• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
বিবিসি বাংলার খবর

কেন গ্রেপ্তার সাভারের সাংবাদিক নাজমুল


নিউজ ডেস্ক ডিসেম্বর ২৪, ২০১৬, ১০:৪৭ পিএম
কেন গ্রেপ্তার সাভারের সাংবাদিক নাজমুল

সাংবাদিক নাজমুল হুদা

ঢাকা: বাংলাদেশে ঢাকার কাছে সাভার থেকে একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, তার বিরুদ্ধে সরাসরি ষড়যন্ত্র লিপ্ত থাকার এবং এর অংশ হিসেবে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক সংবাদ প্রচার করার অভিযোগ আছে।

একুশে টেলিভিশন ও বাংলাদেশ প্রতিদিন নামে দুইটি সংবাদপত্রের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদাকে শুক্রবার সন্ধেবেলায় আশুলিয়ার কাছে বাইপাইল থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বলে জানা যাচ্ছে।

এসময় তার ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও ব্যক্তিগত গাড়িটি পুলিশ জব্দ করে। এ নিয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, ঘটনাটি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) দেখছে।

অবশ্য ডিবির উপ কমিশনার ও পুলিশের মুখপাত্র মাসুদুর রহমান মি. হুদার সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মি. হুদাকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করে জানান, তাকে আজ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

গতকাল সন্ধেবেলা আটকের পর রাতেই তথ্য প্রযুক্তি আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, "প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে মি. হুদা আশুলিয়ার পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন বেগবান করার চেষ্টা করেছেন এবং সরাসরি চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন"।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানাচ্ছেন, মি. হুদার বিরুদ্ধে বিএনপির এক নেতার সঙ্গে মালয়েশিয়া গিয়ে ষড়যন্ত্র করবার এবং টেলিভিশন ও পত্রিকায় বেশ কিছু মিথ্যে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে আশুলিয়া এলাকায় শ্রম অসন্তোষ ছড়ানোর চেষ্টা করবার প্রমাণ গোয়েন্দাদের হাতে আছে।

মি. হুদার ফেসবুক টাইমলাইনে গিয়ে দেখা যায় তিনি গত ১২ই ডিসেম্বর মালয়েশিয়া সফরে যান এবং প্রায় প্রতিদিনই সফরে তার কর্মসূচীর নানারকম ছবি ফেসবুকে দিয়েছেন, ফেসবুক লাইভ করেছেন।

মালয়েশিয়ায় কয়েকদিন থাকার পর তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। মিথ্যে সংবাদ প্রকাশের উদাহরণ হিসেবে পুলিশের ওই কর্মকর্তা, বাংলাদেশ প্রতিদিনে ২২শে ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেরও বরাত দেন, যেটির শিরোনাম ছিল 'থমথমে আশুলিয়া'।

এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনলাইনেও রয়েছে এবং সেটি নাজমুল হুদার ফেসবুক পাতায়ও শেয়ার করা রয়েছে।

এটি ছবিসহ একটি সরেজমিন প্রতিবেদন, যেখানে পুলিশ, বিজিএমইএ নেতা সহ নানা তরফের বক্তব্য যুক্ত রয়েছে। রয়েছে আশুলিয়ায় মোতায়েন করা বিজিবি'র টহল দলের ছবিও।

প্রসঙ্গটি বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের নজরে আনা হলে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, "সেখানে এখন অনেকগুলো গার্মেন্টস বন্ধ, এটাইত সত্যি ঘটনা? সেখানে অনেকগুলো ঘটনা ঘটছে, এটাইতো সত্যি ঘটনা? ঘটনা তুলে ধরাই একটি সংবাদপত্রের কাজ। আমরা সেই ঘটনাবলীই তুলে ধরেছি। এখানে একটি বাড়তি ইনফরমেশনও (তথ্য) ছিল না, যেটার মধ্যে থেকে ঘটনা বহির্ভূত উস্কানি আসতে পারে"।

নাজমুল হুদাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা বাংলাদেশের সংবাদপত্র ও স্বাধীন মতামতের প্রতি হামলা বলে উল্লেখ করেন মি. নিজাম। তিনি অনতিবিলম্বে নাজমুল হুদার মুক্তি দাবি করেন।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসে পড়বার আগের দিনই ভবনটির ফাটলের ছবি তুলে এবং মালিক সোহেল রানার বক্তব্য নিয়ে একুশে টেলিভিশনে একটি টেলিভিশন প্রতিবেদন করেছিলেন নাজমুল হুদা, যেটি রানা প্লাজা ধসের পর দেশে ও বিদেশে সোরগোল ফেলে দেয় এবং মি. হুদার ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়।

তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, এর আগেও তার বিরুদ্ধে উস্কানি দেবার অভিযোগ উঠেছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!