• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কুঁড়েঘর থেকে অট্টালিকায় নাথু সিং


ক্রীড়া ডেস্ক ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭, ০৮:০২ পিএম
কুঁড়েঘর থেকে অট্টালিকায় নাথু সিং

ঢাকা: পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা সারাজীবন লটারির টিকিট কিনে চলেছেন। কিন্তু কোনো দিন সেই টিকিটের সঙ্গে হয়তো বিজয়ী টিকিটের নম্বর মেলাতে পারেননি।  আবার লটারির টিকিট না কিনেই কেই বনে গেছেন কোটিপতি। যেমনটা ঘটেছে ভারতের রাজস্থানের নাথু সিংয়ের জীবনে। হঠাৎই বদলে গিয়েছিল তার জীবন। স্যাঁতসেতে কুঁড়েঘর থেকে অট্টালিকায় তার বাস। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে তিন কোটি দু’লাখ টাকাটা সারা জীবনের সঞ্চয়ের থেকেও অনেক অনেকগুন বেশি। কিন্তু এমনটাই ঘটেছিল গত বছর আইপিএল খেলা এই পেসারের জীবনে। ক্রিকেট খেলার স্বপ্নটা তো দেখে ফেলেছিলেন নাথু সিংহ আগেই। কিন্তু সেই স্বপ্ন যে এ ভাবে সফল হবে ভাবেননি রাজস্থানের এই মিডিয়াম পেসার।

নাথু সিং। নামটা শুনে অনেক স্মৃতি খুঁজেও মনে করতে পারা যাবে না। চেনা চেনাও লাগবে না। তিনি নাকি ক্রিকেট খেলেন। আইপিএলও খেলেছেন গত বছর। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। না তেমন কিছু করতে পারেননি যা দিয়ে তাঁকে ক্রিকেটপ্রেমীরা মনে রাখবেন। আবার নতুন মৌসুম, নতুন স্বপ্ন নাথু সিংয়ের সামনে। কোটি টাকার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে এবার ফিরতে হবে বল হাতে আইপিএলে।

গত বছর আইপিএল নিলামে যখন তাঁর জন্য গলা ফাটাচ্ছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স তখনও বোঝেননি তাঁর দাম এখানে গিয়ে থামবে। ঘরে টেলিভিশন ছিল না। দেখতে পারেননি নিলাম। তাঁকে নিয়ে দর হাকাহাকি। জেনেছিলেন পরে। কেটেকুটে তাঁর হাতে এসেছিল দু’কোটি ৮০ লাখ টাকা। সেটাও ছিল তাঁর ভাবনার বাইরে।  কারণ এতদিন দেখে এসেছেন কী ভাবে বাঁচার লড়াই চালাতে হয়েছে তার পরিবারকে। বাবার আট হাজার টাকা মাইনের চাকরীর উপরই বেঁচে থাকা। কিন্তু একটা আইপিএল কী ভাবে বদলে দিয়েছিল জীবন।

নাথু বলেন, ‘আমরা সব সময় একটা ছোট্ট স্যাতস্যাতে ঘরে থেকেছি। তাই আমার প্রথম লক্ষ্য ছিল পরিবারের জন্য একটা বাড়ি। যেটা তৈর হচ্ছে। যখন শেষ হবে তখন সেই বাড়ির পিছনে খরচ হবে এককোটি ৫০ লাখ টাকা। বাকি ৫০ লাখ বিভিন্ন ভাবে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। নিজের জন্য একটি গা়ড়ি কিনেছেন রাজস্থানের এই মিডিয়াম পেসার।

তিনি বলেন, ‘আমার একটা বাইক ছিল। এখন নিজের জন্য একটা গাড়ি কিনেছি। এটা স্বপ্ন সফল হওয়া। আমি সব সময়ই দেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখেছি। যখন আইপিএলে ডাক এল তখন বুঝলাম আমি সঠিক পথেই আছি।’

গত বছর চোটের জন্য খেলতে পারেননি। তাঁর জন্য যেটা ছিল জোড় ধাক্কা। এখান থেকেই খুলে যেতে পারত ভারতীয় দলের দরজা। তেমনই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু চোট সেটা হতে দেয়নি। রাজস্থানের হয়ে নিয়মিত রঞ্জি ট্রফিও খেলতে পারেননি। দলীপ ট্রফির একটা ম্যাচে ভাল খেলা জাতীয় দলের রাস্তা হতে পারে না সেটা জানেন তিনি। নাথু বলেন, ‘আমি পেস বোলিং করতে ভালবাসি। কিন্তু গত বছরটা খেলতেই পারিনি। খুব স্লো বল করেছি। যেটা মন থেকে মানতে পারিনি। আমি ১৪০ কিলোমিটার বেগে বল করি।’

২০ ফেব্রুয়ারি আবারও আইপিএল নিলাম। আবার নতুন স্বপ্ন নাথু সিংয়ের সামনে। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স তাঁকে রিলিজ করে দিয়েছে। এ বারও তিনি রিলিজের তালিকায় রয়েছেন। বেস প্রাইস ৩০ লাখ। গতবারের মতো কী কোটি টাকার গন্ডি পেড়িয়ে যেতে পারবেন রাজস্থানের এই পেসার? হতে পারবেন বিশ্বের দ্রুততম পেসার। এটাই তো সব থেকে বড় স্বপ্ন নাথু সিংয়ের।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!