শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল বাংলাদেশ

ঢাকা:  চোট কাটিয়ে ফেরা সাকিব আল হাসানের প্রত্যাবর্তন রাঙিয়ে দিল তামিম-মাহমুদউল্লাহরা। শ্রীলঙ্কার মাঠে তাদেরকে হারিয়েই নিদাহাস ট্রফি ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার (১৬ মার্চ) প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নিদাহাস ট্রফির ৬ষ্ঠ্য ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফিরেই টস নামের ভাগ্য পরীক্ষায় জিতেছেন বাংলাদেশ দলের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নিজের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করতে নেমে স্বপ্নের মতো শুরু করে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান আর মোস্তাফিজুর রহমানের তোপে ৮.১ ওভারে মাত্র ৪১ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল লঙ্কানরা। তবে কুশল পেরেরা ও থিসারা পেরেরার প্রতিরোধে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে শ্রীলঙ্কা।  

নিদাহাস ট্রফিতে নিজের অভিষেকের ম্যাচে বল হাতে মাঠে নেমেই জ্বলে উঠলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের প্রত্যাবর্তনের দিনে যেন নিজেকে ফিরে পেলেন মোস্তাফিজুর রহমান।

এদিন নিজের দ্বিতীয় ওভারেই শ্রীলঙ্কার ওপেনার গুনাথিলাকাকে ফিরিয়ে দেন সাকিব। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সাকিবের করা প্রথম বলটি উড়িয়ে মারেন গুনাথিলাকা। লং অনে খানিকটা দৌড়ে গিয়ে আকাশে ভাসা বলটি তালুবন্দি করে সাব্বির রহমান।

এরপর লঙ্কার শিবিরে আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর রহমান। সাকিবের প্রত্যাবর্তনের দিনে যেন নিজেকে ফিরে পেলেন ফিজ। কুশল মেন্ডিসকে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন এই কাটার মাষ্টার। পরের ওভারে রানআউট হন উপুল থারাঙ্গা। তাতেও অবদান আছে মোস্তাফিজের। একই ওভারে দাসুন শানাকাকে বিদায় করেন মোস্তাফিজ।

৯ম ওভারের প্রথম বলে জীবন মেন্ডিজকে সাজঘরের রাস্তা ধরিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে মোস্তাফিজকে ভুললে চলবে না। কারণ ক্যাচটি নিয়েছেন তিনিই। এরপর দুর্দান্ত প্রতিরোধ গড়েন  কুশল পেরেরা ও থিসারা পেরেরা। দারুন এক জুটিতে লঙ্কানদের স্কোরকে সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছে দেন তারা।

৯৭ রানের এই জুটি ভেঙে দেন সৌম্য সরকার। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দশম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেয়া কুশলকে শিকার করেন সৌম্য। ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ বলে ৬১ রান করেন কুশল।

কুশলের মত হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছেন পেরেরাও। তবে ৭২ ম্যাচের ক্যারিয়ারে প্রথম। শেষ পর্যন্ত ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৩৭ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। এ ছাড়া শেষদিকে ইসুরু উদানা অপরাজিত ৭ ও আকিলা ধনঞ্জয়া অপরাজিত ১ রান করেন। ফলে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৯ রান করে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজ ২টি, সাকিব, রুবেল, মিরাজ ও সৌম্য ১টি করে উইকেট নেন।

শেষদিকে ইসুরু উদানা অপরাজিত ৭ ও আকিলা ধনঞ্জয়া অপরাজিত ১ রান করেন। ফলে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৯ রান করে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজ ২টি, সাকিব, রুবেল, মিরাজ ও সৌম্য ১টি করে উইকেট নেন।

এদিন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ফেরার ম্যাচে বাদ পড়েছেন আবু হায়দার রনি। শ্রীলঙ্কার একাদশে দুইটি পরিবর্তন এসেছে। বাদ পড়েছেন সুরঙ্গ লাকমাল ও দুশমন্থ চামিরা। সুযোগ পেয়েছেন ইসুরু উদানা ও আমিলা আপোনসো।

আজকের ম্যাচে যারাই জিতবে ১৮ মার্চের ফাইনালে তারা ভারতের বিপক্ষে ট্রফির লড়াই করবে। তাই ফাইনালে উঠতে হলে এ ম্যাচটা জিততেই হবে বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন।

শ্রীলঙ্কা একাদশ: থিসারা পেরেরা (অধিনায়ক), গুনাথিলাকা, মেন্ডিস, কুসল পেরেরা, উপুল থারাঙ্গা, জীবন মেন্ডিস, শানাকাম ধনঞ্জয়া, ইসুরু উদানা, আমিলা আপোনসো ও নুয়ান প্রদীপ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই