• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিভাগীয় প্রার্থীরা বঞ্চিত, কথা রাখলেন না বিসিক চেয়ারম্যান


সামছুল ইসলাম কামরুল সেপ্টেম্বর ১১, ২০২০, ১০:১২ পিএম
বিভাগীয় প্রার্থীরা বঞ্চিত, কথা রাখলেন না বিসিক চেয়ারম্যান

ঢাকা : বিভাগীয় প্রার্থীদের বঞ্চিত করে ৬ষ্ঠ গ্রেডের ১৬টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও  কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। এ ক্ষেত্রে চাকরির বিধিমালও উপেক্ষা করেছে সংস্থাটি।

সংক্ষুদ্ধরা আদালতে মামলা করলেও চেয়ারম্যানের দেয়া পদোন্নতির আশ্বাসে সরল বিশ্বাসে সেই মামলা তুলে নেয় বঞ্চিত বিভাগীয় কর্মকর্তারা। এরপর তাদের পদোন্নতি না দিয়ে বিতর্কিত নিয়োগের ফল প্রকাশ করায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। ৬ষ্ঠ গ্রেডের ১৬টি পদের এই নিয়োগেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিকের চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান এনডিসি সোনালীনিউজকে বলেন, ৬ষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগের ব্যাপারে আদালতে মামলা ছিল। মামলাটি উঠিয়ে নেয়ার পরে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বিভাগীয় কর্মকর্তাদের গ্রেডেশন লিষ্ট তৈরীর কাজ চলছে। এটি শেষ হওয়ার পরে তাদের পদোন্নতিও দেয়া হবে। ৬ষ্ঠ গ্রেডের ১৬টি পদে নিয়োগে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়। আমরা যথাযথ যাচাই বাছাই শেষে চুড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছি।

সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট ৪৪ ক্যাটাগরিতে ২০৯টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিসিক। এর মধ্যে ৬ষ্ঠ থেকে তৃতীয় গ্রেডের পদ ৬৩টি। অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে ওপরের পদগুলো পূরণ করা হয়; কিন্তু বিসিক কর্তৃপক্ষ সেটি আমলে না নিয়ে সরাসরি নিয়োগ দেয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।

বিসিক চাকরি প্রবিধানমালা-১৯৮৯ এবং সংশোধিত ১৯৯৪ প্রবিধান ৩ এর উপ প্রবিধান (২) অনুসারে ‘সরকার কর্তৃক সময় সময় জারীকৃত আদেশ অনুসারে কোন বিশেষ শ্রেণীর প্রার্থী এবং করপোরেশন বা করপোরেশন পরিচালিত কোন প্রকল্পে কর্মরত আছেন বা ছিলেন এমন প্রার্থীর ক্ষেত্রে উক্ত বয়সসীমা শিথিল যোগ্য হইবে’; ‘আরও শর্ত থাকে যে এই প্রবিধান মালার যাহা কিছুই থাকুকনা কেন করপোরেশন বা করপোরেশন পরিচালিত কোন প্রকল্পে আছেন বা ছিলেন এমন কোন প্রার্থীর যদি সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহা হইলে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাহাকে অগ্রাধিকার দেয়া যাইতে পারে’।

আরও পড়ুন : সরকারি নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের হাহাকার

কিন্তু বিজ্ঞপ্তিতে তার প্রতিফলন না থাকায় কর্মকর্তারা ঐ বছরের ৮ আগস্ট তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন ১০০৯/২০১৯ দায়ের করেন। আদালত যুক্তিতর্ক শেষে গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ হবে না মর্মে রুল এবং নিয়োগ কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন।

কিন্তু আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে পরের দিন ৪ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে।  এরপর ১১ মার্চ মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেও পরে সেখান থেকে পিছু হটে।

আরও পড়ুন : নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা দেখিয়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডে বিসিকে নিয়োগ

সূত্র জানায়, বিসিক চেয়ারম্যান সঠিক সময়ে প্রমোশনের বিষয়ে দৃঢ়তার আশ্বস্ত করেন এবং মামলা উঠানোর বিষয়ে নির্দেশ প্রদান করেন। তারা চেয়ারম্যানের মুখের কথায় বিশ্বাস রেখে মামলা প্রত্যাহার করেন। মামলা প্রত্যাহারের সাথে সাথে মৌখিক পরীক্ষা শুরু করে সম্প্রতি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন করে বিসিক।

এদিকে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ৫ বছরের অধিক সময় পার হলেও একের পর এক অজুহাত দিয়ে পদোন্নতির প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছে বিসিক। কোভিডের অজুহাত দিয়ে মার্চে এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে, এরপর চূড়ান্ত গ্রেডেশন তালিকার (যেটা ২০১৯ সালে পাশ হয় এবং এটার ভিত্তিতে ৩১ জন কর্মকর্তাকে ৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতিও প্রদান করে) ওপর আবারও কমিটি করে কালক্ষেপন করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন : সোনালীনিউজে সংবাদ প্রকাশের পর অভিজ্ঞতা সনদ যাচাইয়ে কমিটি পূর্ণগঠন বিসিকের

এদিকে ২১ আগস্ট ২০১৯ তারিখে প্রাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে মহাব্যবস্থাপক পদে অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে উপ-মহাব্যবস্থাপক অথবা তৎসম পদে ০৪ (চার) বছরের অভিজ্ঞতাসহ কোনো সরকারি আধা সরকারি/স্বায়ত্বশাসিত/আধা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা কাজে ১৫ (পনের) বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

কিন্তু গত ২৫ মার্চ নিয়োগ পাওয়া অখিল রঞ্জন তরফদার, এসএমই ফাউন্ডেশনে ০১ জানুয়ারি ২০০৯ হতে ২৪ মার্চ ২০২০ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। এসএমই ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে দেখা যায় চাকরি ছাড়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি সহকারী মহাব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন। তাহলে এক্ষেত্রে বিসিকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তে বলা আছে ‘উপ-মহাব্যবস্থাপক অথবা তৎসম পদে ০৪ (চার) বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে’ সেটি প্রতিপালন করা হয়নি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!