• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৬ দিন ধরে ঢাকা-সিলেট সড়ক যোগাযোগ বন্ধ


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২৩, ২০১৯, ০৯:২১ পিএম
৬ দিন ধরে ঢাকা-সিলেট সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

ঢাকা: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুর সেতুর রেলিং ভেঙে যাওয়ায় গত ৬ দিন ধরে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে এ পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে বিকল্প গ্রামীণ সরু রাস্তা দিয়ে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে সেতুর রেলিং ভেঙে পড়ে। এ কারণে বাস ছেড়ে ট্রেনে ঝুকছেন ঢাকাগামী যাত্রীরা। ফলে যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ।

রোববার (২৩ জুন) দুপুরে সিলেট রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার যাত্রী ঢাকায় যেতে স্টেশনে ট্রেনের টিকিট নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকে টিকিট নিতে পারছেন, অনেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। আবার জীবনের ঝুঁকি নিয়েও অনেকে ট্রেনের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে ছুঁটছেন।

সাইদুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, এমনিতেই টিকিট পাওয়া খুব কষ্টকর। তার ওপর মহাসড়কে ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় ট্রেনে চাপ বেড়েছে। সকাল ৭টায় এসে ঢাকায় ছেড়ে যাওয়া পারাবত ট্রেনের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু কাউন্টারের সামনে আসলে বলা হয় টিকিট নেই। পরে বাধ্য হয়ে স্ট্যান্ডিং টিকিট নিয়ে ঢাকায় ফিরছি।

তিনি আরো বলেন, অনেকে দ্বিগুণ দামে দালালের কাছ থেকে টিকিট সংগ্রহ করেন। আমিও কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এক দালাল আমাকে টিকিট দেবে বলে পরে আর দেয়নি।

সিলেট রেল স্টেশনের সহকারী মাস্টার রাসেল আহমদ বলেন, মহাসড়কের সেতু ভেঙে যাওয়ায় সাধারণ যাত্রী থেকে শুরু করে ভিআইপিরাও ট্রেনে করে গন্তব্যে যেতে স্টেশনে ভিড় করছেন। কিন্তু সবাইকে টিকিট দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই অনেকে টিকিট না পেলে স্ট্যান্ডিং টিকিট নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

এদিকে, শাহবাজপুরে তিতাস নদীর ওপর থাকা জরাজীর্ণ সেতুর ভেঙে যাওয়া একাংশের মেরামত কাজ ৬ দিন পরও শেষ হয়নি।

সিলেটের সঙ্গে ঢাকার বাস, ট্রাক সরাসরি চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য ডেলিভারি যেমন বন্ধ রয়েছে, তেমনি কাঁচামালও সময় মতো পৌঁছাচ্ছে না। এ কারণে এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন অনেক কমে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নির্মাণ সামগ্রী বালু, রড, সিমেন্ট না পৌঁছানোয় নির্মাণ কাজ আটকে রয়েছে।

শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সূত্রে জানা গেছে, এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কয়েক কোটি টাকা।

ভুক্তভোগী অনেকে বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটিকে সেভাবে গুরুত্ব দিলে এতটা সময় লাগার কথা ছিল না। উন্নত দেশ হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান হয়ে যেত। যদি প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন তাহলে দেখা যাবে রাতারাতি ভালোভাবে সমাধান হয়ে যাচ্ছে। এটিই হলো কঠিন বাস্তবতা।

অপরদিকে মাধবপুর থেকে চান্দুরা ও শাহবাজপুর নৌ যোগাযোগ চালু হয়েছে। অনেক যাত্রী মাধবপুর সদর থেকে সোনাই নদী দিয়ে নৌপথে শাহবাজপুর সেতু পার হয়ে ঢাকার গাড়িতে উঠছেন। বিকল্প পথ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর-সরাইল ও হবিগঞ্জের লাখাই-হবিগঞ্জ সড়ক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের চান্দুরা-আখাউড়া সড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। এতে যানবাহনে থাকা যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

গাড়ির চালকরা জানিয়েছেন, সেতুর মেরামত কাজ করা হচ্ছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। যেতে দেয়া হচ্ছে শুধু হালকা যানবাহনকে।

এদিকে সরু ও আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন জানান, সেতুটি মেরামতের কাজ চলছে। আশা করি ১০-১১ দিনের মধ্যে মেরামত কাজ শেষ হবে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!