• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় সাড়াশি অভিযান, বাংলাদেশিসহ আটক ৩০৯


নিউজ ডেস্ক ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯, ১১:৪৭ পিএম
মালয়েশিয়ায় সাড়াশি অভিযান, বাংলাদেশিসহ আটক ৩০৯

ঢাকা : মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের আটক করতে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে অভিবাসন বিভাগ। অভিযানে বৈধ আর অবৈধ সব মিলিয়ে আটক করা হয়েছে বাংলাদেশিসহ ৩০৯ জনকে।

বিগত দিনে অভিবাসী শ্রমিকদের আটক করে যাচাই-বাছাই করে বৈধ অভিবাসীদের ছেড়ে দেয়া হলেও এবার বৈধ-অবৈধ সবাইকে পুলিশ আটক করছে।

বুধবার ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার দিকে পুডু বাস টার্মিনাল ও কোতারায় মাইডিন মার্কেট এর আশপাশে ব্যাপক তল্লাশি শুরু করে ১৭৫ জনের অভিবাসন বিভাগের একটি টিম। এ সময় আটক করা হয় ২৯০ জন পুরুষ ও ১৯ জন নারীকে। আটককৃতদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছে তা জানা যায়নি।

কুয়ালালামপুরের পুলিশপ্রধান দাতুক সেরি মাজলান লাজিম স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, আটককৃত সবাইকে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য জিজ্ঞাং, দ্যাং ওয়ানগি থানায় (বালাই) এবং চেরাচ ইমিগ্রেশন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এ সময় পুলিশপ্রধান আরও বলেন, প্রত্যেকের ভ্রমণ দলিল, পাসপোর্ট ওয়ার্ক পারমিট চেক করা হবে। রাজধানী কুয়ালালামপুর শহরকে অপরাধমুক্ত নিশ্চিত এবং কারোর বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা আছে কিনা তা চেক করে দেখা হবে।

এ সময় পুলিশ ও ইমিগ্রেশন এর অভিযানে ব্যাপক গোটা এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। অনেক বৈধ অভিবাসী দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। আবার কেউ কেউ দেখতে এসে ও গ্রেফতার হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ দিকে প্রতিদিনই সে দেশে অবৈধভাবে থাকা শত শত কর্মীকে আটক করছে পুলিশ। আটকদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের নাগরিকরাও আছেন।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্র জানায়, অভিযানের আগে অবৈধ কর্মীদের বৈধকরণ হতে একাধিকবার সুযোগ দিয়েছে দেশটি। আমরাও আমাদের কর্মীদের বৈধ হওয়ার জন্য নানাভাবে প্রচারণা ও সহযোগিতা করেছি। সতর্কবার্তাও দেয়া হয়েছে কিন্তু এর পরও অনেকে হাইকমিশনের নির্দেশকে উপেক্ষা করেছে বা গুরুত্ব দেয়নি। এখন সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ শেষে দেশটি অভিযানে নেমেছে। এখানে আমাদের আর কিছুই করার নেই। দেশটি তার আইন অনুযায়ীই ধরপাকড় বা বহিষ্কার করতে পারে।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতিনিধিরা জানান, বহুদিন মালয়েশিয়াতে থাকার পরও যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই, এই ধরপাকড় অভিযান নিয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। মালয়েশিয়ার পুলিশ ও ইমিগ্রেশন বিভাগ যৌথভাবে এই অভিযান চালাচ্ছে। যেখানেই তারা হানা দিচ্ছে, এ খবর পাওয়া মাত্রই কমিউনিটির লোকজন ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে সবাইকে সতর্ক করে মুহূর্তেই বার্তা পাঠাচ্ছেন কিন্তু তাতেও ধরপাকড় এড়ানো যাচ্ছে না।

রাজধানী কুয়ালালামপুরে শপিংমল ও তার আশপাশের এলাকায় যারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অবস্থায় কাজ করছিলেন, তাদের অনেকেই এখন কর্মক্ষেত্রে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন এবং তারা আত্মগোপনে রয়েছেন। ভয়ে পালিয়ে থাকা এসব অবৈধ বাংলাদেশিরা অনেকেই অভিযোগ করছেন কথিত এজেন্টদের হাতে তারা প্রতারিত হয়েছেন। বৈধকরণের সুযোগ নিতে তারা এজেন্টদের কাছে টাকা দিয়েছেন কিন্তু এজেন্টরা টাকা নিলেও কোন কাজ করেনি।

মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বারনামা ইমিগ্রেশনের বরাত দিয়ে জানায়, ২০১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ২৯ জুন পর্যন্ত ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৮৯২ কর্মী এবং ৮৩ হাজার ৯১৯ জন নিয়োগদাতা বৈধকরণ প্রকল্পে নিবন্ধিত হয়। নিবন্ধিতদের মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার ৩৩২ জন অবৈধ কর্মীকে বৈধতার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। কিন্তু যে তিনটে ভেন্ডর কোম্পানিকে এর দায়িত্ব দেয়া হয়, তাদের নাম ভাঙিয়ে বেশকিছু নকল এজেন্ট বা দালাল বাংলাদেশিদের কাছ থেকে টাকা নিয়েও কোনো কাজ না করে তাদের সঙ্গে বিরাট প্রতারণা করে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!