• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিবের ঢাকাকে মাটি ধরিয়ে দিল মাশরাফির রংপুর


ক্রীড়া প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১২, ২০১৭, ১০:১১ পিএম
সাকিবের ঢাকাকে মাটি ধরিয়ে দিল মাশরাফির রংপুর

ঢাকা: ঢাকা ডায়নামাইটস বিপিএলে রাজত্ব করবে, এটা যেন অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে। বিপিএলের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেখলে তাই মনে হবে। গত চারটি আসরের মধ্যে তিনবারই তারা শিরোপা জিতেছে। পঞ্চম আসরের শুরুটা হার দিয়ে শুরু হলেও পরে ঘুরে দাঁড়িয়ে দাপুটে খেলেই ফাইনাল নিশ্চিত করে সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটস। শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। রংপুর শেষটা করেছে এক কথায় দুর্দান্ত। বিপিএলে ঢাকাকে ৫৬ রানে হারিয়ে প্রথমবার তারা শিরোপা জয়ের স্বাদ পেল।

বহু তারকায় ঠাসা ছিল ঢাকা। কে নেই দলটিতে? শহীদ আফ্রিদি, পাকিস্তানি এই অলরাউন্ডারের বয়স বাড়লেও ধার কমেনি এতটুকু। সঙ্গে আরেক পাকিস্তানি মোহাম্মদ আমির। এখনো ক্লাস ক্রিকেট উপহার দিয়ে চলেছেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা। এদের সঙ্গে তিন ক্যারিবীয় সুনিল নারাইন, কাইরন পোলার্ড আর এভিন লুইস যোগ হলে কি দাঁড়ায়?

তা টুর্নামেন্টজুড়েই ঢাকা এমনভাবে খেলেছে যে তাদের দিনে অন্যদলগুলোকে অসহায়ই মনে হয়েছে। কখনো লুইস ঝড় তুলেছেন, কখনো পোলার্ড। যেদিন দুজনই ব্যর্থ হয়েছেন সেদিন হয়তো আফ্রিদি একাই কাজ সেরেছেন। তাহলে এই ঢাকাকে রুখবে কে?

যারা রুখতে পারে সেই রংপুরের তারকারা যে তখনও ঘুমিয়ে কাটাচ্ছেন। ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও জনসন চার্লস শেষ চারে আসার আগেও দাগ কাটার মতো খেলতে পারেননি। শুরুর দুই ম্যাচে গেইল দুটি ইনিংস ভালো খেলেছিলেন। তারপর নিজের ছায়া হয়ে রইলেন। চার্লস-ম্যাককালামের অবস্থা আরো খারাপ। এমনও বলাবলি হচ্ছিল, গেইল-ম্যাককালামকে বাদ দিয়ে রংপুর ওই অর্থ খরচ করে অন্যদের নিয়ে আসলে ভালো করত।

কথাগুলো বোধহয় কানে গিয়ে থাকবে গেইল-ম্যাককালাম-চার্লসদের! চ্যাম্পিয়নরা যে বড় ম্যাচের অপেক্ষায় থাকেন এই ত্রয়ী যেন সেটি আবার মনে করালেন। গেইল এলিমিনেটরে খুলনা টাইটান্সের বোলারদের ¯্রফে কচুকাটা করলেন। ৫১ বলে অপরাজিত ১২৬। ছক্কাই ১৪টি। অবিশ্বাস্য এক ইনিংসে রংপুরকে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে নিয়ে গেলেন গেইল।
দুই দিনে শেষ  হওয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ৩ রানে ফিরে গিয়েছিলেন গেইল। চার্লস ভাবলেন এই তো সুযোগ নিজেকে গেইল বানানোর! তাই করলেনও তিনি। গেইলের অভাব বুঝতেই দিলেন না। ঝোড়ো গতিতে সেঞ্চুরি তুলে নিলেন। তাঁর সঙ্গে প্রথমবার স্বরুপে ফিরলেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। ৭৮ রানের ইনিংসে ৯টি ছক্কা মেরে কুমিল্লার বোলারদের ওপর মনের ঝাল মেটালেন!

ত্রিমূর্তীর হঠাৎ ফর্মে ফেরাই রংপুরকে সাহস যুগিয়েছে বেশি। লিগ পর্বে যে ম্যাচগুলো রংপুর জিতিয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগ ছিল শেষ ওভারে গিয়ে। কিন্তু এলিমিনেটর, দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ও ফাইনালের  জয় ছিল দাপট দেখিয়ে। বিশেষ করে গেইল ফাইনালে ঢাকাকে  এক ঝটকায় মাটিতে নামিয়েছেন। ৬৯ বলে তাঁর ১৪৬ রানের ইনিংস তো তাই প্রমাণ করে। ১৮টি ছক্কাই মেরেছেন। আগে ব্যাট করা রংপুরের ২০৬ রান  তোলা দেখেই বোঝা গিয়েছিল এই ম্যাচটি জেতা ঢাকার জন্য কঠিনই হবে। যদিও তাদের লুইস-পোলার্ডদের মতো ব্যাটসম্যান ছিল। কিন্তু মাশরাফির দল অত সহজে যে ছাড়বে না সেটা অনুমিতই ছিল।

শুরুর দিকে টপাটপ উইকেট হারিয়ে চাপে ঢাকা আর শেষ  পর্যন্ত কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি। তাদের ব্যাটিংয়ের সময় একবারও মনে হয়নি ম্যাচটি তারা জিততে পারে। ৩৮ বলে ৫০ রান করে জহুরুল ইসলাম পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছেন মাত্র। গেইলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেই কি না শেষ ওভারটি তাঁকে দিয়ে  করালেন মাশরাফি। রংপুর অধিনায়ক যেন তাঁকে এটাই বলতে চাইলেন,‘ তোমার জন্যই আমরা শিরোপা জিততে পেরেছি।’ সত্যি তো তাই!

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!