• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাখি রক্ষায় ব্যতিক্রমি উদ্যোগ


রাজশাহী প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৭, ১০:৪৩ পিএম
পাখি রক্ষায় ব্যতিক্রমি উদ্যোগ

তানোর উপজেলা চত্ত্বরের গাছে গাছে পাখির বাসা হিসেবে মাটির হাড়ি

রাজশাহী: রাজশাহীর তানোর উপজেলা পরিষদ চত্বরে দেশিও পাখি রক্ষার্থে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পাখিদের অবাধ ও শান্তিপূর্ণ বিচরণের জন্য অভয়াশ্রম করা হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে পরিষদ চত্বরে থাকা আমসহ বিভিন্ন গাছে পাখিদের থাকার জন্য মাটির হাড়ি ঝুলানো হয়েছে। যাতে করে পাখিরা বাসা বাধতে পারে। এ কাজের উদ্বোধন করেন, রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী।

প্রায় ১৫০টি মাটির হাড়ি টাঙ্গানোর মধ্যদিয়ে উপজেলা চত্বরকে দেশিও পাখি অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শওকত আলী পাখিদের অবাধ ও শান্তিপূর্ণ বিচরণের লক্ষে অভয়াশ্রম ঘোষণা করেন।

নির্বাহী কর্মকর্তার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন, বন্যপ্রাণি বিশেষজ্ঞ উপজেলার  বিভিন্ন কর্মকর্তা,কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ।

তানোর উপজেলার পাশে গুবিড়পাড়া গ্রামের মাসুদ জানান, পাখিদের শান্তিপূর্ণ বিচরণে লক্ষে উপজেলা চত্বরের গাছের ডালে পাখিদের নিরাপদে থাকার জন্য মাটির হাড়ি ঝুলিয়ে বাসস্থান তৈরি করায় উপজেলা পরিষদ চত্বরের সৌন্দর্য্য আরো বেড়েছে।

বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা চত্বর জুড়ে দেশিও পাখির বৃদ্ধি ও রক্ষার্থে গাছে গাছে অভয়াশ্রম করায় উপজেলার ভাবমূর্তিও বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলাতে বিভিন্ন কাজে আসা সাধারণ লোকজনও এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে। তবে এত সব কিছুর জন্য নির্বাহী অফিসারের ভূমিকায় মুল। তিনি ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়(রাবি) বন্যপ্রাণি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ দাস বলেন, তানোর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেশি পাখি রক্ষার্থে যে অভয়াশ্রম করা হয়েছে এজন্য সাধুবাদ জানাই। কারণ বন্যপ্রাণী রক্ষার্থে এমন উদ্যোগ দেখে অন্য উপজেলা প্রশাসনসহ সাধারণ মানুষও উৎসাহিত হবে। এছাড়াও দেশে বন্যপ্রাণী রক্ষা বা সংরক্ষণ আইন আছে। স্থানীয় প্রশাসন সজাগ হলে দেশিও পাখি বৃদ্ধি করা সম্ভব।

তিনি আরো বলেন, অনেক দেশি পাখি ক্ষতিকর পোকা মাকড় খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। তবে বর্তমানে ক্ষেতে উচ্চমাত্রার কীটনাশক প্রয়োগের কারণে দেশি পাখি মারা যাচ্ছে সেগুলো প্রতিরোধ করতে স্থানীয় প্রশাসনকেই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখা লাগবে।

এ বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, মাটির হাড়িতে পাখি পাশাপাশি মৌমাছি ও বাসা বাধতে পারে। সেটি আরো ভাল। তবে হাড়ির পাশাপাশি পাখি বৃদ্ধি করতে উপজেলা চত্বরে পাখি বসে এমন গাছ লাগানো যেতে পারে। যেমন বট, ডুমুর গাছে পাখি বেশি এসে থাকে।

তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শওকত আলী জানান, উপজেলা চত্বর জুড়ে ছোট-বড় অনেক রকম গাছ রয়েছে। সেখানে হরেক রকম দেশিও পাখি বসবাস। প্রতিদিন ভোরে তাদের কিচির-মিচির শব্দে উপজেলা চত্বরে ও আসপাশে বাসাবাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের ঘুম ভাঙে। এমন প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখে মন প্রাণ জুড়ায় যায়। সে ভালবাসা থেকেই পাখিদের আরো অবাধ ও শান্তিপূর্ণ বিচরণের লক্ষে অভয়াশ্রম করা হয়েছে। যেন এসব দেশিও পাখি আরো বৃদ্ধি পায়।

ইউএনও আরো জানান, প্রথম পর্যায়ে ১০টি গাছে ১৫০টি মাটির হাড়ি টাঙ্গানো হয়েছে।এ মাসের মধ্যে উপজেলা চত্বরে সকল গাছে আরো কয়েক হাজার মাটির হাড়ি টাঙ্গানো হবে। যাতে ঝড় বৃষ্টিতে তারা কষ্ট না পায়।

তিনি জানান, শুধু উপজেলা চত্বর নয়, পুরো উপজেলায় যেন কেউ পাখি নিধন না করতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং ও পোস্টার করে প্রচারণা চালনা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!