• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্নের যশোর মেগাসিটি


কাজী বর্ণ উত্তম জুন ২, ২০১৮, ০৭:৪৮ পিএম
স্বপ্নের যশোর মেগাসিটি

ঢাকা : কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম রাস্তা যশোর বেনাপোল সড়ক। বেনাপোল স্থলবন্দর দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর। রাস্তা চার লেন করা নিয়ে কয়েকদিন যশোরের মানুষ ফেসবুকে সবার মতামত দিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ বেশ কয়েকবার ও বিভিন্ন উদাহরণসহ দিয়েছেন। ফেসবুক মারফত আমরা জানলাম রাস্তার বিষয়ে সংসদীয় কমিটির সংসদ সদস্যগণ সরেজমিনে এরই মধ্যে ঘুরে গেছেন যশোর। পুরাতন রাস্তাটি দ্রুত মেরামতের সিদ্ধান্ত ও সংসদীয় কমিটি নিয়েছেন। ধন্যবাদ সংসদীয় কমিটির সকল সদস্যকে।

যে আলোচনাগুলো এরই মধ্যে হয়েছে সে বিষয় আমরা সবাই অবগত সেগুলো আর নাই লিখি।

আসুন একটা স্বপ্ন দেখি যশোর শহর বর্তমান অবস্থান থেকে বড় হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে। মাঝে বিশেষ ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন। আসুন স্বপ্ন দেখি বেনাপোল থেকে চারলেন যা ভবিষ্যতে আরও বড় হবে এ রকম একটা নতুন রাস্তা (নতুন এলাকা জুড়ে) নড়াইল কালনাঘাট এবং মাগুরা পর্যন্ত চলে গেছে। ভাবছেন টাকা কোথা থেকে আসবে- আগে স্বপ্ন দেখুন, তারপর বিশ্বাস করুন এটা হবে তারপর দেখবেন টাকা জোগাড় হয়ে গেছে।

বেনাপোল বন্দরের বাৎসরিক রাজস্ব কত শত কোটি? চট্টগাম থেকে কম, চট্টগ্রাম এ নতুন রাস্তা, ফ্লাইওভার, কর্ণফুলি নদীর তলদিয়ে টানেলসহ গত কয়েক বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হচ্ছে, আমরা সাধুবাদ জানাই অবশ্যই। তবে আমাদের এখানেও নয় কেন? আসুন যারা সংসদীয় কমিটিতে আছেন তাদের মাধ্যমে আমাদের এই স্বপ্ন পৌঁছিয়ে দিই সংশ্লিষ্ট সকলকে এবং প্রধানমন্ত্রীর নিকট।

(২) বছর ৬/৭ আগে চীনের সেনঝিন শহর থেকে গুয়াংঝু যাচ্ছিলাম ব্যক্তিগত কার এ। নিজের গাড়ি নিজেই চালাচ্ছিল ইঞ্জিনিয়ার সাউ। সেনঝিন থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার আমরা চলে এসেছি গুয়াংঝু আরও ৫০ কিলোমিটারের বেশি, মহাসড়কে দেখি এক বিশাল মোড় চারিদিকে লুপ আর লুপ অন্তত দশটির বেশি ছাড়া কম নয়। আমি কিছুটা অবাক হয়ে সাউকে প্রশ্ন করলাম এত লুপ কেন, সে জানালো আগামী ১০/১৫ বছর পর এখানে ট্রাফিক জ্যাম হবে ৩০ মিনিটের মতো তাই আগেই লুপ তৈরি করে রাখা হয়েছে যাতে ট্রাফিক জ্যাম না হয়। যশোর বেনাপোল সড়ক আমরা গাছ কেটে রাস্তা কত বড় করতে পারব?  

কত লেন হবে সর্বোচ্চ। যশোর বেনাপোল সড়কে বহু জায়গা আছে যেখানে এক লেনই সঠিক ভাবে সম্ভব নয় এখনই ভবিষ্যত তো পরের কথা। বরং নতুন জায়গা দিয়ে ১০০ বছরের হিসাব করে পরিকল্পিত রাস্তা করা -বেনাপোল-শার্শা- নাভারন-ঝিকরগাছা স্যাটেলাইট শহরে রুপান্তরের মাধ্যমে যশোর মেগা সিটি বেনাপোল পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ, এরই মাঝে ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন করার একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া।

স্বপ্নের এই শহর বাস্তবায়ন হলে শত শত পর্যটক এক সময় আসবে যশোর বেনাপোল পুরাতন সড়কের শতবর্ষি গাছগুলো দেখার জন্য। স্বপ্ন দেখি গাছগুলো সংরক্ষণ এবং আরও মনোরম পরিবেশ তৈরি হয়েছে গাছগুলোকে কেন্দ্র করে। ভবিষ্যত প্রজন্মের নিঃশ্বাস ফেলার একটা জায়গা হয়েছে।

(৩) স্বপ্ন যখন দেখছি আর একটু দেখি। স্বপ্নের মেগাসিটি যশোর থেকে বেনাপোল পর্যন্ত বিস্তৃত। নতুন একটি রাস্তা চার লেন হয়ে গেছে তার পাশে আরও জায়গা আছে ভবিষ্যতে আরও বড় করার জন্য। অনেকেই বলছেন নতুনভাবে জমি নিয়ে রাস্তা করলে ফসলের জমি কিছু ক্ষতি হবে। প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে, দেখার বিষয় কতটুকু ক্ষতি হলো আর কতটুকু লাভবান হলাম। কারো জমির পাশ দিয়ে মহাসড়ক হলে শতকরা ৯৯ বা ১০০ ভাগ মানুষই নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করে।

বর্তমান যশোর বেনাপোল সড়কের পাশে অনেক জায়গা থাকবে। ওই জায়গাগুলোকে আমরা ফুল চাষিদের নিকট লিজ দিতে পারি, কোন কোন জায়গায় নতুন করে জলাশয় তৈরি করতে পারি অর্থাৎ যশোর থেকে বেনাপোল পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে পার্কের আদলে গড়ে তোলা সম্ভব। হতে পারে বিশ্বমানের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়। হতে পরে হাসপাতাল, আধুনিক শপিংমল, আধুনিক রেস্টুরেন্ট ফাইভ স্টার আবাসিক হোটেল। যশোর শহর বেনাপোল পর্যন্ত বিস্তৃত হলে যেহেতু ট্রেন লাইন আছে ট্রেন সার্ভিস চালু করা সময়ের ব্যাপার হবে।

প্রিয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আপনাদের কথা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে স্বপ্নিল যশোরের কারিগর হিসাবে। পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করতে যেয়ে আমরা নতুন করে শিখেছি কিভাবে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হয়। সেই স্বপ্ন দেখার সাহস আমরা পেয়েছি নতুন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে।

আসুন ঐক্যমত পোষণ করে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য জনমত, কর্মপন্থা তৈরি করি। যশোরের সকল সংসদ সদস্যবৃন্দ, সরকারি দলসহ সকল দলের মূল নেতাগণ, সকল জনপ্রতিনিধিগণ, সরকারি উচ্চপদস্থ সকল কর্মকর্তা, সংবাদিকগণসহ সকল শ্রেণি ঐক্যমত হউন।

আমরা যশোরকে স্বপ্নের মেগাসিটিতে পরিনত করি।

পাদটীকা : যশোরের মানুষ যশোর বেনাপোল সড়ক চার লেন করা নিয়ে যশোর বেনাপোল সড়কের শতবর্ষি গাছ রাখা আর না রাখা নিয়ে ‍দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন। কিন্ত সড়ক তো বার বার বানানো সম্ভব নয়। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন।

* বর্তমান রাস্তায় যে জায়গা আছে তাতে কি ৩০০ ফিট বানানো সম্ভব, সম্ভব হলে ঝিকরগাছা-নভারন-শার্শা অবশ্যই বাইপাস লাগবে, না হলে এক্সপ্রেস হাইওয়ে হবে না। যানজটযুক্ত রাস্তা হবে।

* নতুনভাবে জমি অধিগ্রহণ করে রাস্তা বানাতে পারলে যশোর বেনাপোল দু’টি সড়ক হলো, রেল যোগাযোগ হলো, মাঝে ঝিকরগাছা-নাভারন-শার্শাকে ঘিরে স্যাটেলাইট শহর, ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন সব মিলেই না যশোর শহর বেনাপোল পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।

* বর্তমান রাস্তার সঙ্গে যে জায়গাগুলো আছে তা পরিকল্পিতভাবে কিভাবে ব্যবহারের জন্য যেমন ফুল চাষীদের নিকট লিজ, শতবর্ষি গাছগুলোকে সংরক্ষণ ও মনোরম পরিবেশ তৈরি করা পার্কের আদলে। বিশ্ব মানের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-শপিংমল-হাসপাতাল-রেষ্টুরেন্ট।
* আশু প্রয়োজন : দুর্নীতিমুক্ত যশোর বেনাপোল রাস্তা মেরামত।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!