত ছয় প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু ও চলমান রাখার স্বার্থে চলতি আরএডিপিতে অর্থ বরাদ্দ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি পরিকল্পনা সচিবের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

এদিকে আইএমইডির পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত আট মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮১টি প্রকল্পের বিপরীতে অর্থব্যয় হয়েছে ৪০ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে অগ্রগতি ছিল ৩৭ দশমিক ২২ শতাংশ। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮১টি প্রকল্পের বিপরীতে অর্থ অবমুক্ত হয়েছে ৫৩ শতাংশ আর অর্থ খরচ হয়েছে ৪২ শতাংশ। ১১ শতাংশ অর্থই ব্যয় করা যায়নি।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!