• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্য পেরিয়ে সপ্তম বাংলাদেশের তিরন্দাজরা


ক্রীড়া প্রতিবেদক নভেম্বর ৩০, ২০১৭, ০৯:৩০ পিএম
লক্ষ্য পেরিয়ে সপ্তম বাংলাদেশের তিরন্দাজরা

ঢাকা: প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত এশিয়ান আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপের স্বাগতিক বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল শীর্ষ দশে থাকা। কিন্তু সেই প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে ২০তম আসরে  শীর্ষ সাতে উঠে এসেছে লাল সবুজের তিরন্দাজরা। এশিয়ার ৩৫ দেশের আরচারদের এই টুর্নামেন্টে শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুন্ন রেখেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

মোট ৩০ পদকের প্রায় অর্ধেক এবং মোট সোনার পদকের প্রায় সবগুলোই জিতে নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। তাদের প্রাপ্তি ৮ সোনা, ৪ রৌপ্য এবং ২ তামা পদক। দ্বিতীয় হয়েছে ভারত (২-৩-১)। তৃতীয় হয়েছে জাপান (২টি রৌপ্যপদক)। পদক জয়ের সম্ভাবনাও জাগিয়ে স্বাগতিকরা কোনো পদক পায়নি।

অবশ্য প্রথম দুই দিন স্বাগতিক দলের হয়ে আলো ছড়িয়েছে আবুল কাশেম মামুন। পুরুষ একক কম্পাউন্ড ইভেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে তিনি চমক দেখিয়েছেন দেশবাসীকে। এবারের আসরে তার সফলতাকেই সেরা মনে করা হচ্ছিল স্বাগতিক শিবিরে। কিন্তু আজ মহিলা দলগত কম্পাউন্ডের সেমিফাইনালে ওঠে শুধু চমকই দেখাননি বাংলাদেশের তিন আর্চার রোকসানা আক্তার, বন্যা আক্তার ও সুস্মিতা বণিক।  

এবারো বাংলাদেশ দলের বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেই ভারতীয় দল। ভারতের অভিষেক ভার্মা মামুনকে বিদায় করেছিলেন কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। আজ সেমিফাইনালে শক্তিশালী ভারতের কাছে হেরে প্রথমবারের মত এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হল বাংলাদেশ নারী আর্চারি দল। এরপর ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে আরেক শক্তিশালী দল ইরানের কাছে হেরে এবারের মতো এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপের সমাপ্তি ঘটায় তারা।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনালে চাইনিজ তাইপের মুখোমুখি হয় রোকসানা-বন্যা-সুস্মিতারা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে তাইপেকে ২২৪-২২২ পয়েন্টে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে শেষ চারে পা রাখে আরচ্যাররা। এই তাইপের কাছেই এ বছরের শুরুতে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ কম্পাউন্ড স্টেজ-২ টুর্নামেন্টে স্বর্ণের লড়াইয়ে হেরেছিল সুস্মিতা-বন্যারা। আজ পুরনো প্রতিপক্ষকে হারিয়ে শুধু প্রতিশোধই নেয়নি, উঠেছে স্বপ্নের সেমিতেও।

এশিয়ান আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপের যে কোনো ইভেন্টের সেমিফাইনালে ওঠাই বাংলাদেশ আর্চারির ইতিহাসে সেরা সাফল্য। কিন্তু ভারতের কাছে হেরে সেমিতেই ইতি টানতে হয় সুস্মিতাদের। সেমিতে ভারতের বিপক্ষে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। প্রতিবেশী দলের তৃষা দেব, জ্যোতিসু রেখা এবং পারভিনার সমন্বয়ে গড়া কম্পাউন্ড দলটির কাছে ২২৮-২১৩ পয়েন্টের ব্যবধানে হেরে যায় তারা। ফাইনালে উঠতে না পেরে স্বর্ণ ও রূপা জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হলেও অবশিষ্ট ছিল তৃতীয় স্থান নিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয়ের সুযোগ। কিন্তু সেই স্থান নির্ধারণী লড়াইয়ে ইরানের বারাবি পারিসা, বাইবোরদি ঘিসা এবং ভরবানির সমন্বয়ে গড়া দলের কাছে ২২৯-২১৭ পয়েন্টে ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। ম্যাচের শুরুটা অবশ্য খারাপ হয়নি। প্রথমপর্বে ৫৮-৫৭ স্কোরে হারে। পরের তিনপর্বে বাংলাদেশ হারে ৫৮-৫১, ৫৮-৫৫ এবং ৫৬-৫৩ পয়েন্টে। মনোসংযোগের অভাব এবং আবহাওয়ার কারণে প্রত্যাশিত ফল হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের আরর্চাররা।

অভিজ্ঞতা আর ম্যাচ কম খেলা এ দুইয়ের অভাবেই এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে স্বাগতিক হয়েও ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। যদিও এই টুর্নামেন্টে পদক জেতার আশা ছিল না। ভালো খেলাই ছিল বাংলাদেশের লক্ষ্য।

এবার সেই লক্ষ্যেও চেয়েও বেশি সফলতা অর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কোচ নিশীথ দাস। তিনি বলেন, ‘ইরান শক্তিশালী দল। তাদের সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিনই। তারপরও মেয়েরা যতটুকু চেষ্টা করেছে ভালোই করেছে। আমাদের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা খুবই কম। বেশি বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে আমার দল ভবিষ্যতে আরো ভালো ফল করবে।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!