• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
অভিযোগে উত্তাপ বাড়ছে

গণগ্রেপ্তার বন্ধের দাবি হাসান সরকারের


গাজীপুর প্রতিনিধি জুন ২৩, ২০১৮, ০৯:৪৭ এএম
গণগ্রেপ্তার বন্ধের দাবি হাসান সরকারের

গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণকে সামনে রেখে পুরো নগরী চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। বিশেষত মেয়র পদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির  মো. হাসান উদ্দিন সরকারের কার্যক্রম ভোটারদের নজর কাড়ছে।

আগামী ২৬ জুন ভোটগ্রহণ। নির্বাচনী প্রচারে এখনো পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও দুই মেয়র প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগে নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মতবিনিময়ের পর বুধবার রাত থেকেই পুলিশ বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার।

বৃহস্পতিবার (২১ জুন) সকালে তিনি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ করেন। হাসান সরকার অভিযোগে জানান, তার ৭-৮ জন নেতাকর্মীকে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে তার প্রচার-প্রচারণা ব্যাহত হচ্ছে। এই অভিযোগ আমলে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কাছে তদন্তের জন্য জরুরিভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন।

অভিযোগ জানানোর সময় হাসান সরকারের সঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শিল্পপতি মো. সোহরাব উদ্দিন, জেলা হেফাজতের যুগ্ম সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিনসহ ২০ দলীয় জোট নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী মিডিয়া সেল প্রধান ডা. মাজহারুল আলম জানান, ঢাকা ও গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশ বুধবার রাতব্যাপী ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীর বাসাবাড়িতে অভিযান চালায়।

এ সময় বিএনপির ১০ জন গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী কর্মকর্তাকে আটক করা হয়। আটকদের অধিকাংশকে রাতেই ঢাকা ও টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করে গাজীপুর জেলা পুলিশ। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে কাশিমপুর অঞ্চল নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব শাহীন, কেন্দ্র সচিব শাহজাহান ডিলারকে বুধবার রাতে গ্রেফতারের পর ঢাকা ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করে গাজীপুর জেলা পুলিশ। তাদের রাতেই সাভার ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

অপরদিকে কোনাবাড়ী কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক স্থানীয় বিএনপি নেতা ডা. মিলন, কেন্দ্র আহ্বায়ক ছাত্রদল নেতা মিলন মিয়া ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য তাইজুল ইসলামকে বুধবার রাতে আটকের পর টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

এ ছাড়া ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বালিয়ারা কেন্দ্র কমিটির সদস্য আবদুস সামাদ, কাউলতিয়া অঞ্চল নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য শাহআলম, টঙ্গীর মরকুনে ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আবু সায়েম, পুবাইল অঞ্চল নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের ইছালী গ্রামের আবদুস সামাদকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা ও গাজীপুর ডিবি পুলিশ।

মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, পোলিং এজেন্টরা যাতে কেন্দ্রে না যায় সেজন্য সাদা পোশাকে পুলিশ কোনাবাড়ী ও কাশিমপুর অঞ্চলের নেতাকর্মীর মধ্যে ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে। পুলিশ নগরীর প্রত্যন্ত কাশিমপুর ও কোনাবাড়ী অঞ্চলের কেন্দ্রগুলো দখলের নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।  হাসান উদ্দিন সরকার সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীকে গণগ্রেফতার বন্ধ, গ্রেফতারদের মুক্তি ও পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।

অপরদিকে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মণ্ডল গতকাল তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, বিএনপি নেতাকর্মীকে যেন অন্যায়ভাবে হয়রানি না করা হয় সেজন্য তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন। এখন পর্যন্ত নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ধরে রাখা হয়েছে এবং ২৬ জুন পর্যন্ত এটি ধরে রাখা হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।  

এদিকে আমাদের টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, জিসিসি নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে এবং গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের ছেড়ে দেওয়া না হলে পৃথিবীর ‘অষ্টম আশ্চর্যজনক ঘটনা’ ঘটিয়ে দেবেন বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার।

বৃহস্পতিবার (২১ জুন) সকালে টঙ্গীর নিজ বাসভবনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল টিমের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ হুশিয়ারি দেন। হাসান সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশন গত বুধবার যে মতবিনিময় সভা করেছেন এবং সেই সভায় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করা না হলে দলীয়ভাবে বা আমি এককভাবে কঠোর সিদ্ধান্ত নেব।

সোনালীনিউজ/এমটিআই 

Wordbridge School
Link copied!