• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
মেয়র প্রার্থী খালেকের ইশতেহার ঘোষণা

খুলনাকে ‘তিলোত্তমা নগরী’ গড়ার প্রত্যয়


খুলনা প্রতিনিধি এপ্রিল ২৬, ২০১৮, ০২:৫৯ পিএম
খুলনাকে ‘তিলোত্তমা নগরী’ গড়ার প্রত্যয়

খুলনা : খুলনা সিটি করপোরেশনকে (কেসিসি) জলাবদ্ধতামুক্ত একটি উন্নত, সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও পরিকল্পিত আধুনিক ‘তিলোত্তমা নগরী’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক তার ৩১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।

বুধবার (২৫ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা প্রেস ক্লাবের হুমায়ূন কবীর বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন।

মেয়র প্রার্থী খালেকের নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব অঙ্গীকার করা হয়েছে সেগুলো হলো, ‘সিটি গভর্নমেন্ট’ ব্যবস্থা প্রবর্তনে উদ্যোগ, পরিকল্পনা গ্রহণে ‘পরামর্শক কমিটি’ গঠন, পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন, ওয়াসা, কেডিএ, রেলওয়ে, টেলি কমিউনিকেশন বিদ্যুৎ পরিসেবা উন্নয়ন, কবরস্থান ও শ্মশানঘাটের উন্নয়ন, মাদকমুক্ত নগর গড়ে তোলা, নতুন আয়ের উৎস সৃষ্টি, সিটি সেন্টার গড়ে তোলা, বিনামূল্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি, সড়ক উন্নয়ন, পার্ক-উদ্যান নির্মাণ ও বনায়ন সৃষ্টি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন ও বিকাশ ঘটানো, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে রাস্তার নামকরণ, প্রতিটি ওয়ার্ডে ক্রীড়া উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ, সোলার পার্ক আধুনিকায়ন, বধ্যভূমিগুলোর স্মৃতি সংরক্ষণ, কেসিসিকে দুর্নীতিমুক্ত করা, যাতায়াত ও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা প্রদান, সুইমিং পুল স্থাপন, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সহায়তা প্রদান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনে আরো উদ্যোগ গ্রহণ, ৩টি নতুন থানা পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা, আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ, খালিশপুর ও রূপসা শিল্পাঞ্চলের উন্নয়ন, ওয়াসা, কেডিএ, রেলওয়ে, টেলি কমিউনিকেশন ও বিদ্যুৎ পরিসেবা উন্নয়ন, কেসিসিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং খুলনা মহানগরীর সম্প্রসারণে উদ্যোগ গ্রহণ করা।

ইশতেহার ঘোষণার পর সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, কেসিসির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হলেও নির্বাচিত হয়ে ‘সিটি গভর্নমেন্ট’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চাই। এতে কেসিসি, ওয়াসাসহ নগরীর উন্নয়নে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয় করা সম্ভব হবে। ইজিবাইকেসহ সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ ও মাদক নির্মূলে কাজ করব। পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকর সহযোগিতা পেলে এ শহর থেকে ৬ মাসের মধ্যে মাদক নির্মূল করা সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ২০০৮ সালে সিটি মেয়র হিসেবে আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর কেসিসির জন্য সর্বাধিক এক হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিল। এর মধ্যে বিভিন্ন খাতে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করা হয়েছিল। অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম গতিশীলতা পেয়েছিল। ২০১৬ সালের মধ্যে সব উন্নয়ন কাজ পর্যায়ক্রমে শেষ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সঙ্গত কারণে তা সম্ভব হয়নি। পুনরায় নির্বাচিত হয়ে আমার অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে শেষ করার পাশাপাশি নগরবাসীকে অধিকতর সেবা দিতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শেখ হারুনুর রশীদ, খালেকের নির্বাচন পরিচালনা সমন্বয়কারী ও কেন্দ্রীয় নেতা এসএম কামাল হোসেন, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক কাজী আমিনুল হক, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শেখ সোহেল, মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মকবুল হোসেন মিন্টু, সাবেক এমপি সোহরাব আলী সানা, খুলনা বিএমএ’র সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আনিছুর রহমান পপলু ও আওয়ামী লীগ নেতা শ্যামল সিংহ রায় প্রমুখ।

এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কেসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর প্রধান সমন্বয়কারী এসএম কামাল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) খুলনায় এসে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মিথ্যাচার করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার সৌদির সঙ্গেও সম্পর্ক রাখে, আবার ভারতের সঙ্গেও সম্পর্ক রাখে। তার মানে এই নয় যে, প্রভুত্বে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় বিদেশি রাষ্ট্র্রগুলোকে বন্ধু মনে করে; প্রভু নয়। বরং বিএনপিই বিদেশি রাষ্ট্র্রগুলোকে প্রভু মনে করে।

এদিকে, কেসিসি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু আগামী ২৮ এপ্রিল নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।

নগরবাসীর সেবায় জীবন উৎসর্গ করতে চান খালেক : মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বুধবার (২৫ এপ্রিল) সকালে নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগকালে বলেছেন, ‘আমার এই জীবনে চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। জীবনের বাকি দিনগুলো খুলনাবাসীর সেবায় উৎসর্গ করতে চাই। সততা, আদর্শ ও নৈতিকতা আমার সম্বল। আমি বিশ্বাস করি, মানবসেবার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে অনন্তকাল বেঁচে থাকা যায়।’

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নৌকা প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম, চিংড়ি বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান মঞ্জিল, নতুন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তাজুল ইসলাম, নগর শ্রমিক লীগের সভাপতি আবুল কাশেম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ কুমার ঘোষ, আওয়ামী লীগ নেতা আলী আকবর শেখ, মফিদুল ইসলাম টুটুল, কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বিকু, কণিকা সাহা, আবদুস সাত্তার খলিফা, মাহবুর আলম বাবলুসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!